সুবিধাবঞ্চিত লোকদের সরকারী ত্রান ও অর্থ সহায়তা দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা

মোংলার বিভিন্ন দপ্তর থেকে প্রতারনা করে সহায়তা নিয়ে আত্নসাতের অভিযোগ

মোংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ০৫:৪৩ পিএম, রোববার, ৯ আগস্ট ২০২০ | ৭০২

প্রতিকী ছবি

মোংলায় নিজেকে সরকার দলীয় ক্ষমতাবান নেত্রী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ত্রান সামগ্রী ও সরকারী সহায়তা আত্নসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক নেত্রীর বিরুদ্ধে। পৌর শহরের ১নং ওয়ার্ড নারকেলতলা এলাকায় ছবি রানী নামের ওই স্বঘোষিত নেত্রী উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তর থেকে করোনাকালীন সময় লোকজনের নামে বে-নামে নিয়ে নিজে আত্নসাৎ করে। এছাড়াও সরকারী খাস জমি লিজ দেয়া, জেলে কার্ড, ভিজিডি কার্ড, পানির ট্যাঙ্ক, রেশন কার্ড ও সরকারী ঘরসহ সুবিধা বঞ্চিত লোকজনকে প্রলোভন দিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রতারনার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অংকের টাকা। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দারা নেত্রী ছবি রানীর সিমাহীন দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও প্রতারনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর গণস্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ দাখিল করেছে এলাকাবাসী। এনিয়ে এলাকার জনমনে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, মোংলা পোর্ট পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড নারিকেলতলা ওই নেত্রীর বাবার বাড়ী কিন্ত তার স্বামীর বাড়ী খুলনায় হওয়ায় সেখানেই বসবাস করতেন তিনি। স্বঘোষিত নেত্রী খুলনায় থাকাকালীন একটি এনজিও পরিচালনার নামে সেখান থেকে বিভিন্ন হতদরিদ্র মাানুষের বিপুল পরিমান টাকা আতœসাত করে মোংলায় এসে আতœগোপন করে। এ এনজিও টাকা আত্নসাতের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও বিচারাধীন বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।

মোংলায় এসে দুর্নীতির মাধ্যমে তাদের একই পরিবারে জেলে কার্ড, বয়স্ক ভাতার কার্ড, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অর্থ সহায়তা, এলাকাবাসীর নামে বে-নামে এনজিওর ত্রান সহায়তা, রেশন কার্ড, খুলনার বাসিন্দা হওয়া সত্বেও প্রতারনার মাধ্যমে মোংলায় মাতৃত্বকালীন ভাতা নেয়া, এনজিও সংস্থার ঘর, সরকারি ঘর, সুস্থ্য মেয়েকে প্রতিবন্ধী সাজিয়ে ভাতাসহ সরকারী-বেসরকারীর বিভিন্ন ত্রান ও অর্থ সহায়তার সুবিধা ভোগ করে আসছে তিনি।

এছাড়াও এলাকার বিভিন্ন সুবিধা বঞ্চিত লোকজনকে ভুল বুঝিয়ে পৌরসভার ১,২,৩ নং ওয়ার্ড সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর জাহানার বেগমের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে অসহায় মানুষদের কাছ থেকে ৫শ থেকে হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার বহু অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। অপারদিকে উপজেলা পরিষদের সমাজসেবা কমর্যালয়ের আব্বাস, মৎস্য কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম, মৎস্য সমিতির সভাপতি বিদ্যুৎ মন্ডল, ভুমি অফিসের দালাল হাসমত আলী ও কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহায়তায় সরকারী জমি লিজ ও বন্দোবস্ত, জেলে কার্ড, প্রতিবন্ধী ভাতা পাইয়ে দেয়ার নাম করে বিভিন্ন লোকদের কাছ থেকে প্রতারনা করে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ওই স্বঘোষিত নেত্রী বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এ ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করলে, সরকারি সাহায্য সহযোগীতা ত্রান ও অনুদান থেকে বঞ্চিত করা হবে বলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি ও মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার ভয় দেখায় তিনি। তার এ প্রতারনা মুলক কার্যকলাপের কারনে সরকারের বিভিন্ন সাহায্য সহযোগীতা প্রকৃত অসহায় মানুষ পর্যন্ত পৌছায় না এবং সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগে এলাকাবাসী উল্লেখ করেন।


এব্যাপারে ছবি রানী রায় বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আমার পিতা-মাতা বৃদ্ধ, তাই তাদের কাছে থাকা প্রয়োজন। তাদের নামে যে ভাতার কার্ড হয়েছে তা সরকারী ভাবে পাওয়ার অধিকার আমাদের আছে। এছাড়া এলাকার অসহায় মানুষ আমার কাছে আসে সহায়তার জন্য তাই উপজেলা ও পৌর কাউন্সিলরের কাছে তাদের নিয়ে সাহায্য সহযোগীতা দেয়ার চেষ্টা করি কিন্ত এর বিনিময় কারো কাছ থেকে টাকা পয়সা নেয়ার অভিযোগ মিথ্যা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাহাত মান্নান বলেন, নারকেলতলা এলাকা থেকে আমার হাতে কোন অভিযোগ আসেনি তবে অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত