শরণখোলায় জেলেকে মারধরের অভিযোগ ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ০৬:০৩ পিএম, সোমবার, ১০ আগস্ট ২০২০ | ৭৭৮

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান পারভেজের বিরুদ্ধে এক জেলেকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কটকাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের একই স্থানে দুই পক্ষের জাল পাতাকে কেন্দ্র করে রবিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
আহত জেলে মামুন খান (৩৫) সোমবার সকালে শরণখোলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের আ. হক খানের ছেলে। এব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

আহত জেলের অভিযোগ, বন বিভাগ থেকে পাস নিয়ে তারা বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরতে যান। ওইদিন বিকেল ৫টার দিকে মাছ ধরে সাগরসংলগ্ন সুন্দরবনের বালুর খালে ট্রলার নোঙর করে তারা তিন জেলে অবস্থান করছিলেন। এসময় শরণখোলা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তার লোকজন নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। তারা মারধর করে ট্রলারে থাকা ৩৮ পিচ ইলিশ মাছ নিয়ে যায় বলেও অভিযোগ করেন জেলে মামুন খান।

প্রত্যক্ষদর্শী জেলেরা জানান, ঘটনার সময় উপজেলার বকুলতলা গ্রামের সাবেক বনদস্যূ আলম হাওলাদার, সাবেক বনদস্যূ বাহিনীর প্রধান ছত্তারের ছোট ভাই নাছির হাওলাদার, একাদিক মাদক মামলার আসামী জাহিদ, সোনাতলা গ্রামের মালেক হাওলাদারের ছেলে একটি হত্যা মামলার আসামী জাকির হাওলাদার ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে ছিলেন।

সুন্দরবনের মাছ ব্যবসায়ী এমাদুল শরীফ, খলিল মৃধা, জাহাঙ্গির হোসেন হিরু, রহিম হাওলাদার ও শাহআলম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, সুন্দরবনের নিরীহ জেলেদের ওপর ভাইস চেয়ারম্যানের হামলা ও মাছ লুটের বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

সোনাতলা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম ডালিম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, তাদের গ্রামের মামুনসহ বেশ কিছু জেলে প্রায় ১০ বছর ধরে ওই এলাকায় মাছ ধরে আসছে। কিন্তু ভাইস চেয়ারম্যান তার আধিপাত্য বিস্তার করতে জেলেদের মারপিট করে চরম অন্যায় করেছেন।

পূর্ব সুন্দরবনের কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জেলেকে মারধরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পারভেজ এক জেলেকে মারধর করেছেন বলে শুনেছি। এব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে আহত জেলের সঙ্গে কথা বলেছে। মামলা দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. হাসানুজ্জামান পারভেজ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আমি এবছর মাছের ব্যবসা শুরু করায় প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সুন্দরবনের কটকার কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরে আমার জেলেদেরে জাল ফেলার নির্ধারিত স্থানে মামুন নামের ওই জেলে করে মাছ ধরা শুরু করে। তাকে নিষেধ করলে সে উত্তেজিত হয়ে ওঠায় দু-একটি চড়-থাপ্পড় দেওয়া হয়েছে। ইলিশ নেওয়া বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত