মোংলায় পথের নামে জমি দখলের পায়তারা

মোংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ০৬:২৪ পিএম, বুধবার, ১২ আগস্ট ২০২০ | ১১৭৯

মোংলায় পথ নেয়ার নাম করে বসতবাড়ীর জমি দখলের পায়তারা করছে এলাকার চিহ্নিত কিছু ভুমি সন্ত্রাসীরা। উপজেলার কেওড়াতলা সড়কের সন্ত্রাসী শাহাদৎ হাওলাদার ও সোলায়মান হাওলাদারসহ কিছু ভুমি দস্যু বেশ কিছু দিন ধরেই সহজ সরল আঃ বারীর জমিতে জোর পুর্বক সিমানা প্রাচীর দেয়ার চেষ্টা করছে বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গন্যমান্য ব্যাক্তিরা এব্যাপারে বেশ কয়েকবার মিট-মিমাংশা করার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়েছে। এসকল ভুমি সন্ত্রাসীরা সরকারের বেশ কিছু খাস জমি দখল করে ভোগ করছে এবং থানা পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের কোন সিদ্ধান্ত মানছেননা। এনিয়ে থানায় কয়েকটি অভিযোগ ও সাধারন ডায়রী করেছে অসহায় পরিবারটি। জমি দখলের ঘটনা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

থানায় সাধারন ডায়রী ও অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে পৌর শহরতলীর কেওড়াতলা এলাকায় মোঃ হাকিম সরকারের কাছ থেকে ২৬ শতক জমি ক্রয় করে আঃ বারী ও কবির হোসেন। জমি ক্রয়ের পরে আঃ বারী সেখানে ঘরবাড়ী তৈরী করে বসবাস করছে এবং কবির হোসেন’র জমি বিলান পরে থাকে। কিন্ত কবির হোসন’র পরিবারের সদস্যরা সেখানে বসবাস না করে উল্টো পার্শবর্তী কিছু ভুমি সন্ত্রাসীদের নিয়ে বসবাসকৃত জমির মধ্যে পথের নাম করে দখলের পায়তারা করছে। এলাকার এসকল চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের কর্মকান্ডে মদদ দিচ্ছে অপর বাসিন্দা দন্ত চিকিৎসক নুর ইসলাম। এসকল ভুমি সন্ত্রাসীদের এহেন কর্মকান্ডের প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ ও সাধারন ডায়রী করেছেন মোংলা থানায়।

ভ্যান চালক মজিবর খাঁ ও মোঃ হোসাইন মোল্লা বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, একই এলাকার বাসিন্ধা ভুমি দস্যু দন্ত চিকিৎসক মোঃ নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ এলাকাবাসীর। তিনি মজিবর খা’র মা আনোয়ারা বেগম নামের এক বৃদ্ধার কাছে জমি বিক্রির কথা বলে মিথ্যা কাগজ পত্র দিয়ে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয় এ নুর ইসলাম। শাহাদৎ ও সোলাইমানের কু-পরামর্শে তিনি ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ওই বৃদ্ধাকে জমি রেজিট্ট্রী না দিয়ে সেই জমি পুনরায় দখলের পায়তারা করছে নুর ইসলাম। শুধু বৃদ্ধা নয় এলাকায় আরো অনেকের কাছ থেকে এভাবে ধোকাবাজী করে এই ভুমি দস্যু গ্রুপটি অসহায় মানুষদের হয়রানী করে আসছে। এনিয়েও থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে বহু অভিযোগও দেয়া হয়েছে।

নিরীহ আঃ বারি ছেলে মোঃ হোসাইন মোল্লার থানায় করা সাধারন ডায়েরীতে উল্লেখ করেন, কেওড়াতলা এলাকায় বসবাসকারী মৃত রুস্তম আলী হাওলাদারের ছেলে মোঃ শাহাদাৎ হাওলাদার (২৫) সোলায়মান হাওলাদার (৩০) আমাদের উত্তর পাশের সিমানায় বসবাস করে এবং অত্যান্ত উচ্ছৃংখল দাঙ্গাবাজ। দির্ঘদিন যাবৎ বসতবাড়ী সিমানা নিয়ে অহেতুক ভাবে বিরোধ সৃষ্টি করে আসছে এবং বসত বাড়ীর মধ্যে জমি পাবে বলে দখল করার পায়তারা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিরা আপোষ সিমাংসা করার চেষ্টা করলেও তা তারা মানছেনা।

নুর ইসলাম, শাহাদৎ ও সোলাইমানসহ কিছু চোর-বাটপার এবং ভুমি ও তথ্য সন্ত্রাসীদের নিয়ে পৌর এলাকা ও উপজেলাব্যাপী একটি ভূমিদস্যু বাহিনী তৈরী করেছেন তারা। তাদের ভুমি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও অত্যাচারে অনেক রিক্সাওয়ালা থেকে শুরু করে অসহায় ও নিরীহ মানুষ হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। তাদের নির্যাতন থেকে বাচতে বেশ কয়েকবার স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাকিদের মাধ্যমে এলাকায় শান্তি শৃংখলাভাবে বসবাস করার চেষ্টা করছি কিন্ত তাদের ক্ষমতার কাছে এসকল গন্যমান্য ব্যাক্তিরা অসহায়। পরবর্তিতে পুলিশের কাছে অভিযোগ করে প্রতিকার চেয়েছি।

গত সোমবার এসকল ভুমি দস্যুরা অহেতুক আমাদের অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এতে প্রতিবাদ করলে লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের মারপিট ও খুন জখম করার জন্য তাদের দলবল নিয়ে এগিয়ে আসে। এসময় আমাদের ডাক চিৎকারের স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। পুনরায় বিভিন্ন মারফত আমাদের প্রান নাশের হুমকিসহ নানাভাবে হয়রানী করছে এ ভুমি সন্ত্রাসীরা। এ নিয়ে থানায় সাধারন ডায়রী করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মোংলা থানার এ এস আই আবুল হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, শাহাদৎ ও সোলাইমানের বিরুদ্ধে থানায় দায়ের করা লিখিত সাধারন ডায়রী করা একটি অভিযোগ হাতে পেয়েছি। তবে এলাকার শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে পুলিশ প্রশাসন তৎপর রয়েছে, তবে অন্যায় ভাবে কারো প্রতি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেবে পুলিশ প্রশাসন।

এ বিষয়ে দন্ত চিকিৎসক নুর ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানায়, আনোয়ারা বেগমের কাছে কোন জমি বিক্রি করা হয়নি বরং তারা জমিতে জোর পুর্বক দখল করে আছে। এছাড়া আঃ বারির সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছে। এনিয়ে থানায় অভিযোগ রয়েছে।

অভিযুক্ত সোলাইমান হাওলাদার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানায়, মোংলা থানায় তাদের বিরুদ্ধে সাধারন ডায়রী বা অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা। আঃ বারি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বসবাসের জন্য যে ভবন তৈরী করেছে সেখানে পাশে কোন জায়গা রাখেনী এবং সে ভবনের সকল ধরনের পানী ও ময়লা আমাদের সিমানায় গড়িয়ে পড়ছে। এ বিষয় নিয়ে এলাকার কমিশনারসহ গন্যমান্য ব্যাক্তিদের জানানো হয়েছে, উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত