সদর হাসপাতালে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা

বাগেরহাট হাসপাতালে নেই শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক

আলী আকবর টুটুল

আপডেট : ০৬:৩৩ পিএম, শনিবার, ৬ জানুয়ারী ২০১৮ | ১৩৬৬

শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। গত তিনদিনে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে অন্তত শতাধিক শিশুকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে ২০ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। কিনিকে শিশুরোগির ভর্তি সংখ্যা আরও বেশি। অনেকে কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে গেছেন। বাগেরহাট সদর হাসপাতালে শিশু রোগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় কর্তৃপক্ষ এসব শিশুদের চিকিৎসা দিতে পারছেন না। অনেক দুর থেকে আসা এসব শিশুদের অবিভাকরাও হাসপাতালে শিশু রোগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় শিশুদের চিকিৎসা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন। তারা অবিলম্বে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দাবী জানিয়েছেন।


ঠান্ডাজনিত সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হলে মা-বাবারা শিশুদের নিয়ে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন। সেখানে অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কিনিকে ভর্তি করান। আবার অনেকে বাধ্য হয়ে সদর হাসপাতালে শিশুকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা নেন।


শ^াসকষ্টে ভুগতে থাকা চার মাস বয়সী ছেলে রহমতউল্লাহকে নিয়ে জেলার চিতলমারী উপজেলার কচুড়িয়া গ্রাম থেকে আসা কৃষক সিরাজুল মোল্লা বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ঠান্ডা লেগে গত বুধবার ছেলেটির শ^াসকষ্ট শুরু হলে বাগেরহাট সদর হাসপালে ভর্তি করি। এখানে কোন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ না থাকায় ঠিকমত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছি না। বাগেরহাট সদর উপজেলার কোন্ডলা গ্রামের দরিদ্র ভ্যান চালক মোঃ আশরাফ হাওলাদার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ৩ মাস বয়সী ছেলে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। এখানে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ না থাকায় উন্নত চিৎকিসার জন্য হাসপাতালে অন্য ডাক্তাররা তাকে বেসরকারী কিনিকে ভর্তি করতে বলেছেন। টাকার অভাবে এখনও পর্যন্ত ভর্তি করতে পারেনি।


সদর হাসপাতালে চিৎকিসা নিতে আসা সুমি বেগমসহ একাধিক শিশুদের অভিভাবকরা বলেন, ঠান্ডা লাগায় আমরা বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে আসছি। সদর হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। আমরা বাচ্চা নিয়ে কোথায় যাব। দরিদ্র মানুষ বাধ্য হয়ে বাহিরের ডাক্তারদের ৫০০ টাকা ভিজিট দিতে হচ্ছে।


বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক শেখ ইমরান মোহাম্মদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, শীতের কারণে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের সাধ্যমত চিকিৎসা দেই। কিন্তু শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় অন্য হাসপাতালে রেফার করি।


প্রাইভেট কিনিকের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আবুল কালাম আজাদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ঠান্ডাজনিত কারনে শিশুদের হাসপাতালে সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তাই শিশুদের গরম কাপড়ের পাশাপাশি রুম গরম রাখার জন্য বাল্ব জালিয়ে রাখতে হবে এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা. অরুন চন্দ্র মন্ডল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, স্পেশাল কেয়ার ইউনিট চালু করা হয়েছে। ইউনিসেপের সহায়তায় হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডটি শিশুদের সব ধরনের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত থাকলে চিকিৎসক নেই। শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশাকরি শীঘ্রই শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বাগেরহাট সদর হাসপাতালে আসবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত