টাকা না পেয়ে নির্যাতন

পোষাককর্মী মাসুরাকে লাঠি দিয়ে পেটায় স্বামী!

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ০৮:৫৬ পিএম, বুধবার, ২৪ মার্চ ২০২১ | ৫৮৯

লাঠির আঘাতে চোখ-মুখ ফুলে গেছে। বাম চোখে রক্ত জমাটবাধা। চোখ ফুলে যাওয়ায় তাকাতে পারছেন না। সমস্ত শরীরে অসংখ্য লাঠির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে নাকি তার। প্রত্যেকটি আঘাতে কালসিটে পড়ে গেছে। স্বামীর বিরুদ্ধে এমন অমানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেন পোষাককর্মী মাসুরা বেগম (৩২)। স্বামী আব্বাস মাতুব্বর তাকে মেরে বিকাশ একাউন্টে থাকা ৪০হাজার টাকাসহ তার মোবাইল ফোনটি নিয়ে গেছেন বলে জানান মাসুরা।

ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) সকালে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের পূর্ব খোন্তাকাটা গ্রামে। তিনি শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন নির্যাতনের শিকার ওই নারী।

শরণখোলা থানার নারী কর্মকর্তা এ এস আই ইপি বালা বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেন মাসুরা বেগম। এসময় তার শরীরের আঘাতের চিহ্নগুলো দেখান তিনি। প্রত্যেকটি আঘাতে কালো দাগ পড়ে গেছে। বাম চোখটি ফুলে গেছে।

শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি নির্যাতনের শিকার পোষাককর্মী মাসুরা বেগম বুধবার (২৪মার্চ) দুপুরে জানান, প্রথম স্বামী রুবেল মিয়া ছয় বছর ধরে নিখোঁজ থাকায় ১০মাস আগে শরণখোলার পূর্ব খোন্তাকাটা গ্রামের শামছু মাতুব্বরের ছেলে আব্বাসের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর পর ৩০ হাজার টাকা দিয়েছেন স্বামীকে। এর পর থেকে বার বার টাকা চাইতে থাকেন তার কাছে। না দিলেই মারধর শুরু করেন। কয়েকদিন আগে ছুঁটি নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসলে টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন স্বামী। টাকা না দেওয়ায় মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে গাবের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটায় তাকে। মারধর করে তার মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে যান স্বামী আব্বাস মাতুব্বর। তার মোবাইলের বিকাশ একাউন্টে ৪০ হাজার টাকা ছিল বলে জানান মাসুরা।


মাসুরা বেগম আরো জানান, তার বাবার বাড়ি মোরেলগঞ্জ উপজেলার খাউলিয়া ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামে। ওই গ্রামের আ. রহমান গাজীর মেয়ে তিনি। প্রায় ৬বছর ধরে তিনি গাজীপুরের কোনাবাড়ী লাকী গার্মেন্টস নামে একটি পোষাক কারখানায় কাজ করেন। আগের সংসারে রুনা আক্তার (৮) নামে একটি মেয়ে আছে তার।

শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. নাদিয়া নওরিন বলেন, ওই নারীর বাম চোখের উপরে কালো হয়ে গেছে। ভেতরে রক্ত জমাট বেধে আছে। শরীরের অন্যান্য স্থানেও আঘাতের চিহ্ন আছে, চিকিৎসা চলছে। দু-একদিনে সুস্থ না হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনায় পাঠানো হবে।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান জানান, মাসুরা বেগম নামের ওই নারী স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। তবে, তার কথাবার্তা অসংলগ্ন। বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত