পিরোজপুরের কুড়িয়ানার পেয়ারা চাষীদের সমস্যা সমাধানের  আশ্বাস বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের

পিরোজপুর প্রতিনিধি 

আপডেট : ০৯:২২ পিএম, রোববার, ২৫ জুলাই ২০২১ | ৭৫১

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার কুড়িয়ানার বাংলার আপেলখ্যাত পেয়ারা বাগান পরিদর্শন করেছেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো: সাইফুল হাসান বাদল। রোববার বিভাগীয় কমিশনার স্বরুপকাঠীর আদমকাঠির ফ্লটিং পেয়ারা পার্কে কুড়িয়ানার পেয়ারা চাষীদের সমস্যার কথা শুনেন। পেয়ারা চাষীদের যত প্রকার সংকট আছে তা সমাধান কল্পে ব্যবস্থা নেওয়া হবে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।



আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মিঠুন হালদার চাষীদের পক্ষে নানা সমস্যার বিষয়গুলো বর্ণনা করে বলেন, আটঘর কুড়িয়ানার পেয়ারা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন মোকামে নেওয়ার জন্য বড় ট্রাকগুলো আটঘর এলাকায় প্রবেশ করতে পারে না। কিন্তু পাশের বাজার ভিমরুলীতে অনেক আগে থেকে ট্রাক ঢুকতে পারায় ওই হাটে বেপারী বেশি আসেন। সেকারনে ভিমরুলি ভাসমান হাটটির গুরুত্ব বেড়েছে। ঐ হাটে আটঘর কুড়িয়ানার দক্ষিনাঞ্চলের বেশ ক’টি এলাকার পেয়ারা ভিমরুলি ভাসমান হাটে বিক্রি হয়। আদমকাঠি থেকে রাজাপুর হয়ে ভিমরুলি যাওয়ার সহজ খালটি অত্যান্ত গুরুত্বপুর্ন। বর্তমানে খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় ভাটার সময় ছোট ছোট নৌকাও চলাচল করতে পারেনা। এ খালটি খনন করা জরুরী। এ ছাড়াও পেয়ারা চাষীদের নানা সমস্যা রয়েছে। দ্রুত পচনশীল এ ফল সংরক্ষনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছর লাখ লাখ টাকার ফসল পঁচে যায়। ফলে চাষী ও বেপারীরা লোকশানের মুখে পড়েন।


এসময় বিভাগীয় কমিশনার পেয়ারা চাষী শৈশব রায়,অতনু হালদার, মনোজ মন্ডল, সুশান্ত হালদারের সাথে কথা বলেন। চাষীরা জানান, কুড়িয়ানা কেবল পেয়ারাই নয় এখানে আমড়া, লেবু, বছর ভরে নানা প্রকারের সবজির আবাদ হয় । কিন্তু বেচা কেনা করার জন্য তেমন কোন স্থায়ী ব্যবস্থা নেই। ঝড় বৃষ্টি রোদ উপেক্ষা করে খোলা আকাশের নিচে কেনা বেচা করতে হয়। কাঁচা মাল কেনা বেচার জন্য শেড নির্মান করা দরকার। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিবছর ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে হাজার হাজার পর্যটক আসেন। তাদের আশ্রয় নেওয়া, বসার বা বিশ্রাম নেওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। অনেক বিদেশী নাগরিকরা এখানে আসেন। প্রাকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য কোন ওয়াশ রুম বা সৌচাগারের ব্যবস্থা না থাকায় চরম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় নারী পুরুষ সকলকে।



কথা শুনে বিভাগীয় কমিশনার বিষয়গুলো পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেনকে বুঝিয়ে বলেন। তিনি আদমকাঠি এলাকায় একটি উন্নতমানের ওয়াশরুম করে দেওয়ার আশ^াস দেন। ভীমরুলি খালটি খননের লক্ষে পানি উন্নয় বোর্ডের সাথে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ^াষ দেন তিনি। এ ছাড়া অন্যান্য সমস্যা গুলো সমাধারে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

এর আগে বিভাগীয় কমিশনার কুড়িয়ানায় পৌছালে আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিঠুন হালদার তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। পরে বিভাগীয় কমিশনার কুড়িয়ানার মুজিব বর্ষের ঘর পাওয়া মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলে সমস্যা ও অনুভূতি সমুহ শুনেন। আশ্রয় পাওয়া মানুষের সামান্য টুকিটাকি সমস্যা সমাধানের জন্য তাৎক্ষনিকভাবে জেলা প্রশাসক ও ইউএনওকে নির্দেশ প্রদান করেন। এসময় তার সাথে ছিলেন পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ডিডিএলজি পিরোজপুর চৌধুরী রওশন ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হক, ইউএনও মো. মোশারেফ হোসেন, পৌরসভার মেয়র মো. গোলাম কবির, সহকারী কমিশনার (ভূমি)মো. বশির গাজী, ওসি আবীর মোহাম্মদ হোসেন প্রমুখ। পরে তিনি ঝালকাঠি হয়ে বরিশাল ফিরেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত