যাবজ্জীবনসহ ৩০ জনের ৫ বছর করে কারাদন্ড

বাগেরহাটে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদন্ড

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০৪:৩১ পিএম, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ | ১৪২৭

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সোহরাব হোসেন হত্যা মামলায় আদালত এক আসামিকে মৃত্যুদন্ড, একজনকে যাবজ্জীবন এবং অপর ২৯ আসামিকে পাঁচ বছর কারাদন্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সাথে আদালত দন্ডপ্রাপ্ত ৩১ আসামির সবাইকে অর্থদন্ডের নির্দেশ দেন। বুধবার দুপুরে বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন ওই রায় ঘোষণা করেন।

আদালত আসামি আতাহার আলী ওরফে পরান বাবুকে মৃত্যুদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন। এছাড়া যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আব্দুর রশিদকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছর সশ্রম কারাদন্ডের নির্দেশ দেন। এছাড়া অপর ২৯ আসামিকে ১৪৭ ধারায় দুই বছর এবং ১৪৮ ধারায় তিন বছর করে কারাদন্ডদেন । একই সাথে পৃথক দুটি ধারায় দন্ডপ্রাপ্ত ওই ২৯আসামিকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ১মাস করে কারাদন্ডাদেশ প্রদান করেন।

রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ ছয় আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি হচ্ছে, বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা গ্রামের ইউসুফ তরফদারের ছেলে আতহার আলী ওরফে পরান বাবু এবং যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামি হচ্ছেন আব্দুর রশিদ।

দন্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হচ্ছেন, সিদ্দিকুর রহমান, হান্নান, রবিউল শিকদার, রাজ্জাক শিকদার, বাবুল হাওলাদার, আব্দুর রব শেখ, আব্দুল করিম শেখ, খলিল শেখ, হাদিস গাজী, মোজাহার গাজী, আনোয়ার হাওলাদার, কালা বাবুল, দিপু ওরফে দিপংকর, হাকিম, হেমায়েত, রফিকুল ইসলাম, আব্দুর রব শিকদার, ফরহাদ হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, আব্দুল ওহাব, গোলাম ফারুক, বাবুল হাওলাদার, পিকলু সরদার, শুক ওরফে সুলতান, মাসুদ শেখ, তরিকুল ইসলাম, মোজাহার ওরফে মোতাহার গাজী, আসাদ শেখ ও আজাহার ওরফে মোজাহার তরফদার। আসামীদের সবার বাড়ি বাগেরহাট ও পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন গ্রামে বলে জানা গেছে।

নিহত সোহরাব আলী শেখ বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার গাজিরহাট গ্রামের বাসিন্দা।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বাড়ি দখলের উদ্দেশ্যে আসামিরা ২০০১ সালের ১৮ জুন সকাল ১০টার দিকে পরান বাবু এবং ইউসুফ আলীর নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি সশস্ত্র দল গাজিরহাট গ্রামের সোহরাব আলীর বাড়িতে যায়। এসময় তারা বাড়িটি ঘিরে সোহরাবসহ তার পরিবারের সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে সোহরাব বাড়ি থেকে বের হয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আসামিরা ধাওয়া করে তাকে গুলি এবং কুপিয়ে হত্যা করে। যাবার সময় আসামীরা বোমা বিস্ফোরন ঘটিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে উল্লাস করতে করতে চলে যায়।

এঘটনায় নিহতের স্ত্রী কহিনুর বেগম ওই দিন ২৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে মোড়েলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাগেরহাট জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক মো.রেজাউল ইসলাম মামলার তদন্ত শেষে ওই বছর ১১ ডিসেম্বর ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানী কালে ১১ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে ওই দন্ডাদেশ ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এ্যাডভোকেট সীতা রাণী দেবনাথ। আসামী পক্ষে ছিলেন এ কে আজাদ ফিরোজ টিপু।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত