বাগেরহাটের রনজিৎপুর চন্দ্র মহল ইকোপার্ক
বিদেশে পাচারের জন্যই কি বিপুল পরিমানে বন্য প্রাণীর চামড়া মজুদ রাখা ছিলো: জনমনে নানা গুঞ্জন
আপডেট : ০৯:১৬ পিএম, রোববার, ২১ নভেম্বর ২০২১ | ৭৬২
বাগেরহাটের রনজিৎপুর গ্রামের বহুল সমোলোচিত ও বিতর্কিত বেসরকারী বিনোদন কেন্দ্র চন্দ্র মহল ইকোপার্কে বিপুল পরিমানে বন্যপ্রাণীর চামড়া মজুদ রাখা হলো কিসের কারণে, তা নিয়ে সচেতন মহলে নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে। এই চামড়া কি বিদেশে পাচারের জন্য মজুত করা হয়েছিল, আর যদি করা হয়ে থাকে তাহলে কারা কারা এই চক্রের সাথে জড়িত। তা নিয়েও জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। এবিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে দোষি ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহনের জোর দাবী উঠেছে।
জানা গেছে, গত ১৫নভেম্বর খুলনা র্যাব-৬ ও বন্যপ্রাণী ব্যাবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনা এর যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। গোপন সংবাদের উপর ভিত্তি করে চন্দ্র মহল ইকোপার্কে লুকিয়ে রাখা বিপুল পরিমানে বন্য প্রাণীর চামড়া জব্দ করেন আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় তারা ০৬টি হরিণের চামড়া, ০১টি ভাল্লুকের চামড়া, ০১টি ক্যাঙ্গারুর চামড়া, ০১টি তিমির কংকাল ও ০৬টি হরিণের শিং জব্দ সহ বিপুল পরিমানে বন্যপ্রনীর শরীরের অংশ বিশেষ জব্দ করেন।
জব্দকৃত চামড়া ও শিং এর কোন বৈধ কাগজপত্র না থাকার কারণে বন্যপ্রাণী সংরক্ষন আইন ২০১২ এর ৩৭(২) ৪০. ৩৪(খ). ২৪ এর অপরাধে চন্দ্র মহল কর্তৃপক্ষকে ৫০হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেন। কিন্তু জড়িমানার নগদ ৫০হাজার টাকা প্রদান করায় পার্কের কথিত ম্যানেজার মোঃ মহব্বত আলী চাকলাদারকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন, বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নুর-ই-আলম সিদ্দিকী।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৬ এর এসপি মোঃ মাফুজুর রহমান বলেন, পার্ক কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ অবৈধ উপায়ে বন্যপ্রাণীর চামড়া মজুদ করেছেন, যার কোন বৈধ কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেন নি।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, ২০০৯সালে পার্কটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু তারা যদি দর্শনার্থীদের দর্শনের জন্য চামড়া গুলি এনে থাকেন, তাহলে এতদিন কেন কর্তৃপক্ষ তার বৈধ কাগজপত্র তৈরী করেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক দর্শনার্থী বলেছে,আমরা বহুবার চন্দ্র মহলে ঘুরতে গিয়েছি, কিন্তু অন্যান্য বন্যপ্রাণী দেখতে পেলেও আমরা কোন দিন বন্যপ্রাণীর চামড়া দেখতে পারিনি। তাছাড়া চামড়া গুলি কেন গোপন স্থানে রাখা হয়েছিল। এগুলি কি সত্যিই বিদেশে প্রচারের জন্য গোপনে এনে রাখা হয়েছিল। তা নিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়টি যথাযথ ভাবে উচ্চপদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তাকে দিয়ে সঠিক তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারনা।