প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্প ব্যাহত

শরণখোলায় বিদ্যালয়ের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা

মহিদুল ইসলাম,শরণখোলা

আপডেট : ০৫:৫১ পিএম, শনিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২১ | ৪২৫

শরণখোলায় একটি বিদ্যালয়ের জমিতে অবৈধ স্থাপনা থাকায় একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা যাচ্ছে না। ফলে, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্পের আড়াই কোটি টাকা ফেরত যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বর্তমানে ভবন ও শ্রেণি কক্ষের অভাবে ব্যবহত হচ্ছে উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ‘শরণখোলা আইডিয়াল ইনিস্টিটিউট’ নামে ওই বিদ্যালয়ে পাঠদান।


জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প থেকে চার তলাবিশিষ্ট একাডেমিক ভবন জন্য বরাদ্দ পায় বিদ্যালয়টি। বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তর থেকে দরপত্রের মাধ্যমে ২০২০ সালের ৯ মার্চ মেসার্স বেতাগা ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এর পর ওই বছরের (২০২০সাল) ২৪ অক্টোবর বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণের জায়গার একটি অংশ অবৈধ ভাবে তিনটি পরিবার দখল করে বসবাস করছে। উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বহুবার চেষ্টা করেও তাদের সরাতে পারেনি। এমনকি উপজেলা প্রশাসন থেকে মুজিববর্ষের ঘর দিয়ে অন্যত্র পুনর্বাসন করতে চাইলেও তা প্রত্যাক্ষান করে ওই তিন পরিবার।

শরণখোলা আইডিয়াল ইনিস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো. উসমান গণি জানান, দ্রæত ভবন নির্মাণের জায়গা খালি করতে না পারলে বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত যাবে বলে বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তর থেকে তাকে জানানো হয়েছে। এমনিতেই ভবনের অভাবে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। নতুন ভবনের টাকা ফেরত গেলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হবে বলে হত্যাশা প্রকাশ করেন তিনি।


বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাফিজ আক্তার জানান, দেড় বছর পার হলেও জায়গা না পেয়ে কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদার। ইতোমধ্যে কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাতুনে জান্নাত বলেন, ভ‚মিহীন ওই তিনটি পরিবারকে উপজেলা প্রশাসন থেকে মুজিববর্ষের ঘর দেওয়ার কথা বলা হলেও তারা নেয়নি। কি কারনে নেয়নি তা বুঝে আসছে না। তাদের অন্যত্র পুনর্বাসনের চেষ্টা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শিক্ষাবিদ আব্দুস ছাত্তার আকন এবং জেলা আওয়ামীলীগের নেতা ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য এম সাইফুল ইসলাম খোকন বলেন, শরণখোলা আইডিয়াল ইনস্টিটিউট আধুনিক ও যুগপযোগী শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে। কিন্তু একটি মহল পেছনে থেকে ষড়যন্ত্র করছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য সরকারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে হস্তক্ষেপ কামনা করি।

উল্লেখ্য, সুন্দরবন সংলগ্ন উপক‚লীয় পশ্চাৎপদ জনপদ শরণখোলার শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য ২০১২ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম মামুন উজ্জামান শরণখোলা আইডিয়াল ইনিস্টিটিউট নামে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। উপজেলা প্রশাসনের পরিচালনায় প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে প্লে থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঁচ শাতধিক শিক্ষার্থী মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষা ও সহশিক্ষার নানা বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছে। যার ফলশ্রæতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠনটির নামে ৯০ শতক খাস জমি দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্ত দিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত