৫মাস পরও চলছে নির্বাচনী সহিংসতা

মামলা তুলে না নেওয়ায় বাদীর হাত-পা ভেঙে দিয়েছে আসামিরা

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ০৫:৩৭ পিএম, রোববার, ২৩ জানুয়ারী ২০২২ | ৬৩৫

ইউপি নির্বাচনের পাঁচ মাস পার হলেও শরণখোলার সাউথখালীতে তার জেরে চলছে সহিংস ঘটনা। শনিবার (২২জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে পরাজিত মেম্বর প্রার্থীর কর্মী আবু সালেহ খলিফার (৪০) হাত-পা ভেঙে দিয়েছে বিজয়ী মেম্বর রিয়াদুল পঞ্চায়েতের ক্যাডাররা।


জানা যায়, নির্বাচন পরবর্তী এক সহিংস ঘটনায় প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী হানিফ মুন্সীর কর্মী যুবলীগ নেতা আবু সালেহ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা তুলে না নেওয়ায় মেম্বরের ভাই আসামি আসাদুলসহ ক্যাডাররা হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আবু সালেহর বাম হাত ও বাম পা ভেঙে দেয়। সাউথখালী ইউনিয়নের বগী বন্দরে ঘটে এঘটনা।

গুরুতর আহত আবু সালেহকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওই রাতেই খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় মেম্বর রিয়াদুল পঞ্চায়েতসহ ১২ জনের নামে শরণখোলা থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনায় জড়িত তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আহত আবু সালেহ বগী গ্রামের আ. রহমান খলিফার ছেলে। তিনি বগী বন্দর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বগী বাজারের একজন মৎস্য ব্যবসায়ী।

মামলার বাদী ও আহত আবু সালেহর চাচা দেলোয়ার খলিফা জানান, গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে সাউথখালী ইউনিয়নের ৭ নম্বর বগী ওয়ার্ডে রিয়াদুল পঞ্চায়েত এবং হানিফ মুন্সী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে রিয়াদুল পঞ্চায়েত বিজয়ী হন। এর পর বিজয়ী মেম্বরের নির্দেশে তার ক্যাডার বাহিনী পরাজিত হানিফ মুন্সির কর্মীদের ওপর একের পর এক হামলা-নির্যাতন চালাতে থাকে।


বাদী জানান, তারই ধারাবাহিকতায় দেড় মাস আগে আবু সালেহ ও তার বাবা রহমান খলিফাকে মারধর করেন মেম্বর রিয়াদুলের ভাই আসাদুল পঞ্চায়েত। ওই ঘটনায় আবু সালেহ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করায় তারা আরো ক্ষীপ্ত হন। এরপর পর মামল তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি দিতে থাকেন আসামিরা। মামলা তুলে না নেওয়ার জেরে শনিবার রাত ৮টার দিকে আসাদুল পঞ্চায়েত, ফারুক খান, পলাশ, ডালিম, মহাররাজ, বেল্লালসহ ১২-১৩ জন মিলে হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আবু সালেহকে গুরুতর জখম করে। খুলনা মেডিক্যালে নেওয়ার পর তার বাম হাত ও বাম পা ভেঙে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. নাদিয়া নওরিন জানান, আবু সালেহর শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম রয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খুলনা মেডিক্যালে রেফার্ড করা হয়েছে।


এব্যাপারে বগী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রিয়াদুল পঞ্চায়েত জানান, এটা কোনো নির্বাচনী প্রতিহিংসা নয়। একটি কম্পিউটার ডিস্ক নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে প্রথমে আসাদুলকে মারধর করে হানিফসহ কয়েকজন। পরে আসাদুলসহ ১০-১২ জন এক হয়ে আবু সালেহকে মারধর করেছে বলে শুনেছি।


শরণখোলা থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় মেম্বর রিয়াদুলসহ ১২জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এদের মধ্যে ডালিম হাওলাদার, আলাল হাওলাদার ও রাকিব হাওলাদার নামে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত