কিনিকে নবজাতকের মৃত্যু

বাগেরহাটে ইউপি সদস্যকে হয়রানির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০২:৫৬ পিএম, সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ১০৮৭

প্রতিকী ছবি

বাগেরহাটে নবজাতকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ২ ইউপি সদস্যকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। নবজাতকের মৃত্যুর তিন মাস পর নবজাতকের বাবা ও স্থানীয় এক ডাক্তার ও কিনিক ম্যানেজারের বিবাদ মিমাংসা করতে গিয়ে উল্টো দুই ইউপি সদস্য হয়রানির শিকার হচ্ছে ।

জানা যায়, সদর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের শাহজাহান হাওলাদারের স্ত্রী লাকী বেগম সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় ২৭ জুন গভীর রাতে স্থানীয় পরিত্রান কিনিকে ভর্তি করেন। কিনিক ম্যানেজার ফাতেমা বেগম স্বাভাবিক ডেলিভারী হবে বলে জানান। কিন্তু লাকী বেগমের অবস্থার অবনতি হওয়ায় শাহজাহান কিনিক মালিক ডা. মোস্তফা হাসানের কাছে গেলে তার দুর্ব্যবহার করে। পরদিন কিনিকের ডাক্তার উদয় বরন রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে সিজার করে। বাচ্চার অবস্থার অবনতি হলে খুলনা শিশু হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। পরিত্রান কিনিকের ম্যানেজার ও মালিক অবহেলা করে সময়মত ডাক্তারকে খবর না দিয়ে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন না করে ভুল চিকিৎসার কারনে নবজাকরে অবস্থার অবনতি হয়ে মৃত্যু হয় বলে মৃত্যুর এক মাস পর সাহজাহান আদালতে অভিযোগ করেন। পরে শাহজাহান ভুলবুঝে ঐ অভিযোগটি করেছিলো বলে স্থানীয় ইউপি মেম্বারদের সহয়তায় আগষ্ট মাসে এফিডেবিটের মাধ্যমে বাগেরহাট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদাতের (ফকিরহাট) মাধ্যমে অভিযোগ প্রত্যাহারের আবেদন করে। কিন্তু নবজাতকের পিতা সাহজাহান কিনিক মালিক ও ম্যানেজারের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে অন্যথায় পুনরায় মামলা চালু করার হুমকি দেয়।

ফকিরহাট পিলজং ইউপি সদস্য আরিফুল মল্লিক বলেন, শাহজাহান ভুল বুঝে মামলা করেছে তা বুঝতে পেরে আমার কাছে আসলে পার্শবর্তী রাখালগাছী ইনিয়নের সাবেক সদস্যর দেলোয়ার হোসেন দিলুর মধ্যস্থতায় বাগেরহাট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের কাছে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করে। কিন্তু মৃত সন্তানকে বিক্রি করতে সে পিছপা হয় নি। পরিত্রান কিনিকের মালিক ও ম্যানেজোরের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে অন্যথায় পুনরায় মামলা চালু করার হুমকি দেয় বলে জানতে পারি। শাহজাহানকে এমন কাজ করতে নিষেধ করায় টাকার লোভে সে আমাদের নামে মিথ্যা পুলিশে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। কারো অবহেলায় শাহজাহানের সন্তানের মৃত্যু হলে তার সুষ্ঠ বিচার হোক , তবে অন্যায় ভাবে কাউকে হেনস্ত করা ঠিক নয়।


রাখালগাছী ইনিয়নের সাবকে সদস্যর দেলোয়ার হসোন দিলু বলেন, শাহজাহান টাকার লোভে তার মৃত সন্তানকে বিক্রি করছে। ভুল বোঝাবুঝির কারনে কিনিকের মালিকের নামে মামলা করেছে বলে আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে স্বীকার করে, এবং আদালতে ২ বার সাক্ষ্য দেওয়ার পরও টাকার লোভে এখন সে আদালতের দেওয়া কথাকে ভুলে গেছে। আদালত অবমাননা করছে সে। এলাকার সাবেক মেম্বার হিসাবে যে কোন সমস্যা সমাধানে মানুষ আমার কাছে আসে। শাহজাহান তার ভুল বুঝতে পেরে আমার কাছে আসে এবং আমি মধ্যস্থতায় থেকে বিষয়টি আইনি ভাবে সমাধানে চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে এখন আমাকেই অভিযুক্ত করছে। প্রশাসনের কাছে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের আশা করছি।

এ বিষয়ে শাহজাহান হাওলাদার বলেন, কিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আমি আমার সন্তানকে হারিয়েছি। আমি শুধুমাত্র এই অন্যায়ের বিচার চাই।


বাগেরহাটে চুলকাঠি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অসিত কুমার রায় বলেন, শাহজাহান হাওলাদার দুই ইউপি সদস্যের নামে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি আমাকে তদন্ত করতে বলা হয়। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে রিপোর্ট পুলিশ সুপারের কাছে জমা দেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত