বিচার মিলছেনা অসহায় দিনমজুরের চিংড়ী ঘেরে বিষ দিয়ে মাছ মারার 

মোংলায় চিংড়ী ঘেরে বিষ দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার মাছ মেরে ফেলায় থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারণে বিচার পাচ্ছে না অসহায় একটি দিনমজুর পরিবার। এছাড়া ঘেরে বিষ দেয়ার ঘটনা নিয়ে পক্ষপাতিত্তের ও অভিযোগ উঠেছে পুলিশ ও স্থানীয় মাতুব্বরদের বিরুদ্ধে। দুর্বৃত্তদের আড়াল করতে বার বার শালিশ বৈঠকের কথা বলে কালক্ষেপন করছে প্রভাবশালীরা, ঘটনার ৬দিন অতিবাহিত হলেও এখনও কোন আসামীকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। প্রতিপক্ষরা বাদী ও স্বাক্ষীকে প্রানশাশের হুমকি দেয়ায় এখন নিরাপত্তায় ভুগছে অসহায় এ পরিবারটি। তবে পুলিশ বলছে, সঠিক তথ্য উদঘাটনের জন্য তদন্ত চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানায়, পুর্ব শত্রুতার জেরে অসহায় মিঠাখালী ইউনিয়নের সাহেবের মেঠ এলাকার দিন মজুর মোঃ খোকন ফকিরে একটি চিংড়ী ঘেরে বিষ দিয়ে প্রায় কয়েক লক্ষ টাকার মাছ মেরে ফেলে একই এলাকায় বাসবাসকারী রমেন হালদার। ওই দিনমজুরের চিংড়ী ঘেরে বিষ দেয়ার সময় অন্য প্রতিবেশী তা দেখে ফেলায় ঘটনাটি খোকনকে বলে দেয় সে। ঘেরে বিষ দেয়ার ফলে কিছু সময় পরই চিংড়ী ঘেরে থাকা গলদা, বাগদা সহ বিভিন্ন প্রজাতির সাদা মাছ মরে ভেসে উঠে। এ ঘটনা দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পরে খোকন সহ তার পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার পর পরই খোকনের স্ত্রী মোসাম্মাৎ তারা বানু বাদী হয়ে ২০ অক্টোবর দুপুরে মোংলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এ অভিযোগে আসামী করা হয়েছে ঘেরে বিষ প্রদানকারী প্রতিপক্ষ রমেন হালদারকে।

স্থানীয়রা জানায়, সাহেবের মেঠ এলাকার খোকন ফকির নামের এক দিন মজুর, তার লিজ নেয়া জমিতে চিংড়ী মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। বেশ কিছু দিন যাবত পাশের এক সন্ত্রাসী ওই জমিটুকু দখলে নেয়ার জন্য পিছু নেয় খোকনের। দীর্ঘদিন থেকে দিনমজুর খোকন ফকির ও তার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন সময় বিপদে ফেলার জন্য ফন্ধি আটছিল রমেন হালদার সহ তার লোকজন। অসহায় এ পরিবারটির জমি টুকু দখলে নিতে না পেরে গত (২০ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খোকন ঘেরে না থাকার সুবাদে গোপনে তার চিংড়ী ঘেরে বিষ ছিটিয়ে দেয় রমেন। মুহুর্তের মধ্যে ঘেরের মাছ মরে ভেসে উঠে। এতে খোকনের কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে থানার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এ সময় প্রতিবেশী সৌমেন হালদার ঘেরে বিষ দেয়ার বিষয়টি দেখে ফেলায় কাউকে কিছু না বলার জন্য তাকে প্রান নাশের হুমকি দিয়ে চলে যায় ওই সকল সন্ত্রাসীরা। তবে স্বাক্ষী ও বাদী সহ তার পরিবারের সদস্য এখন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে জানায় স্থানীয়রা।

মোংলা চটেরহাট পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ এস আই আলী রেজা বলেন, মিঠাখালী এলাকায় চিংড়ী ঘেরে বিষ দেয়ার ঘটনা নিয়ে থানায় অভিযোগ হলে থানার অফিসার ইনচার্জ বিষয়টি সরেজমিনে তদন্তের জন্য আমার উপর ন্যাস্ত করেন। এ ব্যাপারে উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠকও হয়েছে কিন্ত অভিযুক্ত রমেন বিষয়টি অস্বীকার করায় পুনরায় তদন্ত করার জন্য একটু সময় লাগছে। তদন্তে সত্যতা পেলে আসামীকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলেও জানায় ফাঁড়ীর এ কর্মকর্তা।