স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা খুন:ঘাতক ফরিদসহ গ্রেফতার ৯, হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তল উদ্ধার

বাগেরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম তানু ভুঁইয়াকে গুলি করে হত্যার ২২ ঘন্টার মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত স্থানীয় যুবলীগের নেতা ও পুলিশের তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী ফদির শেখসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এসময়ে ঘাতকদের কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত এক রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। শনিবার গভীর রাতে বাগেরহাট পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার বালিডাঙ্গা গ্রামে সন্ত্রাসী ফরিদ শেখের ফুফুর বাড়ী থেকে তাদের গ্রেফতার করে। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাতে বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার স্ত্রী বাদী হয়ে শনিরার রাতে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হাসিবুল হাসান শিপন মিনাকে হুকুমের আসামী করে ১৭ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।

এদিকে বাগেরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম তানু ভুঁইয়া হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে জেলা বিএনপি চার দিনের ঘোষিত কর্মসুচি চলাকালে রবিবার সকালে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালামের নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীরা কালোব্যাচ ধারন করে শহরের পুরাতন বাজার মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে সমাবেশ শুরু করলে পুলিশের বাধায় তা ভন্ডুল হয়ে যায়।

পুলিশের অভিযানে গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন, কিলিং মিশনে অংশ নেয়া প্রধান ঘাতক ফদির শেখ (২৮) মনির (২৬), রাতুল (২৭), সিরাজুল (২৭), আলআমিন (৩০), সুমন ((২৬), সোহাগ (২৫), মুকুল শেখ (৫৩) ও কবির (৫০)। এদের মধ্যে সোহাগ ছাড়া সবার বাড়ী বাগেরহাট শহরের বাসাবাটী এলাকায়। এরমধ্যে সোহাগের বাড়ী বাগেরহাট শহরতলীর কাড়াপাড়া এলাকায়। গ্রেফতারকৃত এই ৯ জনের মধ্যে কবির ছাড়া সবাই হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত আসামী। এদের নামে হত্যা, মাদক ও অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক রবিবার দুপুরে জেলা পুলিশ অফিসে প্রেস ব্রিফিংএ এই তথ্য জানান। পুলিশ সুপার আরো বলেন, শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাতে বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম তানু ভুঁইয়া নিহত হয়। এঘটনার পর ঘাতকদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম জেলা ও জেলার বাইরে অভিযান শুরু করে। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় শনিরার রাতে নিহতের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা রাখি বাদী হয়ে হাসিবুল হাসান শিপন মিনাকে হুকুমের আসামী করে প্রধান ঘাতক ফরিদ শেখসহ ১৭ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ে করেন। বাগেরহাট পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের ২২ ঘন্টার মধ্যে প্রধান ঘাতক ফদির শেখ (২৮) সহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

এসময়ে তাদের কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত এক রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদে ফরিদ শেখসহ অন্যরা তানু ভুঁইয়াকে গুলি করে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড চাইবে পুলিশ। পুলিশ বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃতদের নামে অস্ত্র আইনে আরো একটি মামলা করা করেছে। এলাকার আধিপত্য বিস্তার ও মাদক বেচাকেনা নিয়ে এই হত্যাকান্ডটি ঘটেছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।