ছাগলের খামার করে গ্রামীন অর্থনীতিতে অভাবনীয় সাফল্য এনেছেন শিক্ষিত শুভেন্দু

পি কে অলোক,ফকিরহাট

আপডেট : ১০:৫৭ পিএম, বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩ | ৫৫১

ফকিরহাটে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত বেকার যুবক শুভেন্দু রায় চৌধুরী ছাগলের খামার করে গ্রামীন অর্থনীতিতে অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছেন। তার এই সাফল্য দেখে গ্রামের বেশ কয়েকজন শিক্ষিত বেকার যুবক ছাগল পালনে উৎসাহ জুগিয়েছেন। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও চাকুরীর পিছনে না ছুটে গ্রামীন অর্থনীতিতে যুগান্তকারী ভুমিকা পালন করায় যুবসমাজের অহংকারে পরিনত হয়েছেন শিক্ষিত এই যুবক শুভেন্দু রায়।


সমাজের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত বেকার যুবকরা যদি শুভেন্দু’র মত চাকুরীর পিছনে না ছুটে ছাগলের খামার করে জীবিকা নির্বাহ করতো তাহলে একদিকে যেমন গ্রামীন অর্থনীতি চাঙ্গা হতো, অন্যদিকে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করে নিজেরা নিজেই স্বাবলম্বি হতো।


জানা গেছে, শুভদিয়া ইউনিয়নের তেকাটিয়া গ্রামের সুকুমার রায় চৌধুরী’র পুত্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান শুভেন্দু রায় চৌধুরী ২০০৮ সালে ঢাকাস্থ “এশিয়ান ইউনিভারসিটি অব বাংলাদেশ” বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমবিএ পাশ করেন। এমবিএ পাশ করার পর দীর্ঘকাল ধরে সরকারী চাকুরীর পিছনে ছুটে ছুটে নিজে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। এবং বেশ কয়েকটি বেসরকারী ব্যাংক বীমা ও প্রতিষ্টানে চাকুরীও করেন। চাকুরীর টাকায় তাদের নিজেদের সংসার না চলায় অন্য কোন পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করার জন্য নানা ধরনের পরিকল্পনা গ্রহন করে ব্যর্থ হন। এবং সর্বশেষ ইউটিউবে তিনি দেখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্নাস পড়ুয়া একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছাগলের খামার করে নিজেই স্বাবলম্বি হয়ে গ্রামীন অর্থনীতির অভাবনিয় সাফল্য দেখিয়েছেন। তার এই অভাবনিয় সাফল্য দেখে এবং নিজে থেকে উদ্ভুদ্ধ হয়ে ছাগলের খামার করার পরিকল্পনা গ্রহন করেন। সে মোতাবেক ২০২২সালের মে মাসে মাত্র ৭০হাজার টাকা ব্যায়ে সুপারির বাতা ও টিন সেটের ঘর নির্মাণ করে খামার তৈরী করেন। এবং ৮০হাজার টাকায় সর্বপ্রথম ৪টি গাভীন ছাগল ক্রয় করে খামারের যাত্রা শুরু করে। এরপর সেই চারটি ছাগল হতে মাত্র ১১মাসে এখন তার খামারে প্রায় অর্থ শতাধিক ছাগলে উন্নতি হয়েছে।

সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, তার এই ছাগলের খামারে ব্লাক বেঙ্গল, তোতা পুড়ি ও হরিয়ানা দেশীয় জাতের বেশ কয়েকটি ছাগল রয়েছে। প্রতিদিন অর্থশতাধিক ছাগলের পিছনে খাবার খরচ বাবদ প্রায় ২শত টাকা ব্যায় হয় তার। খামারে যে কয়েকটি ছাগল রয়েছে তার আনুমানিক বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ৩লক্ষ টাকা। তার খামারে গাভীন ছাগল ১৫টি, খাসি ছাগল ১৬টি, বাচ্চা ছাগল ৭টি ও দুধ দেওয়া ছাগল ৪টি রয়েছে। নিজ জমিতে বপনকরা নেপিয়ার ঘাস দানাদার ও খড় সহ দেশীয় নানা প্রকার ঘাস খাইয়ে খামারটিকে তিনি ধরে রেখেছেন। তার দেখা-দেখি পার্শ্ববতী উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত (অর্নাস পাশ) মোঃ জিন্নাত আলী, নয়ন ও পল্লব কুমার ঘোষ ছোট্ট আকারের ছাগলের খামার করেছেন। তাছাড়াও তার নিজের ৫টি ছোট্ট পুকুর রয়েছে, যেখানে তিনি দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ ও “প্রবর্তন গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি” নামের একটি সমিতি রয়েছে। যার মাধ্যমে ২ শতাধিক ব্যক্তিকে অর্থ প্রদান করে গ্রামীন অর্থনীতিকে আরো সচল করেছেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তিনি তার খামারে প্রজনন বৃদিং এবং ফ্যাটারিং পদ্ধতিতে ছাগল পালন করবেন। যা থেকে তার বার্ষিক আয় হবে প্রায় ১৮ থেকে ২০লক্ষ টাকা। তিনি আরো বলেন, সরকারী বা বেসরকারী প্রনোদনা (সহযোগীতা) পেলে খামারটিকে আরো উন্নত করবেন। যাতে বেকারত্ব দুরের পাশা-পাশি গ্রামীন অর্থনীতির উত্তর উত্তর উন্নতি হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত