কচুয়ায় বাধালের সুপারির হাটে বিক্রি হয় কোটি টাকার সুপারি 

শুভংকর দাস বাচ্চু,কচুয়া 

আপডেট : ০৫:১২ পিএম, রোববার, ৫ নভেম্বর ২০২৩ | ৪৪১

bagerhat24.com

বাগেরহাট-পিরোজপুর মহাসড়কের উত্তর পাশে অবস্থিত কচুয়া উপজেলার বাধাল বাজার। বাগেরহাট জেলার অন্যতম বৃহৎ সুপারির হাট। প্রতি হাটবারে বিক্রি হয় কোটি টাকার সুপারি। সপ্তাহে দুই দিন রোববার ও বৃহস্পতিবার বসে এই হাট টি।


কচুয়া উপজেলা লবন ও মিষ্টি পানির সংমিস্ত্রিত এলাকা যার কারনে এখানকার সুপারি খেতে সুস্বাদু হওয়ায় দেশের উত্তর অঞ্চলের জেলা গুলিতে চাহিদা বেশি যা“বাগেরহাটের সুপারি” নামে পরিচিত। পার্শবর্তী মোরেলগঞ্জ উপজেলার হোগলাপাশা, বনগ্রাম, দাসখালী, পিরোজপুরের কদমতলা সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এ বাজারে শুপারি বিক্রয় করতে আসে। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর, সৈয়দপুর, দিনাজপুর, নাটোর, গাইবান্ধাসহ দেশের ২০টি জেলায় সরবরাহ করা হয়।


রোববার (০৫ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে বাধাল বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে বিক্রেতা ও ক্রেতার সমাগমও চোখে পড়ার মতো। কাক ডাকা ভোর থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে ভ্যান, নছিমন, ইজিবাইকে করে বস্তা, ঝাকা ভর্তি সুপারি নিয়ে হাটে আসছেন সুপারি চাষি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। চলছে দাম কষাকষি।বিক্রিও হচ্ছে খুব। আড়তদার/ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে রাখছেন। এই সুপারি আবার বাছাই এবং চুড়ান্ত গণনা শেষে বস্তা ভর্তি করতে কাজ করছেন শতাধিক শ্রমিক।

কচুয়া উপজেলার মালিপাটন থেকে সুপারি বিক্রি করতে আসা তাপস মৃধা বলেন, এ বছর আমাদের সুপারির ফলন ভালো হয়েছে। সুপারির আকারও অনেক ভালো। পাশাপাশি দামও একটু কম পাচ্ছি। সুপারির ফল ভালো হওয়ায় আমরা খুশি। মোড়েলগঞ্জের রামচন্দ্রপুর গ্রামের মোঃ আলম শেখ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন,‘সুপারি হাটের জন্য বিখ্যাত কচুয়ার বাধাল বাজার। এছাড়াও উপজেলার তালেশ্বর, টেংরাখালি, সাইনবোর্ড,গজালিয়া বাজারেও সুপারি বিক্রি হয়।

সুপারি গণনা ও বাছাই কাজে নিয়োজিত শ্রমিক ইদ্রিস, ইউনুস ও মোবারেক জানান, সপ্তাহে দুই দিন আমরা এই হাটে সুপারি গণনা করি। ফজরের নামাজের পরেই হাটে চলে আসি। রাত ১০টার সময় বাড়িতে যাই। এক কুড়ি সুপারি বাছাই শেষে গণনা করে বস্তাবন্দি পর্যন্ত আমরা পাই ৫ টাকা। প্রতিদিন ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা আয় হয় আমাদের। সুপারির মৌসুমে এই কাজ করেই আমাদের সংসার চলে।

বাধাল বাজারের আড়তদার কেয়াম গাজী বলেন,এই হাটে আমরা ৯/১০ জন আড়তদার আছি। প্রতি হাটে এক থেকে দেড় হাজার বস্তা সুপারি আসে এই বাজারে। এখন বাজার মূল্য একটু কম। গত বছরের তুলনায় এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় সুপারির উৎপাদনও ভালো হয়েছে। এভাবে থাকলে আমরাও লাভবান হব এবং চাষিরাও লাভবান হবেন।

সুপারি ব্যবসায়ী অশিত দাস বলেন, বাধাল হাট থেকে সুপারি কিনে আমরা সরাসরি রংপুর ও এর আশেপাশের জেলাতেও বিক্রি করি। এ বছর সুপারির বাজার ভালো না। এক কুড়ি সুপারি কখনো ২৫০ থেকে ৪০০ টাকায় আবার কখনো ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মামুনুর রশিদ বলেন,বাগেরহাট জেলার মধ্যে কচুয়া উপজেলায় বেশি সুপারি উৎপাদিত হয়। এ বছর ১ হাজার ২৩২ হেক্টর জমিতে ৪ হাজার ৯২৮ মেট্রিক টন সুপারি উৎপাদন হয়েছে। বাজারে দাম একটু কম তারপরেও সুপারি ফলন বেশি হওয়ায় চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। আমরাও কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত