৬০ লাখ নিয়ে উধাও

বাগেরহাটে প্রতারক শাহিন জেলে

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ১০:৩৮ পিএম, সোমবার, ২ অক্টোবর ২০১৭ | ২৩৩৪

প্রতারক

বাগেরহাটে ৬০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার ৩বছর পর অবশেষে বিকাশের মোংলাস্থ জোনাল এজেন্ট মেসার্স লাক্সমি ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের তৎকালীন ডিস্ট্রিবিউশন সুপারভাইজার শাহিন হাওলাদারের হদিস মিলেছে। টাকা আত্মসাৎতের ঘটনায় ওই সময় বিকাশ লি: এর জোনাল ডিস্ট্রিবিউটর ও লাক্সমি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’র সত্ত্বাধিকারী হারুন অর রশিদের দায়ের করা মামলার চার্জশিট সম্প্রতি আদালতে প্রেরণের পর আত্মগোপনে থাকা শাহিন গত ২৬ আগস্ট বাগেরহাট আদালতে আত্মসমর্পন করেছেন। এদিকে আদালতে আত্মসমর্পনের খবর পেয়ে শাহিনের প্রতারণার শিকার অন্যান্য ব্যক্তি এবং ব্যবসায়ীরাও তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগসহ আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে ১২ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা শহরের রাহাতের মোড়ের ব্র্যাক ব্যাংক (বাগেরহাট শাখা) থেকে ৬০ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে শাহিন হাওলাদার (৩৮) কৌশলে আত্মগোপন করেন। এ ঘটনার পরদিন ১৩ জুন শুক্রবার দুপুরে মেসার্স লাক্সমি ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী হারুন অর রশিদ বাগেরহাট সদর মডেল থানায় শাহিনসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ও দুদকের পৃথক তদন্তে শাহিনকে দোষী সাব্যস্ত উল্লেখ করে সম্প্রতি আদালতে মামলার চার্জশিট প্রেরণের পরই শাহিন আদালতে আত্মসমর্পন করেন। শাহীন বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ভাটখালী গ্রামের সুলতান হাওলাদারের ছেলে। বিকাশের ডিস্টিবিউশন সুপাইভাইজারের দায়িত্বপালনকালে শাহিন মোংলা পৌরসভার মোর্শেদ সড়কে বসবাস করতেন।

এদিকে শাহিন বিভিন্ন সময়ে স্ট্যাম্প ও চেক দিয়ে নানা প্রলোভনে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধারের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। শাহিন আদালতে ধরা দেয়ার খবরে এ সব লোকজন একত্রিত হয়ে টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য প্রশাসনের দারস্থ হচ্ছেন। কেউ কেউ থানা কিংবা আদালতে মামলা দায়েরেরও প্রস্তুতি নিয়েছেন। স্ট্যাম্প ও চেক দিয়ে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দন্ত বিভাগের চিকিৎসক দিদারুল আলমের কাছ থেকে ৪০ হাজার, ব্যবসায়ী জহুরুল আলমের কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার, টিপু সরদারের কাছ থেকে ৭৩ হাজার, শামীমের কাছ থেকে ৩ লাখ ও হাফেজ মো: আল আমিনের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় বলে শাহিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া আরো প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অনেকের কাছ থেকেই টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে প্রতারক শাহিনের বিরুদ্ধে।

মেসার্স লাক্সমি ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী হারুন অর রশিদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আমি বিকাশ লি: এর বাগেরহাট জেলার মোংলা, রামপাল, শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জ থানার জোনাল ডিস্ট্রিবিউটর। শাহিন হাওলাদার আমার প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মচারী ছিলেন। সেই কারণেই তিনিই আমার একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন ও জমা দিতেন। কিন্তু গত ২০১৪ সালের ১২ জুন বাগেরহাটের ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ৬০ লাখ টাকা তুলে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে আত্মগোপন করেন শাহিন। দীর্ঘ তিন বছরের অধিক সময় আত্মগোপনে থাকার পর গত ২৬ আগস্ট বাগেরহাট কোর্টে এসে আত্মসমর্পন করেছেন তিনি। হারুন আরো বলেন, শাহিন শুধু আমার একার ৬০ লাখ টাকা নয়, বিভিন্নজনের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে আরো প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপন করেছিল বলেও এখন সেগুলো বেরিয়ে এসেছে। শাহিনের প্রতারণার শিকার অনেকেই নি:স্ব হয়ে এখন পথে বসার উপক্রম হয়ে পড়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত