১৯ বছরেও লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া

উন্নয়ন বঞ্চিত চিতলমারীর “স্বপ্নপুরী” গ্রাম

চিতলমারী সংবাদদাতা

আপডেট : ০৪:০৬ পিএম, মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৭ | ১৪৮৮

চিতলমারীতে শতবছর পুর্বে জেগেওঠা মধুমতির চরে বসবাসকারি মানুষেরা সরকারি বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এখানে অবস্থিত গ্রামটিরনাম এখন “স্বপ্নপুরী”। ১৯ বছরধরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি চিতলমারীর এ গ্রামে। স্বপ্নপুরীর মানুষের স্বপ্নছিল তারা মৌলিক অধিকার নিয়ে স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করবেন। কিন্তু ১৯৯৮সাল থেকে এ পর্যন্ত তাদের সে স্বপ্ন আর পুরন হয়নি। সরকার আসে সরকার যায়, কিন্তু তাদের ভোগান্তির কথাটি কেউ একটু শুনতেও চায়না। এমনটি বলছিলেন ওই গ্রামের বাসিন্দা খলিলুর রহমান খান।

সরেজমিনে জানাগেছে, মধুমতি,বলেশ্বর ও চিত্রা নদীর কেন্দ্রস্থলে আজকের চিতলমারী উপজেলা গঠিত। কালের বিবর্তনে সে সকলনদী এখন তার যৌবন হারিয়েছে। শতবছর পুর্বে জেগে চওে দিনে দিনে বসতি গড়ে উঠছে। তারই একাংশ কুরাল তলার চর বা (মধুমতিরচর)- নামটি বিলুপ্তহয়ে আজকের স্বপ্নপুরী গ্রাম। চিতলমারী সদও থেকে মাত্র ২কিলোমিটার উত্তর দিকে হিজলা ইউনিয়নে এ গ্রামটির অবস্থান।

বাগেরহাট জেলার অন্তর্গত ছোট এই উপজেলায় ১লাখ ৩৮হাজার ৮১০জন মানুষের বসবাস। যার মধ্যে পুরুষ ৫৯ হাজার ৪১৬ এবং নারীর সংখ্যা ৫৯ হাজার ৩৯৪ জন। ফলে আবাসন ব্যবস্থার ঘাটতি থাকার কারনে এখানকার মানুষ কে নতুন নতুন স্থানে বসতি স্থাপন করতে হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৮ সালে এ গ্রামটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে রয়েছে মোট ৫৮টি পরিবার প্রতি পরিবারে গড়ে ৮ জন করে সদস্য এরা সকলেই মুসলিম। যাতায়াতের জন্য রয়েছে মেটোপথ (মাটিররাস্তা),ছেলে মেয়েদের পড়া লেখার জন্য এ গ্রামে কোন সু-ব্যবস্থা না থাকার কারনে প্রায় ৪/৫ কিলোমিটার পথ পাড়িদিয়ে কুরালতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে হয়।

এ গ্রামের অর্ধেক মানুষ বিদ্যুৎসুবিধা পেলেও অন্যরা এ সুবিধা থেকে রয়েছেন বঞ্চিত। সুপেয় পানির ব্যবস্থা না থাকায় নলকুপের আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করছেন প্রতিটি পরিবার। অনেকে হাড়ি ফিল্টারের বিকল্প ব্যবস্থায় পানি বিশুদ্ধ করে পান করছেন। এখানে এক বাড়ীতে ধর্মীয় শিক্ষার দিক থেকে স্ব উদ্যোগী এক ক্বারিয়ানা পড়–য়া নারীর মাধ্যমে সকাল বিকেল কোমলমতী শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া হয়। ওই নারীর শ্বশুর মোঃ খলিলুর রহমান খান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আমার পুত্রবধু আয়শা সিদ্দিকি বিনা পারিশ্রমিকে ২০/২৫জন শিশুকে ১বছর ধরে এখানে পবিত্র ক্বোরআন শিক্ষা দিয়ে আসছে। তারমধ্যে আমার ৮বছরের নাতী আব্দুল্লা শেখ ১০পারা ক্বোরআনে হাফেজ হয়েছে বর্তমান। তিনি বলেন ভাই এমন গ্রামে বসবাস করছি এখানে স্কুলতো দুওে থাক একটা মাদ্রাসা পর্যš Íনেই। গ্রামবাসীর উদ্যোগে এখানে “স্বপ্নপুরী” ফাতেমাতুজ্জান্নাতি নামকরনে একটি মসজিদ নির্মিত হলেও তা একেবারেই অনুন্নত।

একই গ্রামের উকিল উদ্দীন মুন্সীর সাথে কথা হলে তিনি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, বাপ-দাদার পৈত্রিক ভিটায় জায়গার সংকলন না হওয়ায় এখানে প্রায় ২যুগ হলো আসছি। আমি সহ সকলে কৃষি কাজ করে জীবিকা চালাই, মহাজনের বরগা জমি চাষকরি। কেউ কেউ ভ্যান-রিক্সা এবং অটো চালায়, আবারকেউ ক্ষুদ্র ব্যবসা করে। মহিলারা পারিবারিক ভাবে হাঁস মুরগীর চাষ করেন, কোন কোন বাড়ীতে গৃহবধু এবং যুবতীরা সেলাই মেশিনের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে।
স্বপ্নপুরী গ্রামের জাহিদুর রহমান মোল্লা, সাফায়েত হোসেন,খলিলুর রহমান,উকিল উদ্দীন মুন্সীসহ প্রতিটি পরিবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি এ গ্রামের সকল প্রকার উন্নয়নের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত