“ভবন জনবল ও ঔষধের তীব্র সংকট”

ফকিরহাটের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির বেহাল দশা

পি কে অলোক,ফকিরহাট

আপডেট : ০৬:৪৯ পিএম, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০১৯ | ১০০১

ফকিরহাট উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র বর্তমানে স্বাস্থ্য সেবা ভেংগে পড়েছে। অধিকাংশ ভবন জরাজীর্ন ও স্যাতস্যাতে। রয়েছে জনবল ও সরঞ্জামের অভাব। এছাড়া ঔষধ সংকট দিয়েই চলছে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। বিশেষ করে নিরাপদ মাতৃত্ব সেবাদান একেবারেই ভেংগে পড়েছে। জানা গেছে, ৮টি ইউনিয়নের ৯টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভেতর দুইটি রয়েছে মূলঘর ইউনিয়নে। এরমধ্যে একটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে পিলজংগ ইউনিয়নে।

সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, একমাত্র বেতাগা ইউনিয়ন ছাড়া অন্য কোন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নরমাল ডেলীভারী করা হয় না। প্রতিটি কেন্দ্র স্যাকমো ও এফডাব্লিউভি থাকলেও অনেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না হওয়ায় নরমাল ডেলিভারী হচ্ছেনা। তাছাড়া নেই স্বাস্থ্য সম্মত কক্ষ বা পরিবেশ। স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলো ২৪/৭ সেবার আওতায় থাকলেও তা সঠিকভাবে করা হয় না। এদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও উদাসীনতার কারনে দীর্ঘদিন যাবৎ ভবনগুলো সংস্কার না করায় বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। রয়েছে অবকাঠামো ও সরঞ্জামের অভাব। ঔষধ সংকট ও রয়েছে চরমে। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একজন মেডিকেল অফিসার থাকার নিয়ম থাকলেও এখানে কোন মেডিকেল অফিসারকে দেখা যায়না বলে স্থানীয়রা জানান।

মূলঘর গোদাড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাঃ মোঃ নওসের আলী (স্যাকমো) বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, যে কোন মুহুর্তে ঝুকিপূর্ন এই ভবনে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। বর্তমানে নানা সমস্যার কারনে চিকিৎসা সেবা দিতে ব্যহত হচ্ছে। এফডাব্লিউভি শিল্পি রানী অধিকারী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, তিনি সদ্য চাকুরীতে যোগদান করেছেন যে কারনে তিনি নরমান ডেলিভারী বিষয়ে অনভিজ্ঞ। তাছাড়া এখানে নরমাল ডেলিভারী করার মত পরিবেশ নেই।

অপরদিকে ফকিরহাট জাড়িয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাঃ মোঃ রবিউল ইসলাম (স্যাকমো) বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, বর্তমানে বিভিন্ন সমস্যার কারনে চিকিৎসা সেবা দিতে ব্যহত হচ্ছে। বিশেষ করে নরমাল ডেলিভারীর ক্ষেত্রে অধিকাংশ গর্ভবতী মায়েরা বিভিন্ন প্রাইভেট কিনিক সহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স মূখি হয়ে পড়েন। তাছাড়া ডিএসএফ কার্ড করার সুবিধার জন্য গর্ভবতী মায়েরা সরকারি হাসপাতালে যান।

এফডাব্লিউভি ফাতেমা জাহান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এখানে গর্ভবতী মায়েদের সাধারন চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে নরমাল ডেলিভারীর জন্য কেউ এখানে আসেন না। পাশাপাশি পিলজংগ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাঃ মোছাঃ মাফুজা শিরিন (স্যাকমো) ও এফডাব্লিউভি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, উক্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবনটি বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। বৃষ্টি হলেই ছাদের বিভিন্ন স্থান থেকে পানি পড়ে। ফলে স্বাভাবিক ডেলিভারীর কোন পরিবেশ এখানে নেই।

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ দিলদার হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আমাদের জনবলের ঘাটতি অনেকটায় পুরণ হয়েছে। স্বাস্থ্য সেবার মান আগের তুলনায় ভাল হয়েছে। ভবনের সংস্কারের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মেডিকেল অফিসার (মা ও শিশু) ডাঃ শাহরিয়া শামিম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গর্ভবতী নারীদের সাধারন চিকিৎসা দেয়া হয়। ৮টি ইউনিয়নে ৯টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান রয়েছে। অচিরেই সকল স্বাস্থ্য কেন্দ্রে স্বাভাবিক ডেলিভারীর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত