বাগেরহাটে কল্যান তহবিলের নামে চলছে চাঁদাবাজি

মামুন আহম্মেদ

আপডেট : ০৫:৫৯ পিএম, শুক্রবার, ১৭ মে ২০১৯ | ১৮৬৪

বাগেরহাটে ঈদকে সামনে রেখে ও কল্যান তহবিলের নামে পণ্যবাহী ট্রাকে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজি। এর ফলে স্থানীয় ট্রাক মালিকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও অসোন্তষ। তবে সড়কে ট্রাক থেকে চাঁদা তোলা শ্রমিক সংগঠনের দাবি এটি চাঁদাবাজি নয়, তারা শ্রমিকদের কল্যানের জন্য টাকা তুলছেন। অন্যদিকে ট্রাক মালিকদের দাবী শ্রমিকদের কল্যানে নেয়া এ চাঁদার বড় একটা অংশ যাচ্ছে শ্রমিক নেতাদের পকেটে।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বাগেরহাট মোংলা মহাসড়কের দ্বিগরাজ এলাকায় পৌরসভার ইজারাকৃত ট্রাকস্ট্যন্ডের বাইরে শ্রমিক সংগঠনের নামে চলছে চাঁদা আদায় এর কাজ। মোংলা পোর্ট পৌরসভার ইজারাকৃত ট্রাকস্ট্যান্ডের মাত্র দেড় কিলোমিটারের মধ্যে দুই দফায় টাকা দিতে হয়। যার কারনে বেড়ে যাচ্ছে পণ্য পরিবহণ খরচ। পৌরসভা ও শ্রমিক সংগঠণের নামে রশিদ দিয়ে টাকা নেওয়া হলে নিয়ম অনুযায়ী কারোই কোন মূল্য তালিকা নেই। ফলে ইচ্ছেমত ট্রাকের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আশা ট্রাকচালক ও সহকারীরা দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মোংলাতে এসে পড়ছেন বিপাকে।

এই বিষয়ে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারন সম্পাদক এসএ খালেক বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আমরা ট্রাক মালিকরা একপ্রকার শেষ হয়ে যাচ্ছি। রোডে বের হলে যে পরিমান চাঁদা দিতে হয় তাতে লাখ লাখ টাকা খরচ করে ট্রাক রোডে নামাতে আর ইচ্ছা করেনা। আমাদের এই অঞ্চলের ট্রাক ভাড়া বেশীর ভাগ মোংলা বন্দর কেন্দ্রীক সেখানে দি¦গরাজ এলাকায় পাশাপাশি দুটি টোল। একটি মোংলা পৌরসভার ট্রাকস্ট্যান্ড এর আর একটি খুলনা বিভাগীয় ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়নের দুটি টোলই পন্য পরিবহনে ভাড়ার সাথে জড়িত। এখানে টোল কম দেবেন তার ও কোন সুযোগ নেই। চাঁদা বা কথিত এ টোলের টাকার একটা অংশ যাচ্ছে বাগেরহাট, খুলনা ও বরিশালের নেতাদের পকেটে।



বাগেরহাট জেলা ট্রাক, কাভার ভ্যান, ট্যাংক ও লরী মালিক সমিতির কার্যকরি সভাপতি কাজী আবুল হাসান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ভাই ট্রাকে এখন আর ব্যাবসা নেই। কয়েকটি ট্রাক আমি বেছে দিছি। আর এহন যা আছে তা এ চাঁদা ও চাঁদা দিতে দিতে আর তলায় থাহেনা। চালাতাম একটু মোংলায় হে আনে এক যায়গায় দুই চাঁদা কই যাবেন সবতো আমাগো নেতারাই। খুলনাতো খায়ই আবার বাগেরহাট ও তাদের দখলে।

এবিষয়ে মোংলা পোর্ট পৌরমেয়র মো: জুলফিকার আলী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, পৌরসভার একটি টোল আছে যেটি ইজারা দেয়া হয়েছে। সরকারি যে মূল্য আছে এক তার থেকে বেশী ডাক উঠায় আমরা ইজারা দিয়ে দিয়েছি। এর বাইরে কোন টোল আদায় হয় কিনা তা আমার জানা নেই।

এবিষয়ে খুলনা বিভাগীয় ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহিম বস্ক দুদু বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এটাকে চাাঁদা বললে আমি মানবো না মোংলার দিগরাজে আমাদের ৮০জন শ্রমিক রাত দিন মিলে ট্রাক গুলো রক্ষনাবেক্ষন করে তাদের একটা মাসিক বেতন আছে। এর বাইরে সামান্য টাকা থাকে যা শ্রমিকদের কল্যানে ব্যায় করা হয়।

এবিষয়ে খুলনা বিভাগীয় ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী সরোয়ার হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, দিগরাজে কোন চাঁদাবাজি হয় না। বিভিন্ন সময় দূর্ঘটনায় ট্রাকের চালক বা শ্রমিকরা মারা গেলে মালিক পক্ষের কাছ থেকে সামান্য কিছু টাকা পয়সা দেয়া হয়। যা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ওই পরিবারটির কিছুই হয় না। এ কারনে ট্রাকের চালক ও শ্রমিকদের কল্যানে একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। যার অনুকুলে গাড়ী প্রতি ৫০ ও ১০০ টাকা করে রশিদের মাধ্যমে টাকা আদায় করা হয়। আর এ টাকা দিয়ে দূর্ঘটনায় নিহত পরিবারকে এককালিন ৫০হাজার টাকাসহ তাদের পরিবারের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া, চিকিৎসা ও বিয়ে শাদীতে সহযোগতিা করা হয়।

এছাড়া আহত ট্রাকের চালকসহ শ্রমিকদের চিকিৎসাসহ পরিবার গুলোকে আর্থিক ভাবে সহয়তা করা হয়। যেটাকে চাঁদাবাজি বলা যায় না। মাত্র ১০/১২ দিন আগে খুলনা সদর থানার মাধ্যমে আমাদের চাঁদা আদায়ের রশিদ পুলিশের আইজিপি মহোদয়ের কাছে আমরা পাঠিয়েছি পুলিশ বিভাগ চেয়েছে একারনে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত