যে কোন মূহুর্তে ঘটতে পারে চরম দূর্ঘটনা

চিতলমারীতে পুলিশ অফিসারসহ ১১ সদস্যর দিন কাটে আতংকে

এস এস সাগর, চিতলমারী

আপডেট : ০৬:০২ পিএম, শুক্রবার, ১৭ মে ২০১৯ | ৩৩৩৩

চিতলমারী উপজেলার ডুমুরিয়া ক্যাম্পে কর্মরত এক পুলিশ অফিসারসহ ১১ জন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যর এখন চরম আতংকের মধ্যে দিন কাটছে। বর্তমানে তাদের ক্যাম্প ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে। নিজেরা আতংকের মধ্যে থেকেও তারা জনসাধারনের জানমালের নিরাপত্তায় সর্বদা কাজ করে যাচ্ছেন। সামান্য ঝড়-বাতাস ও বৃষ্টিতে এ ক্যাম্পে যে কোন সময়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। শুক্রবার দুপুরে এমনটাই জানিয়েছেন ক্যাম্পের আশপাশের সাধারণ মানুষেরা।

চিতলমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নিজাম উদ্দিন শেখ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, ২০০০-২০০৩ সালের দিকে ৪ উপজেলার সীমান্তবর্তী ডুমুরিয়া এলাকায় চরমপন্থীরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এক সময়ের শান্ত-নিস্তরঙ্গ চিতলমারীর ওই এলাকা মৃতপূরীতে পরিণত হয়। সে সময় আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি হলে এলাকার সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তার কথা ভেবে ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি পুরাতন ভবনে পুলিশ ক্যাম্পটি করা হয়। সেই থেকে ওই ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা স্থানীয় মানুষের নিরাপত্তায় কাজ করে আসছেন। কিন্তু বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে তারা নিজেরাই চরম আতংকের মধ্যে রয়েছেন।

ক্যাম্পের টুআইসি এএসআই মাহাবুবুর রহমান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, জরাজীর্ণ দ্বিতল এ ভবণের পিলার গুলো একেবারে খয়ে গেছে। ছাঁদের পলেস্তরা ঝরে ঝরে মাথায় ও গায়ের উপর পড়ছে। ক্যাম্প ভবনের মধ্যে সার্বক্ষনিক সকলকে নিয়ে আতংকের মধ্যে থাকতে হয়। যে কোন সময় এখানে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে

চিতলমারী থানার পরিদর্শক (ওসি) অনুকুল সরকার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, ২০০৩ সাল থেকে একজন এএসআই ও ১০ জন আনসার-ব্যাটেলিয়ান সদস্য দিয়ে এ ক্যাম্প পরিচালিত হয়ে আসছে। বাগেরহাট সদর, ফকিরহাট, মোল্লাহাট ও চিতলমারীসহ ৪ টি থানার সীমান্তবর্তী স্থানে এ ক্যাম্প অবস্থিত। এ ক্যাম্পের অধীনে মোট জনসংখ্যা ২৬ হাজার ৯৪৫ জন। আয়াতন ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৬৮৮ একর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৬টি। এনজিও ৫টি। হাটবাজার ৩টি ও ২টি সরকারি অফিস রয়েছে। থানা হতে ক্যাম্পের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পুলিশ ক্যাম্প। সেদিক দিয়ে বিবেচনা করলে এখানে অতিদ্রুত একটি সরকারি ক্যাম্পভবন নির্মানের দরকার। বিষয়টি উপজেলা মাসিক আইন-শৃঙ্খলা সভাসহ উর্ধতন কর্তপক্ষকে একাধিকবার জানানো হয়েছে।

ওসি আরও জানান, গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে গত ০৯/০৮/২০১৮ ইং তারিখের সভায় এই ক্যাম্পকে তদন্ত কেন্দ্র করার প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে এবং ১৫/০৮/২০১৮ ইং তারিখ জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে আবেদন পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় কৃষক তাপস ভক্ত, বিমল মন্ডল, চা দোকানী মনোজ পাল, অনুপ বাড়ই ও ব্যবসায়ী কাকন সরদারসহ অনেকে বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, ঝালডাঙ্গা বাজারের পাশে অনেক জায়গা পড়ে আছে। ওখানে সরকারি ভাবে একটি ক্যাম্প ভবন করা হলে আতংক ও ঝুঁকি থাকবে না। ক্যাম্পটি না থাকলে ৪ থানার সীমান্তবর্তী এই এলাকায় আবার ও আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি দেখা দেবে বলেও তারা উল্লেখ করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত