যৌতুকের দাবিতে স্বামীর নির্যাতন

শরণখোলায় ৩ ঘন্টার ব্যবধানে দুই বোনের মৃত্যু

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ০৫:৪৩ পিএম, রোববার, ২৩ জুন ২০১৯ | ৬৬৩

মাত্র তিন ঘন্টার ব্যবধানে মারা গেল আপন দুই বোন। স্বামী নির্যাতনে বড় বোনের এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠে মারা যায় ছোট বোন। শনিবার দিনগত রাত ৪টার দিকে মারা যান অসুস্থ মেঘনা বেগম (২০)। যৌতুকের দাবিতে দফায় দফায় স্বামীর নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ মেঘনার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এঘটনায় স্বামীসহ চার জনের নামে শরণখোলা থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।


এদিকে, বড় বোনের মৃত্যুর খবর শুনে রবিবার সকাল ৭টার দিকে দেখতে আসা আত্মীয়-স্বজনদের জন্য ফ্যান চালাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয় তামান্না আক্তার (১২)। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। হৃদয়বিদারক এ ঘটনা ঘটেছে শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের উত্তর কদমতলা গ্রামে। নিহত তামান্না উত্তর কদমতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। নিহতরা ওই গ্রামের আলম খানের মেয়ে।

পুলিশ ও পারিবার সূত্রে জানা যায়, ১৪ মাস আগে উপজেলার মধ্য খোন্তাকাটা গ্রামের রহমান তালুকদারের ছেলে মৎস্যজীবী সেলিম তালুকদারের সঙ্গে আলম খানের বড় মেয়ে মেঘনার বিয়ে হয়। ফিশিং ট্রলার নির্মান করবে বলে সেই থেকে তিন লাখ টাকা যৌতকের দাবি করে মেঘনাকে শারিরীক নির্যাতন করতে থাকে স্বামী। একপর্যায় তার দেবররাও তাকে নির্যাতন শুরু করে। এতে মেঘনা মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে গত শুক্রবার (২১ জুন) মেঘনাকে শ্বশুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে তার বাবা খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসার পর শনিবার বাড়িতে আনার পর রাতে তার মৃত্যু হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শরণখোলা থানার উপ-পরিদর্মক এসএম আবুল বাশার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, মেঘনার বাবা আলম খান বাদি হয়ে স্বামী সেলিম তালুকদার, তার তিন বেদর ডালিম তালুকদার, নূরু তালুকদার, লোকমান তালুকদারসহ চার জনের নামে যৌতুকের দাবিতে মারপিট করে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। আসামীদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

অপরদিকে, শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. রিপন নাথ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত