সড়ক দোকানসহ ৩০০মিটার বাধ নদীতে বিলিন, মসজিদ কাম সাইকোন শেল্টারসহ ব্যাপক এলাকা ঝুঁকিতে

শরণখোলার পাউবোর বেড়িবাধে ফের ভয়াবহ ভাঙন

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ০৫:৪৬ পিএম, রোববার, ৭ জুলাই ২০১৯ | ৩৭১৫

শরণখোলার পানি উন্নয়ণ বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের সাউথখালী ইউনিয়নের গাবতলা বেড়িবাধে নতুন করে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। বলেশ্বর নদের প্রবল ঢেউয়ে গত দুদিনে গ্রামীণ ইটসলিং সড়ক ও কয়েকটি দোকানঘরসহ প্রায় ৩০০মিটার বেড়িভাধ নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙনের আশপাশে আরো প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভয়াবহ ফাঁটল ধরেছে।

এর দুই মাস আগে বগী এলাকার ৩-৪টি পয়েন্টের বাধ ভেঙে যায়। প্রায় পনের দিন ধরে বাধ ভাঙা পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি হয়। সেখানে রিং বাধ দিয়ে পানিরোধ করা হয়েছে।


স্থানীয়রা বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, ভাঙনে বাধ সংলগ্ন আশার আলো মসজিদ কাম সাইকোন শেল্টার ও ১৫-২০টি পরিবার মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। ভেঙে যাওয়া বাধ থেকে বলেশ্বর নদের জোয়ারের পানি শতাধিক বসতবাড়িতে ঢুকে পড়েছে। অর্ধশতাধিক পুকুর তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। ওইসব পরিবারে রান্নবান্না বন্ধ রয়েছে।

বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে শরণখোলায় প্রায় ৬৩ কিলোমিটার বেড়িবাধের টেকসই উন্নয়নের কাজ চলছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) উপকূলীয় বাধ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে চায়নার ‘সিএইচডব্লিউই’ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এই কাজ বাস্তবায়ন করছে। কাজ চলমান থাকার মধ্যেই ভাঙনের এমন ভয়াবহতা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী।

সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের ৬নম্বর দক্ষিণ সাউথখালী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জাকির হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, গত শনিবার সকালে হঠাৎ করে গাবতলা এলাকার ইটসলিং রাস্তা ও মোহাম্মদ খানের রেস্টুরেন্টসহ বেড়িবাধের প্রায় ২০০ মিটার নদীতে বিলিন হয়ে যায়। আজ রবিবার সকালেও ওই একইভাবে আরো প্রায় ১০০ মিটার বাধ ধসে পড়ে। এছাড়া বিশাল এলাকা জুড়ে ফাঁটল ধরেছে যা যে কোনো সময় ধসে পড়বে।


ওই ইউপি সদস্য আরো জানান, ভাঙনের হাত বাঁচতে বাধের পাশের বসতিরা এবং ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানপাট ও ঘরবাড়ি ভেঙে সরিয়ে নিচ্ছে। বাধসংলগ্ন আশার আলো মসজিদ কাম সাইকোন শেল্টার, বাধের পাশের বসতবাড়িগুলো ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ভাঙনের বিষয়টি উপকূলীয় বাধ উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইআইপি) দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকদের জানানো হলেও তারা এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাননি।

সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, গাবতলার ভাঙনের পরিস্থিতি খুবই ভয়ারবহ। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও সিইআইপি প্রকল্পের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ‘সিইআইপি’ প্রকল্পের খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলমের কাছে এব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, সোমবার সকাল থেকে ভাঙন এলাকায় রিংবাধের কাজ শুরু করা হবে। আগামী শুকনা মৌসুমে মূল বেড়িবাধের কাজ ধরা হবে। তাছাড়া, নদী শাসনের জন্য ১৩শ’ মিটারের একটি প্রস্তাবনা বিশ্ব ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে। তা বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত