১৪ বছর পর ফিরে পেলেন অধ্যক্ষের পদ, তবুও সংশয়

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা প্রতিনিধি

আপডেট : ০৩:৩৭ পিএম, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২০ | ৭৪৯

দীর্ঘ ১৪ বছর আইনি লড়াইয়ের পর চাকরী ফিরে পেলেন বাগেরহাটের শরণখোলার মাতৃভাষা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার।

তৎতকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে ২০০৭ সালে বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে যশোর শিক্ষা বোর্ডে আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে ২০১০ সালে স্ব-পদে বহালের নিদেশ দেন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

বোর্ডের ওই আদেশ বহাল রেখে গত ১৫ জানুয়ারি অধ্যক্ষের পক্ষে রায় প্রদান করেছেন হাইকোট।

বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার বাগেরহাট২৪কে বলেন, তিনি নিজে কলেজের জমিদাতা ও প্রতিষ্ঠাতা। তৎকালিন চারদলীয় জোট সরকারের জামায়াতের এমপি মুফতি মাওলানা আব্দুস সাত্তারের প্রবাব খাটিয়ে জামায়াত নেতা মাওলানা মতিউর রহমান মতিন মাতৃভাষা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা হওয়ার জন্য ২০০৩ সাল থেকে ষড়যন্ত্র করেন।

সেই থেকে মাওলানা মতিন বাদি হয়ে তার বিরুদ্ধে শিক্ষকদের টিউশন ফির ১৩ হাজার ৯২০টাকা, বিজ্ঞানাগারের যন্ত্রপাতি ক্রয়ের ৫০ হাজার টাকা ও হিন্দু তপশিল উপবৃত্তির এক হাজার ৪৪০ টাকা আত্মসাতসহ বাগেরহাট আদালতে ছয়টি দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা দায়ের করেন।

আদালতে অর্থ আত্মসাতের সবকটি মামলা মিথ্যা প্রমানিত হয়। এসব মামলার রায়ের প্রমানাদিসহ বোর্ডে আবেদন করলে বোর্ড তা যাচাই-বাছাই ও একাধিক তদন্তের পর ২০১০ সালের ১৭ ফেব্রুারি তাকে স্বপদে পুনর্বহালের আদেশ দিলে তাকে কলেজে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি। বাদি বোর্ডে ওই আদেশ এবং নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন।

আপিলের দীর্ঘ সুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারীর বোর্ডের আদেশ, ২০১৬ সালের ৩০নভেম্বর এবং ২০১৭সালের পাঁচ জানুয়ারি বাগেরহাট সাব জজের (১ম) রায় ও ডিক্রি বহাল রেখে হাইকোর্টের বিচারপতি আষিশ রঞ্জন দাসের একক বেঞ্চ অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামের পক্ষে রায় প্রদান করেন।

অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, ২০০৮ সালে জামায়াতিরা আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক ইস্তফাপত্র নিয়ে কলেজ থেকে বের করে দিয়েছে। ১৪বছর পর রায় পেয়েছি। কিন্তু এখনো আমার বিরুদ্ধে বাদি ও তার লোকজন ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। আমি যাতে কলেজে যোগদান করতে না পারি সেই অপচেষ্টা করছেন তারা।

এব্যাপারে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো ওলিয়ার রহমান বাগেরহাট২৪কে বলেন, নজরুল ইসলাম হাই কোর্টের রায় পেলে আমি তাকে স্বাগত জানাই। তার অনুপস্থিতিতে আমি দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। তিনি অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিলে আমার কোন সমস্যা নেই।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্তফা শাহিন বাগেরহাট২৪কে বলেন, এ বিষয়ে এখনো অফিসিয়ালি কাগজপত্র আসেনি। এলে অধ্যক্ষের যোগদানের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত