বাগেরহাটে দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে গ্রাম আদালত

স্টাফ রির্পোটার

আপডেট : ০৬:৩৪ পিএম, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২০ | ৭৮১

বাগেরহাটে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে গ্রাম আদালত। আদালত গুলোতে মামলার জট যেখানে বেড়েই চলেছে সেখানে প্রায় শতভাগ মামলা নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলার জট নিরসনে পথ দেখাচ্ছে গ্রাম আদালত।

আর উচ্চ আদালতে মামলার জট নিরসন, ছোটখাট দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিরোধ স্থানীয়ভাবে নিষ্পত্তি ও অল্প সময়ে স্বল্প খরচে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে বিচার প্রাপ্তিতে সুবিধা দিতেই ইউনিয়ন পর্যায়ে গ্রাম আদালত চালু করে সরকার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউএনডিপি ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সহযোগিতায় বাগেরহাটে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের অধীনে জেলার ৬টি (চিতলমারী,ফকিরহাট,কচুয়া, মোংলা, রামপাল ও শরণখোলা) উপজেলার ৪২টি ইউনিয়নে ২০১৭ সাল থেকে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

জেলার এ ৬টি উপজেলার ৪২টি ইউনিয়নে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত গ্রাম আদালতে মোট ৫হাজার ৩শ ৩১টি মামলা গ্রহন করা হয়েছে। যার মধ্যে ৩ হাজার ৮শ ৮৫টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষকে ৩ কোটি ৫০ লাখ ৭৮হাজার ৪শ ৩৫টাকা আদায় করে দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গ্রাম আদালত আইন ২০০৬ (২০১৩ সালে সংশোধিত) এবং গ্রাম আদালত বিধিমালা ২০১৬ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যমানের ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলা নিষ্পত্তি হয় গ্রাম আদালতে। নিজ নিজ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং আবেদনকারী ও প্রতিবাদকারী মনোনিত ২জন করে ৪ জন প্রতিনিধিসহ ৫ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত হয় এ আদালত। গ্রাম আদালত গঠিত হওয়ার পর ১৫ দিনের মধ্যে সভা আহবান করা হয়। সভায় আবেদনকারী ও প্রতিবাদকারী উভয় পক্ষের মধ্যে আপসের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয় আদালত।

এতে বিরোধ নিষ্পত্তি না হলে বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করে তা নিষ্পত্তি করা হয়। অল্প খরচে, স্বল্প সময়ে এবং সহজে মামলা নিষ্পত্তির সুযোগ থাকায় দিনে দিনে ভরসা বাড়ছে এ আদালতে। আর এর ফলে জেলার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জনসাধারনের মাঝে দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে গ্রাম আদালত। এই মামলা করতে নাম মাত্র ফ্রি দিতে হয় বিচার প্রত্যাশিদের। সর্বোচ্চ ১শ ২০দিনের মধ্যে এই মামলা সমাধান করা হয়।

বাগেরহাট স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক দেব প্রসাদ পাল বাগেরহাট২৪কে বলেন, সরকারি সেবা মানুষের দুয়ারে পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন, গ্রাম আদালত তার একটি। সাধারন মানুষ এখন আর ছোট-খাটো বিরোধ নিয়ে উচ্চ আদালতে না গিয়ে তারা গ্রাম আদালতে বিচার চাইছে। এর মাধ্যমে গ্রামের লোকজন তার এলাকাতেই নিজেদের মধ্যে দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিরোধ নিষ্পত্তির সুযোগ পাচ্ছেন। এ কারণে গ্রাম আদালতকে সক্রিয় এবং কার্যকর রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, দেশের উচ্চ আদালত গুলোতে যেখানে একটি মামলা বছরের পর বছর পড়ে থাকছে, সেখানে গ্রাম আদালতে অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। আশা করি মামলার জট নিরসনে গ্রাম আদালত অন্যদের পথ দেখাবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত