জাহাজের পন্য ওঠানামা বন্ধ

করোনা সন্দেহে মোংলা বন্দরে ৩ নাবিক গভীর পর্যবেক্ষনে

মোংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ০৫:২৮ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ ২০২০ | ১০১৫

করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সন্দেহে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত একটি বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজের তিন নাবিককে গভীর পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। এ তিন নাবিকের ওপর শারিরীক অবস্থার নজরদারী করছেন পোট হেলথের স্বাস্থ্য কর্মীরা।

বৃহস্পতিবার সকালের পালা থেকে ওই জাহাজের পন্য খালাস-বোঝাই বন্ধ করে দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া জাহাজের অন্য কোন লোক যাতে উঠতে না পারে এবং সেখানে যাওয়ারও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

বন্দর স্বাস্থ বিভাগ সুত্রে জানায়, মার্সেল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী এমভি সেরিনোটাজ এন নামকের এ জাহাজটি ২৪ হাজার মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে বুধবার রাতে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের হারবাড়িয়ায় নোঙ্গর করে। এ সময় স্বাস্থ্য কর্মীরা নাবিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গেলে ফিলিপাইনের নাগরিক ৩ নাবিককে গুরুত্বর অসুস্থ্য দেখতে পায়।

এ সময় ভয়ে আতংকে দ্রুত জাহাজ থেকে নেমে পড়েন এজেন্ট ও কাষ্টমস প্রতিনিধি সহ বাংলাদেশী শ্রমিকরা। অসুস্থ্য তিন বিদেশী নাবিক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সন্দেহ করছেন বন্দরের স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাই আপাতত জাহাজটির পণ্য খালাস বন্ধ রাখা এবং দেশীয় কোন শ্রমিক সহ সংশ্লিষ্টদের যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়ছে বলে জানিয়েছেন মোংলা পোর্ট হেলথের মেডিকেল অফিসার ডাঃ সুফয়া বেগম। তবে আপাতত আতংকিত হওয়ার কিছু নেই বলেও জানান তিনি।

এদিকে বিদেশী জাহাজটির স্থানীয় এজেন্ট ইউনিট মেরিটাইম লিমিটিটের অপারেশন কর্মকর্তা বদিউজ্জামান টিটু বাগেরহাট২৪কে জানান, এ জাহাজটিতে ২০ জন বিদেশী নাবিকের মধ্যে ক্যাপ্টেন গ্রীক আর বাকী ১৯ জন ফিলিপাইনের নাগরিক রয়েছেন। তিনি আরও জানান, জাহাজটি ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা বোঝাই করে। পরে সিঙ্গাপুর হতে জ্বালানী তেল সংগ্রহ করে প্রথমে বাংলাদেশের চট্রগ্রাম বন্দরে ভেড়ে জাহাজটি।

সেখানে বেশ কয়েকদিন অবস্থান ও আশিংক কয়লা খালাস শেষ করেই গত সোমবার চট্রগ্রাম বন্দর থেকে মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। বুধবার রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ এ জাহাজটি নোঙ্গর করে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের হারবাড়িয়া বহিঃনোঙ্গরের ৪ নং বয়ায়। বর্তমানে একই স্থানে পণ্য বোঝাই এ জাহাজটি অবস্থান করলেও খালাস কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা পেলেই জাহাজে শ্রমিকরা যাবেন এবং পন্য খালাসের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানান জাহাজ সংশ্লিষ্টরা।

বুধবার রাতে আক্রান্ত ক্রুদের চিকিৎসা প্রধানকারী ডাক্তার ফয়সাল ইসলাম বাগেরহাট২৪কে জানান, আক্রান্ত রোগীরা ঠিক করোনা ভাইরাসের শিকার হয়েছেন কিনা তা আরো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সঠিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তিনি বাগেরহাট২৪কে বলেন, এ নিয়ে মোংলায় নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। এ গুজবে কান না দেওয়ার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান। তবে তিনি নিরাপত্তার স্বার্থে আক্রান্ত ওই তিন ক্রুর নাম জানাতে চাননি।

এদিকে বৃহস্পতিবার দিনে ওই জাহাজের আক্রান্ত ক্রুদের পুনরায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন ডা.মোঃ সামির আসিফ। তিনি বাগেরহাট২৪কে জানান, আক্রান্ত তিন জনের মধ্যে দু’জনের অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলেও অপর জনের অবস্থার অবনতি ঘটেছে। এ ক্ষেত্রে তারা উর্ধতন মহলের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছে। জাহাজটি ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা বোঝাই করে প্রথমে সিঙ্গাপুরে আসে। পরে সেখান থেকে চট্রগ্রাম বন্দর হয়ে মোংলা বন্দরে এসে বুধবার রাতে নঙ্গর করে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত