‘সব কিছুতে করোনার প্রভাব, তবুও কমছে না কিস্তি’র চাপ!’

চিতলমারী প্রতিনিধি

আপডেট : ০৭:০৭ পিএম, রোববার, ২২ মার্চ ২০২০ | ১২১৯

‘বিশ্বের সব কিছুতেই পড়েছে করোনার প্রভাব। তবুও কমছে না কিস্তির চাপ। সারাদিনে কোন বেচাকেনা নেই। কি খাব, কি করে বাঁচব এ নিয়েই ভাবি সারক্ষণ। তারপরও মরার উপর খাড়ার ঘা। ব্যাংক, এনজিও’র ও সুদ কারবারিদের দেনার চাপ। রোববার দুপুরে এমনটাই জানালেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সদর বাজারের পুস্তক ব্যবসায়ী তাওহিদুর রহমান।

তিনি আরও জানান, সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সবাই যখন সোচ্চার। সরকার যেখানে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। সেখানে বহাল তবিয়াতে চলছে ব্যাংক, এনজিও ও সুদে কারবারিদের কিস্তি আদায়। করোনা ভাইরাসের প্রভাবের পর থেকে চিতলমারীতে নিত্যপ্রয়োজনী পণ্য ছাড়া অন্য সব কিছুর বেচা কেনা এক প্রকার বন্ধ হয়ে গেছে। তারপর থেমে নেই কর্মীদের কিস্তি আদায়।

এ উপজেলায় সাতটি ব্যাংক, ২০-২৫ এনজিও এবং ১০০ টির কাছাকাছি সমবায় সমিতি রয়েছে। বাজারের প্রতিটি ব্যবসায়ী কমপক্ষে ৪-৬টি এনজিও’র ঋণের জালে জড়িত। তাই বর্তমানে কিস্তির চাপে ব্যবসায়ী ও সাধারন মানুষেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সরকারের এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

একই বাজারের চায়ের দোকানদার বিশ্ব মন্ডল (৪৫)। পাঁচ সদস্যর পরিবার তার। চা বিক্রির পরই তাদের জীবন ও জীবিকা নির্ভর। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে এখন আর তেমন চা বিক্রি হচ্ছে না। কি খেয়ে বাঁচবেন তা নিয়েই তিনি দিশেহারা। তবুও রয়েছে কিস্তির চাপ।
বিশ্ব মন্ডল বাগেরহাট২৪কে বলেন, এনজিও ব্র্যাকে তার লোন নেওয়া ১৫ হাজার, সপ্তাহে কিস্তি ৪৫০ টাকা, গ্রামীণ ব্যাংকের ৩০ হাজারের কিস্তি এক হাজার ৫০০ টাকা, সিএসয়ের ৪০ হাজারের কিস্তি এক হাজার ২০০ টাকা, জাগরণী চক্রের ৩০ হাজারের এক হাজার, কোডেকের ৫০ হাজারে এক হাজার ও এসডিএফয়ের ২০ হাজারে সপ্তাহে ৫০০ টাকা করে কিস্তি দিতে হয়। গড়ে প্রতিদিন তার কোন না কোন এনজিওর কিস্তির তাড়া থাকে। এ অবস্থায় তিনি কিস্তির চাপে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছেন।

বাজারের ফল বিক্রেতা ফারুক বিশ্বাস, কাপড় ব্যবসায়ী অমিত সাহা, টিটন সাহা, মুরগি বিক্রেতা মিজান শেখ জানালেন একই কথা। তাই তারা এই মুহুর্তে দেশের ঋণদানকারী সকল ব্যাংক, এনজিও, সমিতি ও সুদে কারবারিদের কিস্তি ও সুদের টাকা বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

এ ব্যপারে কয়েকটি এনজিও ও ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে নাম না প্রকাশ করার শর্তে তারাবাগেরহাট২৪কে বলেন, এখনও উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কোন নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশনা পেলে কিস্তি আদায় বন্ধ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত