ঘূর্নিঝড় আম্পানের প্রভাবে বাগেরহাটে বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া 

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০৩:১৩ পিএম, মঙ্গলবার, ১৯ মে ২০২০ | ৫২৯

ঘূর্নিঝড় আম্পানের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাট জুড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। শুধু বৃষ্টি নয় কোথাও কোথাও বৃষ্টি সাথে ঝড়ো হাওয়া বইছে। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বৃষ্টি শুরু হয়। শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়া বইছে। বাগেরহাটের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করেছে।

সকাল থেকে রোদ থাকলেও হঠাৎ বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে মানুষ দিকবিদিক ছোঠাছুটি করছে। মাঠের পাকা ধান ও বাড়ির ওঠোনে শুকানোর জন্য রাখা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক পরিবারগুলো। শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলা উপজেলার ঘূর্নিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র গুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। সতর্ক সংকেতে ভয়াবহ বার্তা পরিবেশন করায় উপকূলবাসীর মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। মাটি, ছন ও টিনের ঘরের বাসিন্দাদের দুশ্চিন্তা সব থেকে বেশি।


কচুয়া উপজেলার রকি শেখ বলেন, ভোরে সূর্য দেখে ধান সিদ্দ করেছিলাম। সাড়ে সাতটা নাগাদ রোধ ওঠায় সিদ্দ ধান ওঠোনে রোদে দিয়েছিলাম।রোধের মধ্যেই দুপুরের দিকে বৃষ্টি শুরু হল। তরিঘরি করে সব ধান ঘরে ওঠাতে পারিনি। কিছু ধান ভিজে গেছে। এছাড়াও অনেক কৃষক শ্রমিক নিয়ে ধান কাটছিল মাঠে। এই বৃষ্টিতে মাঠে ধান কাটা কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল।


শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আছাদুজ্জামান মিলন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, দুপুর থেকেই আমাদের এখানে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়া বইছে। আমরা স্থানীয়দের ঘূর্নিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলেছি। ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রতিবন্ধি ও বৃদ্ধদের আমরা স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়েছি। সতর্কতা মূলক মাইকিং চলছে।

কচুয়া সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শিকদার হাদিউজ্জামান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, সকাল থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাবার জন্য মাইকিং করছি। মেম্বর, চৌকিদারদের মাধ্যমে গ্রামের মানুষদের সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিতে বলা হচ্ছে।

কচুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুজিৎ দেবনাথ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, উপজেলার ৫০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া ব্যাক্তিদের জরুরী খাদ্য সহায়তার প্রস্তুতিও রয়েছে।

কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) শেখ সফিকুর রহমান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, দুর্যোগে আইনশৃংখলা যাতে অবনতি না হয় এছাড়া দুর্যোগে পড়া মানুষদের সহায়তার জন্য পুলিশ সদা প্রস্তুত রয়েছে।


বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ঘূর্নিঝড় আম্পান মোকাবেলায় আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। ৪১০টি ঘূর্নিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি সুবিধাজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমরা ঘূর্নিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে হিসেবে ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছি। এই নিয়ে আমাদের মোট ৯৭৭ আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ৭ লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। সার্বিক যোগাযোগ রক্ষার জন্য ১০ টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ৮৪ মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজনীয় শুকনো খাবারের ব্যবস্থা রেখেছি আমরা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত