করোনা পরিস্থিতি উপেক্ষা করে

মোরেলগঞ্জে গোপনে করনীক নিয়োগের চেষ্টা

মেহেদী হাসান লিপন,মশিউর রহমান মাসুম, মোরেলগঞ্জ

আপডেট : ০৪:৩৭ পিএম, শনিবার, ৬ জুন ২০২০ | ৯৭০

মোরেলগঞ্জে করোনা মহামারির নির্জনতাকে কাজে লাগিয়ে গোপনে একটি বিদ্যালয়ে করনীক কাম কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জিউধরা ইউনিয়নের হাজ্বী রাজাউল্লাহ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে এ সংক্রান্তে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলামের চাকুরির বয়স এবং চলতি কমিটির মেয়াদও শেষ হচ্ছে আগামি সপ্তাহে। অর্থাৎ বর্তমান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখে। ওই সময়ের মধ্যেই পছন্দের ব্যাক্তি টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে করোনায় স্কুল বন্ধ থাকা অবস্থায় গত ১১মে পত্রিকায় করনীক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন তারা।

কোন লোক ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সম্মন্ধে জানতে পারেনি। কথা উঠেছে, বিদালয়ের কর্মজীবন শেষের পূর্ব মুহুর্তে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম ও সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বাদশা ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে হারুন হাওলাদারের ছেলে শামীমকে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনায় কাগজপত্র তৈরী করে ছুটছেন পাগলা ঘোড়ার গতিতে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ইতোপূর্বেও বিদ্যালয়টিতে ৪/৫টি নিয়োগ দিয়ে উন্নয়ন তহবিলের নামে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ৩০/৩৫ লাখ টাকা। সেসব টাকা বিদ্যালয়ের উন্নয়নের নামে চলে গেছে দু’চার জনের পকেটে। করনীক পদে চাকুরী দেওয়ার জন্য ২০১৫ সালে আল মামুন হাওলাদার নামে এক ব্যাক্তির নিকট থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে তাকে চাকুরি দেওয়া হয়নি। টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি।

স্থানীয় অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য আবুল কালাম আজাদ, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার, আব্দুর রহমান খান, ইব্রাহিম শেখ, রেজাউল ইসলামসহ একাধিক অভিভাবক ক্ষোভের সাথে বলেন, ইতোপূর্বে এ বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক, সহকারি শিক্ষক, লাইব্রেরিয়ানসহ ৫টি পদে নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাত বদল করে অযোগ্য ব্যক্তিদেরকে নিয়োগ দিয়েছেন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক।

বিদ্যালয়ের উন্নয়নের নামে টাকাগুলো নেওয়া হলেও কোন উন্নয়ন হয়নি। ব্যাক্তির ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে এ নিয়োগগুলো থেকে। স্থানীয়দের দাবি, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যোগ্য ব্যাক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হোক করনীক পদে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বাদশা বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, ইতোপূর্বে যেসব নিয়োগ হয়েছে তা মেধাতালিকার ভিত্তিতেই হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে নয়। এবারে অফিস সহকারি পদেও নিয়ম অনুযায়ী মেধাতালিকার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম খান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, একটি মহল অনৈতিক প্রক্রিয়ায় সুবিধা গ্রহনে ব্যার্থ হয়ে বিভিন্ন দপ্তরে মনগড়া অভিযোগ দিয়েছে। পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পরেও করোনার কারনে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রচারের জন্য এ নিয়োগের বিষয়ে মাইকিং ও করা হয়েছে। স্বচ্ছতার সাথেই সবকিছু করা হচ্ছে।

এ সর্ম্পকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা শিক্ষা অফিসার বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত