বলেশ্বরে জেলেদের ইলিশ লুট

সুন্দরবনের সুপতি কোস্টগার্ডের দুই সদস্য প্রত্যাহার

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ০৬:১১ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই ২০২০ | ৮৬৯

বাগেরহাটের শরণখোলার বলেশ্বর নদে জেলে নৌকা থেকে ইলিশ লুটের অভিযোগে পূর্ব সুন্দরবনের সুপতি কোস্টগার্ডের দুই সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। অভিযুক্ত কোস্টগার্ড সদস্য মো. কাওছার ও মো. ইব্রাহিমকে বুধবার পশ্চিম জোনের মোংলা সদর দপ্তরে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। কোস্ট গার্ড সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

কোস্টগার্ডে ওই দুই সদস্য টহলের নামে গত মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত বলেশ্বর নদের বিভিন্ন পয়েন্টে মাছ ধরারত জেলে নৌকায় হানা দিয়ে শতাধিক ইলিশ তুলে নেয়। এসময় তারা জেলেদের মারধর ও চাঁদা দাবি করে। তাদের হাতে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানি গ্রামের আলম হাওলাদারের ছেলে এমাদুল হক হাওলাদার (৪০) নামের এক জেলে গুরুতর আহত হন। তিনি পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ঘটনার পরেরদিন সকালে জেলেরা মাছ লুটের বিষয়টি বন বিভাগ ও কোষ্টগার্র্ড পশ্চিম জোনের মোংলা কর্মকর্তাদের জানান। পরে মোংলা সদর দপ্তর থেকে কোস্টগার্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একটি দল ঘটনাস্থল শরণখোলা রেঞ্জের সুপতি কন্টিনজেন্ট অফিসে যান। তখন জেলেদের কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা শুনে সত্যতা পাওয়ার পর লুটের ইলিশ জেলেদের ফেরত দেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত জেলে এমাদুল হক বৃহস্পতিবার (৯জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে মুঠোফোনে বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, কোস্টগার্ডের ওই দুই সদস্য তার মাছ ধরা ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে টহল দেয়ার কথা বলে বলেশ্বর নদীতে যান। এসময় তারা পাথরঘাটা দক্ষিণ চরদুয়ানি গ্রামের খলিল শিকদারের ছেলে রুবেল শিকদারের নৌকা থেকে ৮০টি, লতিফ খানের ছেলে বাবুল খানের নৌকা থেকে পাঁচটি, বেলায়েত খানের ছেলে রনি খানের নৌকা থেকে ১১টি, চাঁন মিয়া খানের ছেলে রুবেল খানের নৌকা থেকে পাঁচটি, হামেজ ঘরামীর ছেলে সোহরাব ঘরামীর নৌকা থেকে পাঁচটিসহ মোট ১০৬টি ইলিশ জোরপূর্বক নিয়ে যায়। এসময় আলতাফ আকনের ছেলে আব্বাসের নৌকায় মাছ না পেয়ে ফের নদীতে এলে তাকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলে কোস্টগর্ডের ওই দুই সদস্য।

এমাদুল হক আরো জানান, ঘটনাটি ফাঁস করে দেওয়ায় তাকে বেধরক মেরে আহত করা হয়েছে। এছাড়া জেলেদের নৌকা প্রতি পাঁজ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দাবি করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগী জেলেরা মুঠোফোনে জানিয়েছেন।

পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, মাছ লুটের ঘটনাটি বুধবার সকালে জ্ঞানপাড়া ও চাঁন্দেশ্বর টহল ফাঁড়ির বনরক্ষীদের কাছে জানায় জেলেরা। পরে ওই দুই টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও জেলেদের মহাজনরা মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানিয়েছেন তাকে।


এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া বিভাগের এক কর্মকর্তা বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়ায় জড়িত দুই সদস্যকে সুপতি কন্টিনজেন্ট থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। বিস্তারিত জানতে এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত