বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০৭:১৭ পিএম, শনিবার, ১৫ আগস্ট ২০২০ | ৪৭৯

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা অভায়রণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালামের বিরুদ্ধে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৪ আগস্ট) রাত ১০ টার দিকে নির্যাতনের শিকার ওই কিশোর ইমাম হোসেনকে বাগেরহাটের শরনখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

নির্যাতনের শিকার কিশোর ইমাম হোসেন শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, ৮ আগষ্ট সুন্দরবনের পাস-পারমিট নিয়ে ইলিশ আহরনকারী গ্রামবাসী ও স্বজনদের সাথে সাগরে যায় সোনাতলা গ্রামের ১০ জন। এদের সাথে কিশোর ইমাম হোসেনও ছিল। অবৈধ ভাবে অভয়ারন্য এলাকায় প্রবেশের দায়ে ওই ১০জনকে আটক করে বন বিভাগ। পরে ১০ আগষ্ট কিশোর ইমাম হোসেন ছাড়া অন্য ৯ জেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের পূর্বক আদালতে সোপর্দ করে বন বিভাগ। কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম কিশোর ইমাম হোসেনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর না করে আবার বনে নিয়ে যায়। সেখানে আটকে রেখে খাবার না দিয়ে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে চারদিন পর ১৪ আগষ্ট রাত সাড়ে আটটায় শরনখোলা রেঞ্জ অফিসে কিশোর ইমাম হোসেনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে বন বিভাগ।

কিশোর ইমাম হোসেনের মা মেহেরুন নেছা বেগম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, যখন জানতে পারি বন বিভাগ আমার ছেলেকে আটক করেছে। পরে খোজ নিয়ে জানি যে কটকার ওসি সাহেবের কাছে আমার ছেলে আছে। আমি ওসি সাহেবকে ফোন দেই আমি ফোন দিলে বলে তুমি এসে কটকা থেকে তোমার ছেলেকে নিয়ে যাও। তখন আমি বলি মহিলা মানুষ, কিভাবে কটকায় আসব। শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদিন স্যারকে ফোন করলে তিনিও আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। পরে আটকে রেখে মারধর ও নির্যাতন করে শরণখোলা রেঞ্জ অফিসে ফেরত দিয়ে গেছে। সেখান থেকে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আমরা পরিবারের লোকেরা যেয়ে আমার ছেলেকে নিয়ে আসি। রাতে বাড়িতে নিয়ে আসার পরেই আমার ছেলে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। আমরা রাতেই আমার ছেলেকে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। আমার ছেলেকে নির্যাতনের বিচার চাই।

শরনখোলা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক আরিফুল ইসলাম রাকিব বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলছেন, কিশোর ইমামের শরীরে আঘাতের চিহৃ নেই। কিন্তু সে মানষিক ভাবে ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় রয়েছে। আমরা তাকে আরও কিছু পরীক্ষা নিরিক্ষা দিয়েছি। আমরা তাকে প্রোপার চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছি। ৪৮ ঘন্টা না যাওয়া পর্যন্ত কিশোরের শারীরিক অবস্থার বিষয় তেমন কিছু বলা যাচ্ছে না।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এ বিষয়ে আমরা কিশোরের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ পাইনি। তবে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক আমাকে জানিয়েছেন পরিবারের লোক না পাওয়ার কারণে চারদিন পরে সকলের উপস্থিতে ইমাম হোসেন নামের একটি শিশুকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে শরণখোলা রেঞ্জের কটকা অভায়রণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালামের (০১৯৭০-৩৭০৩৩৯ এবং ০১৫৩৮-১৭৭৫৩৯) নম্বরে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

পূর্ব সুন্দরবন বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন. স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ সকলের উপস্থিতিতে ছেলেটিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নির্যাতনের বিষয়টি সঠিক নয়। যেসব জেলেদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে তারা এসব অত্যাচার নির্যাতনের নাটক সাজিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত