সুন্দরবনে দুই জেলেকে অপহরণ

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে মুক্তিপণের দাবিতে দুই জেলেকে অপহরণ করেছে বনদস্যু ছোট্ট বাহিনী। রবিবার ভোর ৫টার দিকে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের আড়–য়াবয়া এলাকা থেকে ওই জেলেদের অপহরণ করা হয়। দুই জেলের মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করেছে বলে মৎস্য ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে।

অপহৃতরা হলেন, শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের উত্তর রাজাপুর গ্রামের মোফাজ্জেল আকনের ছেলে সুমন আকন (৩০) ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামের মুজাহার ফকিরের ছেলে সেলিম ফকির (৩৫)।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মৎস্য ব্যবসায়ী জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর উত্তর রাজাপুর এলাকার জেলেরা ধানসাগর ফরেষ্ট স্টেশন থেকে এক সপ্তাহের পাস (অনুমতিপত্র) নিয়ে সুন্দরবনে মাছ ধরতে যান। পাসের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ১০-১২টি নৌকার একটি বহর মাছ নিয়ে লোকালয়ে ফিরছিলো। নৌকাগুলো আড়–য়াবয়া খাল অতিক্রম করার সময় ছোট্ট বাহিনীর ৭-৮ জন সশস্ত্র দস্যু বহর থেকে পিছিয়ে পড়া দুটি নৌকায় হানা দিয়ে সুমন ও সেলিম নামের ওই জেলেকে তুলে নিয়ে যায়। এসময় দস্যুরা ওই জেলেদের ছাড়িয়ে নিতে হলে দুই লাখ টাকা লাগবে বলে নৌকায় থাকা সঙ্গী জেলেদের জানিয়ে দেয়।

নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের ১নম্বর বৌদ্দমারী ওয়ার্ডের বাদামতলা গ্রামের বাসিন্দা সাহেব আলী শেখের ছেলে বনদস্যু ইয়াছিন শেখ ৫-৬ মাস আগে ছ্ট্টো বাহিনী নামে একটি বনদস্যু দল গঠন করে। তার দলে তারই এলাকার হায়দার আলী, রিয়াজ, মোশারেফসহ ৭-৮ জন সদস্য রয়েছে। তারা সম্প্রতি সুন্দরবনে কয়েক দফা জেলেবহরে হানা দিয়ে অপহরণ, জেলেদের নির্যাতন ও লুটতরাজ চালিয়ে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছে। ইতিমধ্যে ওই দস্যু বাহিনী বনের পেশাজীবীদের কাছে মুর্তিমান আতঙ্ক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এই বাহিনীকে দমনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দাবি জানিয়েছে।

চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) মো. হুমায়ুন কবির জেলে অপহরণের খবর নিশ্চিত করে বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, স্টেশন এলাকায় তাদের টহল জোরদার করা হয়েছে।

কোস্টগার্ড মোংলা পশ্চিম জোনের অপারেশন অফিসার লেফটেন্যান্ট এম.এইচ.আই সিদ্দিকী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, অপহরণের খবর পেয়ে পূর্ব সুন্দরবনের আড়–য়াবয়া, আন্ধারমানিক ও বৌদ্দমারী এলাকায় কোস্টগার্ডের অভিযান শুরু হয়েছে। জিম্মি জেলেদের উদ্ধারে চেষ্টা চলছে।