চিতলমারীতে লাল তীরের বীজ লাগিয়ে সর্বশান্ত ৬ শতাধিক কৃষক

চিতলমারী প্রতিনিধি

আপডেট : ০৯:৩৪ পিএম, শনিবার, ১৪ আগস্ট ২০২১ | ১৯৬২

চিতলমারীতে লাল তীর সীড লিমিটেডের ১০৭০ জাতের বরবটি বীজ রোপণ করে ৬ শতাধিক কৃষক সর্বশান্ত হয়েছেন। ফলনের নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও গাছে কোন ফুল ও ফল ধরেনি। কৃষকরা নিরুপায় হয়ে বরবটি গাছগুলো কেটে ফেলছেন। শ্রমের সাথে সাথে তাঁদের ধারদেনা করে আনা হাজার হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। এ নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই কোম্পানিটির কর্মকর্তাদের। এমনটাই জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তা ক্ষতিগ্রস্ত ৬ শতাধিক কৃষকের তালিকা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন।

উপজেলার খড়মখালী গ্রামের বরবটি চাষি অম্বরিশ মন্ডল, কুরমনি গ্রামের দেবাশিষ বিশ্বাস ও সবজি চাষি বীর মুক্তিযোদ্ধা মনি মোহন হীরা বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, প্রতি কেজি বীজ ক্রয় করতে হয়েছে ১৪০০ টাকায়। এক কেজি বীজ লাগাতে ও ফলন আসা পর্যন্ত বিঘা প্রতি খরচ হয় প্রায় ৩০-৪০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে বিঘা প্রতি বরবটি বিক্রি হওয়ার কথা ছিল ৭০-৮০ হাজার টাকা। কিন্তু রোপনের তিন মাস অতিবাহিত হলেও গাছে ফুল ও ফল কোনোটিই হয়নি। নিরুপায় হয়ে জমির গাছগুলো কেটে ফেলছি। তাই আমরা বরবটি চাষিরা সর্বশান্ত হয়ে গেছি। এখন কোম্পানির লোকজনও আমাদের সাথে ভাল ব্যাবহার করছে না এবং কোন খোঁজ নিচ্ছে না।


চিতলমারী উপজেলা সদর বাজারের লাল তীর সীড লিমিটেড কোম্পানির পরিবেশক মেসার্স বাবুগঞ্জ এন্টার প্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী তপন কুমার ও মেসার্স নাহিদ বীজ ভান্ডারের মালিক মোঃ নাহিদ বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, এ বছর লাল তীর সীড লিমিটেডের ১০৭০ জাতের বরবটি বীজ রোপণ করে কৃষকেরা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা বিষয়টি কোম্পানীর অফিসারদের জানিয়েছি। তারা বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।


লাল তীর সীড লিমিটেডের মার্কেটিং অফিসার সাইফুল ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, কৃষকরা অভিযোগ করেছেন বরবটি গাছে ফুল ও ফল ধরছে না। ঘটনাটি আমি আমাদের উপর মহলে জানিয়েছি।


লাল তীর সীড লিমিটেডের বিভাগীয় কর্মকর্তা ফখরুদ্দীন আহম্মেদ সুমন বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, আবহাওয়াজনিত কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। বিষয়টি নিয়ে আমরা গবেষণা করছি।


লাল তীর সীড লিমিটেডের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, যে কৃষকেরা আগে ভাগে এটি লাগিয়েছেন তাদের কিছু সমস্যা হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। কি কারণে এমনটি হয়েছে।


এ বিষয়ে চিতলমারী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা অসীম কুমার দাশ বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, এ বছর এ উপজেলায় লাল তীর সীড লিমিটেডের ১০৭০ জাতের বরবটি বীজ রোপণ করে কমপক্ষে ৬ শতাধিক কৃষক সর্বশান্ত হয়েছেন। আমরা কোম্পানীর কর্মকর্তাদের ডেকেছি তারা আমাদের ডাকে কোন সাড়া দেননি। এ ঘটনায় আমি ক্ষতিগ্রস্ত ৬ শতাধিক কৃষকের তালিকা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত