মোংলায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় 

সরকারী ব্রিজের নাম ফলক ভাংচুর, ১১ জনের নামে অভিযোগ

মোংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ০৮:৪৮ পিএম, শুক্রবার, ১ জুলাই ২০২২ | ৩৭৮

নির্বাচনী প্রতিহিংসা মুলক প্রতিশোধ নিতে একটি নির্মানাধীন ব্রিজের নাম ফলক ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে একদল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। এটি করেও ক্ষান্ত নয় তারা, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সহ বিভিন্ন অবৈধ কার্যকলাপের সাথে লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ।

এছাড়াও আসামীরা বাংলাদেশ সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে সরকারি প্রকল্পের কাজে বাধা বিঘœ সহ নতুন নির্মানাধীন স্থাপনাও ভাংচুর করছে। মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড বাঁশতলা মোছাল্লী পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এব্যাপারে মোংলা থানায় ১১ জনের নামের এজাহার দাখিল হওয়া নিয়ে শুক্রবার বিকাল থেকে দুই গ্রæপের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

থানায় দেয়া এজাহার সুত্রে জানা যায়, সুন্দরবন ইউনিয়নের বাঁশতলা মোছাল্লী পাড়া সংলগ্ন একটি খালে ব্রিজ না থাকায় দীর্ঘদিন থেকে ওই এলাকার প্রায় ৮/১০ গ্রামের মানুষ চলাচল করতে বিঘœ হচ্ছিল। খালটিতে সাকো বা ব্রিজ না থাকায় অনেক সময় সাতড়ে পার হতে হয় ওখানকার সাধারন জনগণ ও স্কুলগামী কোমলমতি শিশু-কিশোরদের। স্কুল পড়–য়া ছাত্র/ছাত্রী ও ২০ থেকে ২৫ হাজার লোকের চলাচলে সমস্যার কথা চিন্তা করে এর সমাধানে ইউনিয়ন উন্নয়ন সহায়তা তহবিল থেকে একটি প্রকল্প হাতে নেয় বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান একরাম ইজারাদার। তাই বর্ষা মৌশুম আসার আগেই দ্রæত এ ব্রিজটির কাজ শেষ করার জন্য তাগিদ দেয় ইউপি চেয়ারম্যান।


গত ৩০ জুন এ ব্রিজটির কাজ শেষ হলে এটি উদ্বোধনের প্রস্তুতি গ্রহন করে ওই ব্রিজের নাম ফলক স্থাপন করা হয়। কিন্ত ওই এলাকার একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রæপ রয়েছে যারা প্রতিনিয়ত এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ত্রাস সৃস্টি ও নিরীহ লোকজনের সাথে অহেতুক মারামারী, ঘের দখল, ঘের লুট ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় থানায় দেয়া এজাহার ভুক্ত আসামীরা তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী সহ বাংলাদেশ সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যে বাঁশতলা মোছাল্লী পাড়া নাজমুলের দোকানের সামনে সরকারি অর্থায়নে তৈরী ব্রীজের নাম ফলক প্লেট হাতুরী দিয়ে ভেঙ্গে ফেলে এবং সকল আসামীরা সরকারের বিরুদ্ধে বাজে মন্তব্য করে গালাগালি ও চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকে বলে অভিযোগ উঠে।

এসময় সুন্দরবন ইউপি চেয়ারম্যান একরাম ইজারাদার সহ দলীয় শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের উদ্দেশ্য করে গালাগালি করে ওই সকল সন্ত্রাসীরা বলে স্থানীয় অনেকে অভিযোগ করে।


এসময় স্থানীয়রা বিষয়টি দেখে এগিয়ে আসলে তাদের জীবন নাশের হুমকি দিয়ে রাতের অন্ধকারে দ্রæত তারা পালিয়ে যায় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।


এ ব্যাপারে ওই প্রকল্পের সভাপতি সংরক্ষিত ১,২,৩ নং মহিলা ইউপি সদস্য জোসনা বেগম বাদি হয়ে মোছাল্লী পাড়া এলাকার মৃত আমির আলী মোছাল্লীর ছেলে মোঃ মিজান মোছাল্লী ও মোঃ আফজাল মোছাল্লী, মোঃ হুজ্জত মোছাল্লীর ছেলে মোঃ সুমন মোছাল্লী, বারেক মোছাল্লীর ছেলে মোঃ হাবিব মোছাল্লী, মোঃ আফজাল মোছাল্লীর ছেলে মোঃ রাজু মোছাল্লী ও বুড়বুড়িয়া এলাকার মোঃ মমিন উদ্দিন শিকারীর ছেলে মোঃ কালাম শিকারী। এছাড়াও তাদের সাথে আরো অজ্ঞাত নামা ৪/৫ জন সহ থানায় এজাহার দাখিল করা হয়েছে।


এজাহার ভুক্ত সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ আফজাল মোছাল্লী বলেন, এলাকায় উন্নয়ন মুলক কাজ হউক এটা আমরা চাই এবং সব সময় এর সহায়তা করে আসছি। কিন্ত রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মুলক নিজেরা একটি ঘটনা সাজিয়ে অহেতুক আমাদের হয়রানী করা হচ্ছে বলে জানায় তিনি।


মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবন ইউনিয়নের বাঁশতলা মুছল্লী পাড়া এলাকায় একটি ব্রিজের নাম ফলক ভাংচুরের খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এনিয়ে সন্ধ্যায় একটি এজাহার দাখিল হয়েছে। সকালে পুলিশের আরো একটি দল তদন্তে পাঠানো হবে এবং দোষিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত