বাঁধ নির্মানের দাবি

প্রতি জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে খানজাহান আলী আশ্রয়ন প্রকল্প

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০১:২৯ এএম, সোমবার, ১৮ জুলাই ২০২২ | ৩৮৫

পাঁচদিন ধরে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে বাগেরহাট শহরের ভৈরব নদের তীরে মাঝিডাঙ্গা এলাকায় গড়ে ওঠা খানজাহান আলী আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকা। জোয়ারের পানিতে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের জীবন-যাপন। প্রতিদিন দুপুরে এবং মাঝ রাতে দুই বারের পানিতে ঘর-বাড়ি ভাসছে তাদের। পানিতে রান্না-বান্না বন্ধ রাখতে হচ্ছে অনেকের। বছরের আষাঢ়, শ্রাবন ও ভাদ্র তিন মাসই জোয়ারের পানির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয় তাদের। চরমে ভোগান্তিতে পড়তে হয় অসুস্থ্য, বয়স্ক ও শিশুদের। সমস্যা সমাধানের টেকসই বাঁধ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ওই এলাকার ২৫০টি পরিবার।


১৯৯৭ সালে তৈরি খানজাহান আলী আশ্রয়ন প্রকল্পের ব্যারাকে ৬০টি ভূমিহীন পরিবার বসবাস করেন। এছাড়া আশ্রয়ন কেন্দ্রের আশে পাশে আরও ২০০ পরিবার বসবাস করে। সবার একটাই দাবি স্থায়ী ও উচু বেরিবাঁধ স্থাপনের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা।

আশ্রয়ন কেন্দ্রের বাসিন্দা তোফাজ্জেল শেখ বলেন, নদের পাড় জুড়ে মাত্র ৫০০ মিটার বাঁধের অভাবে আশ্রয়ণ ও স্থানীয়দের প্রতিবছর জোয়ারে ডুবতে হয়। পানির স্রোতে ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে যাওয়ার পাশাপাশি, সুপেয় পানিরও সংকট দেখা দেয় আমাদের এখানে।


১৭ বছর ধরে আশ্রয়নের ঘরে বাস করা দোকানী মোসা শেখ বলেন, প্রতিবছর-ই জোয়ারের পানিতে আমাদের ডুবতে হয়। বিশেষ করে আষাঢ়-শ্রাবন মাসে হাটু সমান পানি উঠে যায় সব জায়গায়। স্থানীয়রা মিলে যে বাঁধ দিই, তা পানির চাপ বাড়লেই ভেঙ্গে যায়। অনেকেই এসে দেখে, ছবি তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু কোনো কাজ হয় না।

স্থানীয় সোহরাব হোসেন রতন বলেন, আমরা ত্রাণ বা খাদ্য সহায়তা চাই না। আমাদের বাচার জন্য টেকসই বেরিবাঁধ চাই। জনপ্রতিনিধি ও সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, অতি দ্রুত যেন একটি বাঁধ নির্মাণ করে দেওয়া হয়।


স্থানীয় ভ্যান চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, পানি উঠে গেলে আমাদের কাজ-কর্ম বন্ধ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে বাড়িতেই বসে থাকতে হয়। জানিনা কবে এই ভোগান্তির শেষ হবে।

বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, প্লাবিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। জোয়ারের পানি বাড়লে রাস্তা টপকে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। ইতমধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাথে রাস্তার বিষয়ে কথা বলেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে বেড়িবাঁধের বিষয়ে কথা হয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান করতে পারব।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, পূর্ণিমার প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের সময় সকল নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে মাঝিডাঙ্গা আশ্রয়ন ও পার্শ্ববর্তী এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। মূলত বেড়িবাঁধ না থাকার কারণে জোয়ারের পানি সহজে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা চিহ্নিত করে জোয়ারের পানি আটকানোর জন্য প্রকল্প প্রস্তাবনা দেওয়া হবে। প্রকল্প অনুমোদন হলে দ্রুত কাজ শুরু করব।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত