ভ্যাকসিন সংকটে খামারিরা,মারা যাচ্ছে শত শত হাঁস-মুরগী

মেহেদী হাসান লিপন,মোরেলগঞ্জ

আপডেট : ১০:৩৪ পিএম, মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট ২০২২ | ৩৫৩

মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল ভ্যাকসিন সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে খামারিরা। প্রতিনিয়ত চাহিদা অনুযায়ী হাঁস-মুরগির ভ্যাকসিন না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যেতে হচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জের সাধারণ মানুষকে। এতে করে বিভিন্ন রোগে মারা যাচ্ছে শত শত হাঁস-মুরগী সহ অন্যান্য পশু-পাখি।


উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় রেজিষ্ট্রেশনভুক্ত খামার সংখ্যা রয়েছে ৩ হাজার ৬’শ ৬৭টি। এর মধ্যে হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে ২৬০টি । বিসিআরডিভি ভ্যাকসিন (বাচ্চা মুরগি রানীক্ষেত) ও আরডিবি (বড় মুরগি রানীক্ষেত) ভ্যাকসিনের প্রতিটি সরকারি মূল্য তালিকায় দাম রয়েছে ১৫ টাকা। চাহিদা রয়েছে প্রতিমাসে ৫ শতাধিক। সেখানে বরাদ্দ পাচ্ছেন ১শ’। ডাকপ্লেক ভ্যাকসিন সরকারি মূল্যে ৩০ টাকা। মাসে চাহিদা রয়েছে দুইশ’ । সেখানে পাচ্ছেন ১শ’। হাঁস মুরগির কলেরা ভ্যাকসিন মূল্য ৩০ টাকা । মাসে চাহিদা রয়েছে ১শ’। সেখানে দুই মাসেও মিলছে না ৫০টি।


এ ভ্যাকসিন বিতরণ করছেন অফিসের একজন এ আই ফিল্ড এ্যাসিট্য্যান্ড (কৃত্রিম প্রজনন) মো. আলি আকবর । তিনি এ ভ্যাকসিন সরবরাহের অফিসিয়াল দায়িত্ব না থেকেও দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্বরত উপ-সহকারি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ফিরোজ আলী খানের এ দায়িত্ব থাকলেও তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের কারনে এ আই ফিল্ড এ্যাসিট্য্যান্ডকে এ দায়িত্ব পালন করতে হয়।

উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন সহ একটি পৌরসভায় প্রায় ৫ লক্ষ মানুষের বসবাস এখানে। প্রতিনিয়ত গবাদিপশু হাঁস-মুরগি, গরু ছাগল, মহিষ সহ গৃহপালিত পশুপাখি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পরছে। রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সরকারিভাবে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর থেকে ভ্যাকসিন সরবরাহের ব্যবস্থা থাকলেও চাহিদা অনুযায়ী সাধারণ মানুষসহ খামারিরা পাচ্ছেন না এ ভ্যাকসিন। প্রতিদিন এ নিয়ে গ্রাহকদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ পাচ্ছেন না। বিসিআরডিভি ভ্যাকসিনের চাহিদা রয়েছে মাসে পাঁচশত সেখানে পাচ্ছেন একশত। ডাকপ্লেগ ভ্যাকসিন চাহিদা মাসে দুইশত থাকলেও সেখানে পাচ্ছেন একশত। কলেরা ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে দু’মাসে গিয়ে পাচ্ছেন ৫০টি।

ভ্যাকসিন নিতে আসা মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের নুর আলী শিকদার, বারইখালী আলী আকবর শেখ, সুতালড়ি গ্রামের মর্জিনা বেগম, ভাইজোড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম, দেবরাজ গ্রামের আলমগীর হোসেন সহ একাধিক সুবিধাবঞ্চিতরা বলেন, মুরগির ভ্যাকসিন একের অধিক চাইলেই চোখ রাঙ্গানো দেখতে হয় অফিসারদের। অনেক বাকবিতন্ডা করে দিনের পর দিন ঘুরেও প্রয়োজনীয় চাহিদা অনুযায়ী ভ্যাকসিন পাচ্ছিনা। যার কারনে প্রতিদিন নানা রোগে মারা যাছে হাঁ-মুরগী।


উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সঞ্চয় বিশ্বাস জানান, এ উপজেলায় চাহিদা অনুযায়ী হাঁস মুরগির ভ্যাকসিনের সংকট লাঘবের জন্য ইতোমধ্যে জেলা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। চলতি বছরের চাহিদার তালিকায় বেশী বরাদ্দের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত