শেষের পথে বাগেরহাটে শিকদার বাড়ীর দূর্গামন্দিরের প্রতিমা তৈরীর কাজ : চলছে রং আর তুলির কাজ

শেখ আনিছুর রহমান

আপডেট : ০৯:৩০ পিএম, শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ৭৫০

বাগেরহাট সদর উপজেলার হাকিমপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিকদার বাড়ীর দূর্গা মন্দিরের প্রতিমা তৈরীর কাজ এগিয়ে চলেছে। চারজন কারিগর দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ করে এখন চলছে রং আর তুলির কাজ। অন্যান্য বছরের মত বিপুল সংখ্যাক প্রতিমা এবার তৈরী করা না হলেও আলোক ও সাজ-সজ্জা থাকবে পূর্বের মত। করোনা মহা-মারির চতুর্থ ঢেউ এখনোও বিরাজমান রয়েছে। তাছাড়া ৬ বছর থেকে ১২ বছর পর্যন্ত কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা না দেওয়ায় এবার বিপুল সংখ্যাক প্রতিমা তৈরী না করে স্বল্প পরিসরে দুর্গা পূজা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পূজা আয়োজকবৃন্দ।

জানা গেছে, বিশিষ্ট শিল্পপতি সমাজসেবক লিটন শিকদার এর স্বর্গীয় পিতা দুলাল কৃষ্ণ শিকদার ২০১১সালে সর্বপ্রথম ১৫০টি প্রতিমা নির্মাণ করে দূর্গা পূজা শুরু করেন। পরবর্তি বছর ধাপে ধাপে সেই প্রতিমার সংখ্যা বৃদ্ধি করে ২০১৮সালে ৭০১টি প্রতিমা নির্মাণ করেন। যা দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে দক্ষিন এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ পূজা মন্দির হিসাবে পরিচিতি অর্জন করে। ২০১৯সালে তার পিতা দুলাল কৃষ্ণ শিকদার পরলোকগমন করায় শিল্পপতি লিটন শিকদার ও তার সহধর্মিনী পূজা শিকদার পিতার সম্মানে ১৫০টি বাড়িয়ে মোট ৮৫১টি প্রতিমা নির্মাণ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেশ সাড়া জাগে। সেই হতে বাগেরহাটের হাকিমপুর শিকদার বাড়ীর দূর্গা পূজা ইতিহাস ও ঐতিহ্যের একটি মাইল ফলক হিসাবে বিরাজমান। এখানে বিগত বছর গুলিতে শতশত প্রতিমা তৈরী করে সত্য ত্রেতা দ্বাপর ও কলি যুগের বিভিন্ন অবতার এবং দেব-দেবীদের নানা কাহিনী তুলে ধরে সনাতন ধর্মের মানুষ-কে ধর্মের প্রতি আরো আকৃষ্ট করা হতো। প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্তবৃন্দরা দূর্গা মন্দিরে মায়ের দর্শণ পাওয়ার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে এই মন্দিরে উপস্থিত হতেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারনে শিল্পপতি লিটন শিকদার ও তার সহধর্মিনী পূজা শিকদার স্বল্প পরিসরে এই দুর্গা পূজা করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। সে মোতাবেক ২০২০ ও ২০২১সালে মূল প্রতিমা তৈরী করে একপ্রকার স্বল্প পরিসরে দূর্গা মায়ের পূজা করেছেন। তবে এবার মূল প্রতিমার বাইরে আরো প্রায় ১০/১২টি প্রতিমা তৈরী করা হচ্ছে। যা দৃষ্টি নন্দন ও আর্কষনীয় হচ্ছে বটে।

প্রতিমা তৈরীর কারিগর (ভাস্কর) খুলনার কয়রার বিজয় কৃষ্ণ বাছাড় এর নেতৃত্বে তপন কুমার মন্ডল, সাধন কুমার বাছাড়, তৃদ্বীপ সানা জানান, বৈশাখ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে তারা দূর্গা মন্দিরে প্রতিমা তৈরীর কাজ শুরু করেছেন। এখন প্রতিমা তৈরীর কাজ প্রায় শেষের পথে চলছে রং আর তুলির কাজ। অতিদ্রুত প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ করা হবে বলেও তারা জানান। বিজয় কৃষ্ণ বাছাড় আরো জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এবার হয়তোবা বেশি সংখ্যাক প্রতিমা তৈরী করা হবে না। তবে দেবাদেব মহাদেব, রাধা-কৃষ্ণ, মহা কালি, লক্ষি-নারায়ন ও শনি ঠাকুরের প্রতিমা তৈরী করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে অনেকাংশ কাজ শেষ করা হবে। আগামী ১লা অক্টোবর ষষ্টি পূজার মধ্যদিয়ে দুর্গোৎসব পালিত হবে।


এব্যাপারে মুঠো ফোনে বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক লিটন শিকদার ও তার সহধর্মিনী পূজা শিকদার বলেন, করোনা মহামারির চতুর্থ ঢেউ এখনোও বিরাজমান রয়েছে। তাছাড়া ৬ বছর থেকে ১২ বছর পর্যন্ত কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা এই অঞ্চলে এখনো করোনার টিকা পায় নাই। তাই এবারও আমরা স্বল্প পরিসরে দূর্গা মায়ের পূজা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীতে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আবারও পূর্বের ন্যায় বেশি সংখ্যাক প্রতিমা নির্মাণ করে দূর্গা মায়ের পূজা অর্চনা করবেন বলেও তাঁরা আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত