পূন্য স্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হল দুবলার চরের রাস পূজা

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ১২:৪৬ এএম, মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩ | ৩৮৫

বঙ্গোপসাগরের নোনা জলে পূন্য স্নানের মধ্য দিয়ে সুন্দরবনের দুবলার চরের রাস পূজা শেষ হয়েছে। সোমবার (২৭ নভেম্বর) সকালে পূন্য স্নান করেন পূন্যার্থীরা। কয়েক ঘন্টার স্নান ও পূজা আর্চনার পরেই এবারের মিলন মেলা শেষ হয়। এর আগে শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুবলার চরে রাস পূজা শুরু হয়। পূণ্য স্নানের সময় পূন্যার্থীরা মনোবাসনা পূরণের জন্য দোয়া করেন। সাগর পাড়ের বালুতে বসে তারা শ্রষ্ঠার আরাধনা করেন। এসময় ডাবসহ বিভিন্ন ফল এবং লোকালয় থেকে নেওয়া কিছু ফুল ভোগ হিসেবে দিয়ে থাকেন ভক্তরা। এবারের রাস উৎসবে ২৫ হাজারের বেশি সনাতন ধর্মালম্বী পূন্যার্থী অংশগ্রহন করেছেন বলে জানিয়েছেন রাস পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বসু সন্তু।


তিনি বলেন, খুবই শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব শেষ হয়েছে। পূন্যার্থীরা নির্বিঘ্নে পূজা আর্চনা ও পূন্য স্নান করেছেন। পূন্যস্নান শেষে সকাল ৯টার পরেই পূন্যার্থীদের নিয়ে আমরা রওনা দিয়েছি। আশাকরি সবাই নিরাপদে বাড়ি পৌছাবেন। তবে ভক্ত ও পূন্যার্থীদের দাবি ছিল পূজার পাশাপাশি পূর্বের ন্যায় কবিগান, শাস্ত্রীয় গান ও ধর্মীয় আলোচনার ব্যবস্থা থাকলে রাস পূজাটি আরও ভাল হত।


রাস পূজায় অংশগ্রহনকারী অর্নব তালুকদার বলেন, প্রথমবার রাসে এসেছি। খুবই ভাল লেগেছে। তবে একটু কবিগান ও শাস্ত্রীয় গানের ব্যবস্থা থাকলে খুব ভাল হত।


খুলনার রুপসা এলাকার কাকলী দেবনাথ বলেন, লঞ্চে যাত্রা ও থাকায় কিছুটা কষ্ট হলেও, সার্বিক ব্যবস্থা ছিল খুব ভাল। আমাদের খুব ভাল লেগেছে। পূন্য স্নান করে ঠাকুরের কাছে মনের কথা বলেছি। আবারও আসার ইচ্ছে আছে এখানে।


সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নূরুল করিম বলেন, রাস পূজা উপলক্ষে বন বিভাগের টহল জোরদার করা হয়েছিল। সবকিছু সঠিকভাবেই হয়েছে। কোন রকম অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটেনি।


রাস উৎসবের ইতিহাসঃ

দুবলার চরের রাস উৎসব প্রাচীন ইতিহাস নিয়ে নানা মত প্রচলিত আছে। জানা গেছে, ঠাকুর হরিচাঁদের অনুসারী হরি ভজন নামে এক হিন্দু সাধু মেলার শুরু করেছিলেন ১৯২৩ সালে। এই সাধু চব্বিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে সুন্দরবনে গাছের ফল-মূল খেয়ে জীবন ধারণ করেছেন। আবার কারো কারো মতে, শারদীয় দুর্গোৎসবের পর পূর্ণিমার রাতে বৃন্দাবনবাসী গোপীদের সঙ্গে রাস নৃত্যে মেতেছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অবতার শ্রীকৃষ্ণ। এটিকে স্মরণ করেই দুবলায় আয়োজিত হয়ে আসছে রাস উৎসব। অনেকে এটাও মনে করেন, শ্রীকৃষ্ণ কোনো এক পূর্ণিমা তিথিতে পাপ মোচন ও পুণ্যলাভে গঙ্গাস্নানের স্বপ্নাদেশ পান। তার স্বপ্নাদেশকে সম্মান জানাতে বসে রাসমেলা। বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা সদর থেকে সুন্দরবনের দূবলার চরের দূরত্ব প্রায় ৮৫ কিলোমিটার।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত