ওএমএস’র আতপ চাল নিয়ে

মোরেলগঞ্জে ডিলাররা বিপাকে

মেহেদী হাসান লিপন, মোরেলগঞ্জ

আপডেট : ০৪:৪৯ পিএম, সোমবার, ৯ অক্টোবর ২০১৭ | ২৩০১

খোলা বাজারে চাল বিক্রি

মোরেলগঞ্জ পৌর সদরের আতপ চাল নিয়ে বিপাকে পড়েছে ওএমএস ডিলাররা। ক্রেতারা আতপ চাল নিতে নিরুসাহিত হওয়ায় এ অবস্থায় পড়েছে ডিলাররা। বিশেষ করে এ অঞ্চলের অধিকাংশ লোক মোটা সিদ্ধ চালে অভ্যস্ত হওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।


উপজেলার পৌর সদরে তিনটি স্থানে খোলা বাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) শুরু হয়েছে। তবে আতপ চালের প্রতি আগ্রহ নেই ক্রেতাদের। তাই এসব ওএমএস ডিলারদের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায় না। ওএমএস ডিলাররা বলছেন, জনগণের চাহিদা সিদ্ধ চাল। কিন্তু সরকার আতপ চাল বরাদ্ধ দেয়ায় ক্রেতারা চাল কিনতে আসছেন না। এমন অবস্থায় চাল বিক্রি করতে না পেরে তারা চরম বিপাকে পড়েছেন।


জানা যায়, সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে খোলা বাজারে চাল বিক্রির নিদের্শনা থাকলেও ডিলারদের লাইসেন্স নবায়ন না থাকায় এ উপজেলায় ৪ অক্টোবর থেকে তিনজন ডিলারের মাধ্যমে চাল বিক্রি শুরু করে খাদ্য অধিদপ্তর।


শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন পৌর শহরের বারইখালী, সানকিভাঙ্গা ও ছোলমবাড়ীয়ায় তিনটি কেন্দ্রে তিন মেট্রিক টন চাল ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। তবে সরকারের সরবারহকৃত আতপ চাল কেনার প্রতি অনিহা প্রকাশ করছে সাধারণ ক্রেতারা।


চাল কিনতে আসা ছোবাহান মিয়া, রফিক হোসেন ও কহিনুর বেগম বলেছেন, আয় স্বল্পতার কারণে অনেকটা বাধ্য হয়েই আতপ চাল কিনছেন তারা। সিদ্ধ চাল খেতে অভ্যস্ত এ অঞ্চলের মানুষ। সরকারের প্রতি আতপ চালের পরিবর্তে সিদ্ধ চাল সরবরাহের দাবি জানান তারা। ওএমএস ডিলার মো. মোস্তফা শেখ, নিজামুল ইসলাম ও জসিম উদ্দিন বলেন, একটি পৌরসভা আর ১৬ ইউনিয়নে প্রায় ৪ ল মানুষের এ উপজেলার শতভাগ মানুষ সিদ্ধ চাল খেতে অভ্যস্ত। তাই ক্রেতাদের আতপ চালের প্রতি অনিহা রয়েছে। তারা জানান, খাদ্য গুদাম থেকে প্রতি কেজি সাড়ে ২৮ টাকা দরে চাল ক্রয় করে ৩০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। এর মধ্যে রয়েছে দোকান ভাড়া আর লেবার খরচ। অথচ গত পাঁচদিন আগের সংগ্রহ করা এক মেট্রিক টন চালের অর্ধেকটাও বিক্রি করতে পারেননি তারা। এভাবে চলতে থাকলে চাল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।


এদিকে, খোলা বাজারে ৩০ টাকা দরে চাল বিক্রি শুরু হলেও এ উপজেলায় তার প্রভাব পড়েনি একটুও। পাইকারী ব্যবসায়ীরা কেজি প্রতি ৩ থেকে ৪ টাকা কমার কথা জানালেও খুচরা বাজারে চালের দাম আগের মতোই চড়া। পৌর বাজারের খুচরা চাল ব্যবসায়ী সঞ্জীব কুমার সাহা বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানিয়েছেন, সোমবার খুচরা বাজারে আটাশ চাল প্রতি কেজি ৫২ টাকা, স্বর্ণা প্রতি কেজি ৪৫ টাকা, মোটা হিরা প্রতি কেজি ৪২ টাকা, মিনিকেট প্রতি কেজি ৫৫ টাকা এবং বাসমতি প্রতি কেজি ৭০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।


উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা এ.কে.এম শহিদুল হক বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, সিদ্ধ চাল খেতে অভ্যস্ত এ উপজেলার মানুষ। আতপ চালের পরিবর্তে সিদ্ধ চাল সরবরাহের জন্য ইতোমধ্যেই মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত