বন্দরে নিয়োগ জালিয়াতি

মোংলায় ৩১২ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দুদকে তলব

শেখ আহসানুল করিম

আপডেট : ০৭:৩৯ পিএম, শুক্রবার, ৩ আগস্ট ২০১৮ | ১০২৭

মোংলা বন্দরে জাল সার্টিফিকেট, কোঠা ও বয়সসীমা জালিয়াতি করে চাকরী নেয়ায় ৩১২জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তলব করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কিভাবে তারা অনিয়ম করে চাকরী নিয়েছে সে ব্যাপারে তদন্তে নেমে এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দুদক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করার ঘটনায় মোংলা বন্দরের অফিসে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে অনিয়ম করে মোংলা বন্দরের বিভিন্ন পদে কয়েক’শ লোককে চাকুরী পাইয়ে দেন বন্দরের কর্মচারীদের সিবিএ নেতারা।

খুলনার দুর্নীতি দমন কমিশনের ডিডি নীল কমল পাল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, বিগত ২০১৩ ও ১৪ সালে মোংলা বন্দরে নিয়োগ পাওয়া ৩১২ জন কর্মকর্তা- কর্মচারীর অধিকাংশের বিরুদ্ধে অযোগ্যতার অভিযোগ উঠায় চলতি বছরের গত মাসে দু’দফায় ২৮ জনকে তলব করা হয়। বৃহস্পতিবার আরও ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যেসব ব্যাক্তি জাল সার্টিফিকেট, কোঠা ও বয়সসীমা জালিয়াতি করে যারা মোংলা বন্দরে চাকরীতে নিয়োগ নিয়েছেন, তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে ডাকা শুরু হয়েছে। দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের এ বিষয়ে তদন্ত করছেন। বিষয়টি দুদক তদন্ত করে দেখছে।

দুদকের কাছে অভিযোগ রয়েছে, মোংলা বন্দরের বিভিন্ন কর্মকর্তা -কর্মচারী পদসহ নিজস্ব ১৯টি জনযানে জাল সার্টিফিকেট, কোঠা ও বয়সসীমা জালিয়াতি করে চাকরী নেয়ায় ৩১২জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এসব জলযানের মধ্যে রয়েছে এম এল গাংচিল, এম টি শিবসা, এ টি সারথী-২, বি এল ভি মালঞ্চ, এম এল ঝিনুক, এম এল উষা, এম টি সারথী-১, এম ভি রুহী, এম এল রাজহংস, এম ভি তৃসনা, এফ এফ টি অগ্নি প্রহরী, এম এল ময়ীরপঙ্খী, এম এল বলাকা, এম এল পান্না, এম এল হীরা, এম এল মতি, এম এল অনুসন্ধানী, এম এল উর্মি, ও এম এল মুক্তার যান্ত্রিক ও তড়িৎ বিভাগের ক্রেন হেলপারসহ বিভিন্ন পদের নব্বই শতাংশ কর্মচারীই জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছেন।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জলযান এম টি সারথী-২ এর ভান্ডারী ফজলুল হক, এম টি মেঘদূতের হাবিবুর রহমান এবং সারোয়ার মুন্সির বিরুদ্ধে জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরী নেওয়া জানতে চাইলে তারা বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের সিবিএ’র সংগঠনের নেতা পল্টু ও সাকিব সাহেবকে জিজ্ঞাসা করেন, তারাই আমাদের হয়ে কথা বলবেন, আমরা কিছুই বলতে পারবো না। সারোয়ার মুন্সি মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্মচারী সংঘ’র যুগ্ম সম্পাদক মতিউর রহমান সাকিবের ভগ্নিপতি। সাকিবের বিরুদ্ধে তার ছোট ভাই মহসিন হোসেন বাদশাকে জন্ম সনদ জাল করে বয়স কমিয়ে সিনিয়র আউটডোর এ্যাসিসটেন্ট হিসেবে মোংলা বন্দরে চাকরী পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

তবে সিবিএ নেতা পল্টু ও সাকিব এসব অভিযোগ অস্বিকার করে বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ মিথ্যা,বানোয়াট ও ভূয়া। তারা বন্দরের নিয়োগ কমিটিকে স্বাভাবিক কাজ করতে সহযোগিতা করেন বলে দাবী করে বলেন, বন্দরে ২০১৩ ও ১৪ সালে যারা নিয়োগ পেয়েছেন দুদক তাদেরকে ডেকে শুধু-শুধু হয়রানি করছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত