বনবিভাগের রেষ্টহাউজ ও লঞ্চে

মংলায় চলছে “দেহ ব্যবসা”

মংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ০২:৪৭ পিএম, মঙ্গলবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ৪৪৮২

মংলায় পুর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ফুয়েল জেটিতে থাকা “বাঘ রক্ষী-১” নামে নিজস্ব লঞ্চ ও রেষ্ট হাউজে বিভিন্ন নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসার ঘটনা ফাঁস হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এ ব্যবসায় খোদ বনবিভাগের কর্মচারীরা জড়িত থাকায় লজ্জা ঢাকতে বিভিন্ন ভাবে ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন বনকর্তারা। কর্মচারীদের চাকরী বাঁচাতে দায়সারা তদন্ত করছেন বলেও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের এক বি এম (বোটম্যান) জানান, “বাঘ রক্ষী-১” নামে বনবিভাগের নিজস্ব নৌ-যান (লঞ্চ) রবিবার (৯ সেপ্টেম্বর) ওই লঞ্চেরই লস্কর মোঃ চাঁন মিয়া চান্দু, বিভাগীয় বনকর্মকর্তার (ডিএফও)’র স্পীড বোট ড্রাইভার মনিরুজ্জামান বদি, ফুয়েল জেটি রেষ্ট হাউজের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন, আরেক বোটের ড্রাইভার আবু ইউসুফ তপুকে খুলনার পাইগাছা উপজেলার একটি যুবতী মেয়েকে স্থানীয় জনতা হাতেনাতে আটক করে গনধোলাই দেয়। এদিকে ওই বোটম্যানেরই দেয়া খবরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকরা গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। এদিকে এঘটনায় পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহমুদুল হাসানের নির্দেশে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) শাহীন কবির সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজমিন তদন্ত করেন।


জানতে চাইলে এবিষয়ে শাহীন কবির বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন আজ মঙ্গলবার বিভগীয় বনকর্মকর্তার কাছে দেয়া হবে। পরবর্তীতে তিনিই এর আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।


তবে এ বিষয়ে চাঁদপাই রেঞ্জের ষ্টেশন কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম “আপত্তিকর এ ঘটনার সংবাদটি না করতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন। তিনি আরো বলেন, লজ্জাজনক এ ঘটনার সাথে বনবিভাগের স¤œান জড়িত, আমরা অফিসিয়াল ব্যবস্থা নিচ্ছি।


এ বিষয়ে বদি, আনোয়ার, চান্দু ও তপু সাংবাদিকদের বলেন, মেয়েটি আমাদের দুঃসম্পর্কের বোন হয়। সে সুন্দরবন দেখতে খুলনা থেকে বেড়াতে এসেছে, এর বেশি কিছু নয়। এদিকে এর আগে বিভাগীয় বনকর্মকর্তার (ডিএফও) স্পীড বোট ড্রাইভার মনিরুজ্জামান বদি ও আনোয়ারের ফুয়েল জেটির রেষ্টহাউজের বাসভবন থেকে বানিশান্তা পতিতাপল্লীর তিন যৌন কর্মি কে খদ্দেরসহ হাতেনাতে আটক করেন স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেষ্টহাউজের পার্শ্ববর্তী মসজিদ কমিটির এক সদস্য বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ফরেষ্টার (বনবিভাগ) বদি, আনোয়ার, সিরাজ, তপু ও চান্দু পাশ্ববর্তী পশুর নদীর পাড়ের বানিশান্তা পতিতাপল্লীর যৌন কর্মিদের দিয়ে রেষ্টহাউজ ও লঞ্চে দেহব্যবসা করে যাচ্ছেন। তবে বিভিন্ন সময় বিষয়টি বনবিভাগের উর্ধ্বতন কর্তাদের জানালেও তাদের কোনদিন ব্যবস্থা নিতে দেখিনি।


এদিকে ডিএফও মাহমুদল হাসানের কথা হলে তিনি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এ বিষয়টি আমি জেনেছি এবং আমার এসিএফকে (শাহীন কবির) তদন্ত করতে বলেছি, তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে আমি ব্যবস্থা নিব।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত