প্রায় ৩০ হাজার একর জমি নিয়ে বিপাকে কৃষক

চিতলমারীতে হাইব্রীড ধান-বীজ মজুদ করে দাম বৃদ্ধির অভিযোগ

এস এস সাগর, চিতলমারী

আপডেট : ০৩:২৩ পিএম, শনিবার, ১০ নভেম্বর ২০১৮ | ৩৭৯১

চিতলমারীতে হাইব্রীড ধান বীজের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বোরো মৌসুমের শুরুতেই এ সংকট দেখা দেয়ায় এ অঞ্চলের ৩০ হাজার একর জমি’র চাষাবাদ নিয়ে কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ী অনেক বেশী দামে ধান বীজ বিক্রি করছেন বলে ধান চাষিরা অভিযোগ তুলেছেন।

স্থানীয় কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে মোট ব্লকের সংখ্যা ২১ টি। এরমধ্যে প্রতিবছর বড়বাড়িয়া ব্লকে এক হাজার ৯০১ একর, হাড়িয়ারঘোপ ৯২৬ একর, মাছুয়ারকু এক হাজার ৮৭৭ একর, কলাতলা এক হাজার ৩৫৮ একর, রহমতপুর এক হাজার ২৯৬ একর, শৈলদাহ এক হাজার ৩০৯ একর, হিজলা এক হাজার ৯৯ একর, কুড়ালতলা এক হাজার ৩৩৩ একর, শান্তিপুর এক হাজার ১৯৭ একর, শিবপুর ৬১৭ একর, বড়বাক ৬১৭ একর, চিতলমারী দুই হাজার ৭৪ একর, শ্রীরামপুর ৩ হাজার ৩০৯ একর, রায়গ্রাম ৩ হাজার ৮০৩ একর, চরবানিয়ারী ৯৮৮ একর, খড়মখালী এক হাজার ১১১ একর, চরডাকাতিয়া ৯২৬ একর, সন্তোষপুর ৭৯০ একর, দড়িউমাজুড়ি এক হাজার ২২২ একর ও কচুড়িয়া ব্লকে ৯৬৩ একর মোট ২৯ হাজার ৪৩০ একর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়ে থাকে। তারমধ্যে ২৮ হাজার ৬৬০ একর জমিতে হাইব্রিড, উফশী ৬৫২ ও স্থানীয় জাতের ধান ১১৮ একর জমিতে চাষাবাদ হয়।

কিন্তু এ বছর বোরো মৌসুমের শুরুতেই হাইব্রীড ধান বীজের চরম সংকট দেখা দেয়ায় এ অঞ্চলের ৩০ হাজার একর জমি নিয়ে কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ধান বীজ না পেয়ে তারা সঠিক সময়ে চাষাবাদ করতে পারবেন কিনা এ নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। ধান চাষিরা অভিযোগ তুলেছেন বাজারে দু’চার প্যাকেট ধান পেলেও তা চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনফা লাভের আশায় এ সংকট সৃষ্টি করেছেন বলে তাদের দাবি।

কৃষক টিপু ফরাজী, অনুপ বিশ্বাস, রেজাউল খান, মুুজিবর বিশ্বাস, শেখ সয়ের আলী, শৈলেন রায়, অছিকুল ফরাজী, বিশ্ব মন্ডল, মুন্না শেখ, বলাই বিশ্বাস, আলমগীর তরফদার, প্রশান্ত মজুমদার, ইব্রাহীম বিশ্বাস ও সমীর মন্ডলসহ শতাধিক ধান চাষি প্রায় অভিন্নসুরে জানান, বাজারে হীরা, আলোড়ন, সাথী, বালিয়া, দুর্বার, ময়না, টিয়া, রাজকুমার, জনকরাজ, আগমনী, এসিআই, ইস্পাহানীসহ নানা নামের হাইব্রীড জাতের ধান রয়েছে। প্রথম দিকে এ সব ধান প্রতিকেজি ২৫০-২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে তা প্রতিকেজি ৩৫০-৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এই অধিক দামেও তারা কিনতে রাজি। কিন্তু তারা ঠিকম মত বীজ পাচ্ছেন না। এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনফা লাভের আশায় ধান বীজের এ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন বলে তাদের দাবি।

এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ এটেছেন স্থানীয় ধানবীজ ব্যবসায়ীরা, ডিলার ও কোম্পানী প্রতিনিধিরা। তারা কোন মন্তব্য করতে রাজি নন বলে জানান।

চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার হাইব্রীড ধান বীজ সংকটের কথা স্বীকার করে বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, এজন্য স্থানীয় ডিলাররা নয়, কোম্পানীর লোকজন দায়ী। বিষয়টি তিনি আরও গুরুত্বে সাথে দেখবেন বলেও জানান।


তবে বাগেরহাট জেলা বাজার কর্মকর্তা মোঃ সুজাত আলী খান মুঠোফোনে বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, বিষয়টি অতি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেউ দোষী প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত