চিতলমারী উপজেলায়

দুই শীর্ষ ব্যক্তির বিরোধ এখন চরমে

এস এস সাগর

আপডেট : ০৭:২৫ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ | ৪২৯৯

চিতলামারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরোধে বিব্রত সচেতন মহল ও স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা। গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে একে অপরকে দুশলেন দুজনেই। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মুজিবর রহমান শামীমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। এ বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু সাইদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ঐ অভিযোগের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব করেণ সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন। সভায় উপস্থিত জনপ্রতিনিধিরা প্রস্তাবকে সমর্থন করেন।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মুজিবর রহমান শামীম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু সাইদ উপজেলার বনায়ণকৃত গাছ বিক্রয়ের জন্য নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, ঐ গাছ পছন্দের ক্রেতার কাছে কম মূল্যে বিক্রয় করেছেন। এছাড়া, সরকারি বরাদ্দের ঘর প্রতি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নগদ অর্থ গ্রহন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরি নিয়োগ প্রদানের জন্য উৎকোচ গ্রহণসহ নানা অভিযোগের কথা উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলার সকল সম্পদের রক্ষক হয়ে যদি নিজেই ভক্ষক হয় এটা মানা যায়না। আমি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের দায়িত্ববোধ থেকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি।


এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু সাইদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, বন বিভাগের মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করে, সরকারি সকল নিয়ম মেনে নিলামে গাছ বিক্রয় করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যাবদি কোন দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরি নিয়োগ করা হয়নি, বরং চেয়ারম্যানের মনোনীত প্রতিনিধি চাকুরী প্রার্থীদের নিকট থেকে টাকা গ্রহন করার কারণে নিয়োগ স্থগিত রাখা হয়েছে। জমি আছে ঘর নেই দ্বিতীয় পর্যায়ে যে ঘর এসেছিল, সেগুলো উপজেলা চেয়ারম্যান নিজের পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে করাবেন। আমি সেটি করতে না দেয়ায়। তিনি আমার প্রতি এ ধরণের অপপ্রচার চালাচ্ছে ও বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিচ্ছেন। আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ তদন্তে মিথ্যা প্রমানিত হবে আমি বিশ্বাস করি।


জমি আছে ঘর নেই প্রকল্পের ঘর পাওয়া উপজেলার আড়–য়াবর্নী চরপাড়া এলাকার মোঃ জিহাদ শেখ, মোস্তাক খন্দকার, পুতুল মজুমদারসহ কয়েক জন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মাধ্যমে ঘর পেয়েছি। ঘরের জন্য আমাদের কাউকে কোন টাকা প্রদান করা লাগেনি।

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও চরবানিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়াল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, আমি দীর্ঘদিন জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনে অনেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেখেছি। বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু সাঈদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, আমি মনে করি তা ভিত্তিহীন। তাকে একজন ভাল মানুষ বলে আমার মনে হয়।

সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নিজাম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে উদ্দিন, আসলে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা ভিত্তিহীন। যার ফলে উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় অভিযোগের বিরুদ্ধে আমরা নিন্দা প্রস্তাব এনেছি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পীযূষ কান্তি রায় বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, নিয়োগের যে অভিযোগ এসেছে, সে নিয়োগই হয়নি। গত পাঁচ বছরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কাছে সাধারণ মানুষও নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেনি। এধরণের অহেতুক অভিযোগে চিতলমারী উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের ভাবমুর্তি নষ্ট হচ্ছে। মানুষতো ভিতরে ঢুকে কোন কিছু জানতে পারছে না। এঘটনার সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্ত হোক এবং সাধারণ মানুষ তদন্তের ফলাফল জানুক, এটা আমরা প্রত্যাশা করি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত