শরণখোলার ৯৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ৪০হাজার মানুষ

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা

আপডেট : ০৭:৩৭ পিএম, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০১৯ | ১৫১০

সময় যতো ঘনিয়ে আসছে শরণখোলার মানুষের মাঝে ততোই আতঙ্ক বাড়ছে। সন্ধ্যার পর যেকোনো সময় বুলবুল সুন্দরবন উপকূলে আঘাত হানতে পারে এমন আশঙ্কায় শনিবার বিকেল তিনটার পর থেকে মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছে। সঙ্গে করে হাস-মুরগী, গরু-ছাগলও আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে তারা। এছাড়া, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আশপাশের বাড়ির ভবনে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজন আশ্রয় নিয়েছে। দুবলার শুঁটকি পল্লীর জেলে ও সুন্দরবনের বনকর্মীদের আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় নদ-নদী ও সাগরে মাছধরা সমস্ত নৌকা ও ট্রলার দুদিন আগেই নিরাপদে উঠে এসেছে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকেল সাড়ে পাঁচটা) উপজেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে (কন্ট্রোল রুম) উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা রনজিৎ সরকার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানিয়েছেন, উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বলেশ্বর তীরবর্তী আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে এবং সুন্দরবনের দুবলার শুঁটকি পল্লীর আওতাধীন পাঁচটি চরের পাঁচটি আশ্রয় কেন্দ্রসহ মোট ৯৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৪০হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। যা উপজেলার মোট জনসংখ্যার তিনের একভাগ। যারা এখনও পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রে যায়নি তাদেরকে সেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে নিরাপদে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। সেচ্ছসেবকরা সবাইকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য উপজেলার সর্বত্র প্রচারণা চালাচ্ছে।

জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, দুই-তিন নম্বর সিগনালের পর পরই সমস্ত ফিশিং ট্রলার সাগর থেকে উঠে আসে। এসব ট্রলার উপজেলার ছোট ছোট নদী-খাল ও রায়েন্দা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, শুক্রবার থেকেই সুন্দবনে প্রবেশের সব ধরণের পার-পারমিট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুঁটকি পল্লীর জেলেরা ওইদিনই সাগর থেকে উঠে এসেছে। দুবলার জেলে ও শুঁটকি পল্লীর আওতাধীন অফিস কিল্লা/মাঝের কিল্লা, আলোরকোল, মেহেরআলীর চর, নারকেলবাড়িয়া ও শেলার চরে শুঁটকি প্রকৃয়ায় নিয়োজিত প্রায় ১৫হাজার জেলেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বনকর্মীদেরও নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্তফা শাহীন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্ছ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিপুল সংখ্যক সেচ্ছাসেবক লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়াসহ সবধরণের সহযোগীতায় নিয়োজিত রয়েছে। নিরাপত্তার জন্য পুলিশের সদস্যরা মাঠে রয়েছে। চার ইউনিয়নে চারটি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এবং দুর্যোগ পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে চারটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত যারা আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে তাদের মধ্যে শুকনা খাবার, মোমবাতি এবং দিয়াশলাই বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত শুকনা খাবারের প্যাকেট মজুত রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত