“সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের সুদৃষ্টি কামনা”

ফকিরহাটের মরা পশুর নদী পুনঃ খনন জরুরী

পি কে অলোক,ফকিরহাট

আপডেট : ০৩:২৮ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৮ মার্চ ২০১৮ | ১৪৪৮

ফকিরহাটের ভিতর দিয়ে প্রবাহমান প্রায়৩০কিলোমিটার লম্বা মরা পশুর নদীটি দীর্ঘ দিনেরও বেশি সময়ে পূনঃ খনন না করায় আগামী বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে বন্যা হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। অতিদ্রুত নদীটি পূনঃ খনন করা না হলে ফকিরহাট বাটিয়াঘাটা ও রামপালের শতাধিক গ্রামে বর্ষা মৌসুমে বসবাস করা সীমাহীন সমস্যা হয়ে দাড়াবে। আর এই সমস্যার কারনে কৃষি ফসল বসতবাড়ী ও মৎস্য ঘেরের ব্যাপক তির আশংকা করছেন সচেতন মহল। সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার লখপুর ইউনিয়নের বড় খাজুরা ৬গেটের উপর দিয়ে প্রবাহমান মরা পশুর নদীটি ভবনা ভট্টেখামার খড়বুনিয়া বিলের মধ্য দিয়ে বেতাগা ইউনিয়নের ধনপোতা চাকুলী হয়ে বটিয়াঘাটা উপজেলার আমেরপুর নারায়নখালী বাইনতলা ও রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা বর্নি সায়রাবাদ গ্রাম হয়ে খুলনা জেলার দাকোপ ও চালনা বাজারে গিয়ে মিশেছে। মরা এই পশুর নদীর দুই পাড়ে তিন উপজেলার শতাধিক গ্রামের হাজার হাজার জনসাধারন বসবাস করেন। সেই সুবাদে নদীর পাড়কে কেন্দ্র করে এখানে ঘনবসতি গড়ে উঠেছে।

স্থানীয় বৃদ্ধ মোঃ শামসুর রহমান, মোঃ করিম মোড়ল, মোঃ আদিল গাজী, মোঃ আব্দুর সাত্তার, দোকানদার আয়ুব আলী ও কামরুল ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এক সময়ে এই নদী দিয়ে লঞ্চ, ষ্টিমার, ট্রলার ও পাল তোলা নৌকা চলাচল করতো। সে সময়ে বেতাগা বাজার, লখপুর বাজার, গৌরম্ভা বাজার, ফয়লাহাট বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে মালামাল আমদানী রপ্তানি হতো খুলনা শহর হতে। সেই নদী মরে গিয়ে কোন কোন স্থানে গোচরণ ভুমিতে পরিনত হয়েছে। শুধু তাই নয়, নদী মরে গিয়ে বড় বড় চর জেগে হাজার হাজার একর জমি খাস হয়ে পড়েছে। সেই জমিতে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যাক্তিরা নামে বেনামে রাতা রাতি দখল করে ঘরবাড়ি মৎস্য ঘের তৈরী করে স্থায়ী হয়ে পড়েছেন।

এদিকে একটি সুত্রে জানা গেছে, চরের এই জমি গুলি নামে বেনামে বিক্রয়ও করছেন কেউ কেউ। স্থানীয়রা জানান, আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে নদীটি পূনঃ খনন করা না হলে বৃষ্টির পানি ও নদীর পানি একাকার হয়ে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্ঠি হয়ে বন্যার রুপ ধারন করবে। সে সময়ে ফকিরহাট বাটিয়াঘাটা ও রামপালের শতাধিক গ্রামে বসবাস করা চরম সমস্যা হয়ে দাড়াবে। আর এই সমস্যার কারনে কৃষি ফসল বসতবাড়ী ও মৎস্য ঘেরের ব্যাপক তির আশংকা করেছেন অনেকে। স্থানীয়দের ধারনা বর্ষা মৌসুমের আগেই যদি নদীটি পূনঃ খনন করা না হয় তাহলে বন্যার রুপ এমন ভাবে ধারন করবে যে মানুষ মারা গেলে কবর দেওয়ারও স্থান খুজে পাওয়া দুরুহ ব্যপার হয়ে দাড়াবে।

লখপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য আহম্মদ আলী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, শুধু মরা পশুর নদী পূনঃ খনন করলে হবে না। ১০/৬ গেটের বাহির হতে জাবুসা বাজারের পার্শ্বে দিয়ে যে নদীটি রুপসা পশুর নদী-তে মিশেছে সেই নদী পর্যন্ত পুনঃ খনন করাও একান্ত প্রয়োজন। এই ২কিলোমিটার পর্যন্ত নদী পূনঃ খনন করা না হলে পলি জমে আবারও একই অবস্থার সৃষ্টি হবে।


এব্যাপারে ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বেতাগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন দাশ এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এই নদীটি পূনঃ খনন করার জন্য তিনি নিজে একটি মাষ্টার প্ল্যান তৈরী সহকারে তা সিডি আকারে সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করেছেন। গত কয়েক বছর আগে মরা পশুর নদীটি পূনঃ খনন করা হয়। কিন্তু নদীটি যদি খুলনার চালনা ত্রি মোহনা হতে ড্রেজারের মাধ্যমে খনন শুরু করে এই পশুর নদীতে মিশাতো তাহলে পূনঃরায় খনন করা লাগতো না। নদীর আয়তন নির্ধারন করে তা মাষ্টার প্ল্যান মোতাবেক পূনঃ খনন করলে খননকৃত নদী বুজে জেতোনা। তিনি খুলনার চালনা ত্রি মোহনা নদী হতে ড্রেজারের মাধ্যমে খনন শুরু করে মরা এই পশুর নদীতে মিশানোর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত