চিতলমারীতে ক্ষিতিশের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত প্রনব

চিতলমারী প্রতিনিধি

আপডেট : ০৫:২০ পিএম, মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০২২ | ৬২৪

চিতলমারীতে ক্ষিতিশ চন্দ্র বিশ্বাসের খপ্পরে পড়ে প্রনব সাহা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা সর্বশান্ত হয়েছেন। এ ঘটনায় বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার ও চিতলমারী থানার পরিদর্শক (ওসি) বরাবর প্রনব সাহা বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সুবিচারের আশায় ওই নিরীহ পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে পথে পথে ঘুরছেন। প্রনব সাহা চিতলমারী সদর বাজারের মৃত প্রফুল্ল কুমার সাহার ছেলে এবং ক্ষিতিশ চন্দ্র বিশ্বাস খড়মখালী গ্রামের অন্নধর বিশ্বাসেরর ছেলে। এ ঘটনায় পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।


অভিযোগে পত্রে জানা গেছে, উপজেলার খড়মখালী মৌজার ১০ শতক জমি বিক্রির কথা বলে ক্ষিতিশ চন্দ্র বিশ্বাস গত ২৭/০৯/২০২১ তারিখ প্রনব সাহার নিকট থেকে ৫ লাখ টাকা বায়না নেন। প্রনব সাহা পরে জানতে পারেন ক্ষিতিশ চন্দ্র বিশ^াসের কাগজপত্রে সমস্যা আছে। পরে তিনি বিষয়টি ক্ষিতিশকে জানান। এ ঘটনার পর থেকে ক্ষিতিশ তাঁকে আর টাকাও ফেরত দেয় না। জমিও রেজিস্ট্রি করে দেয় না। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ভাবে বহু সালিশ বৈঠক হয়। কিন্তু তাতেও কোন ফয়সালা না হওয়ায় প্রনব সাহা চিতলমারী থানা ও পুলিশ সুপারের কাছে ক্ষিতিশের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে থানার পরিদর্শক (ওসি) উভয় পক্ষকে থানায় ডাকলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা আবারও সালিশ বৈঠক করে একটি রায় দেন। রায় অনুযায়ী ক্ষিতিশ চন্দ্র বিশ্বাস প্রনব সাহাকে ৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন এবং টাকা দেয়ার জন্য ১০/০৪/২০২২ ইং ও ১০/০৫/২০২২ ইং দুটি তারিখ ধার্য্য করেন। কিন্তু দুটি তারিখ পার হলেও ক্ষিতিশ চন্দ্র বিশ্বাস প্রনব সাহাকে কোন টাকা দেননি।

টাকা না পেয়ে প্রনব সাহা মঙ্গলবার (৭ জুন) দুপুরে চিতলমারী কৃষি ব্যাংক শাখায় উক্ত চেকটি জমা দেন। ব্যাংক হিসাবে (একাউন্টে) পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় কর্তৃপক্ষ চেকটি ফেরত দেন। চেক ফেরত হওয়ায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন প্রনব সাহা ও তার পরিবারের সদস্যরা।


কান্নাজড়িতকন্ঠে প্রনব সাহা স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাথা গোঁজার জন্য একটু জমি কিনতে চেয়ে ছিলাম। টাকা দেওয়ার পর জানতে পারি ওই জমির কাগজপত্র ভূয়া। এখন টাকাও দেয়না, জমিও পাচ্ছি না। ব্যাংকে চেক জমা দিয়েও টাকা পেলাম না। আমি নিজে ক্যান্সার ও হার্টের রোগি। এখন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সর্বশান্ত হয়ে গেলাম।

ক্ষিতিশ চন্দ্র বিশ্বাস মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি জমি বিক্রির কথা বলে টাকা নিয়েছি। আমার জমির কাগজপত্র ফ্রেশ। জমি বিক্রি না করে আমি টাকা দিতে পারবো না।’

চিতলমারী থানার পরিদর্শক (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান জানান, প্রনব সাহার অভিযোগের আলোকে উভয় পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছিল। তখন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা এসে মিমাংশার কথা বলে উভয় পক্ষকে নিয়ে যান। তারা এটার ফয়সালা করেছেন। তবে প্রনব সাহার সাথে ক্ষিতিশ বিশ্বাস অন্যায় করেছেন।


মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক চিতলমারী শাখার ব্যবস্থাপক আজিজুল হক বলেন, ক্ষিতিশ চন্দ্র বিশ্বাসের হিসাব নম্বরের ৫ লাখ টাকার একটি (স্বাক্ষরিত) চেক প্রনব সাহা আমাদের শাখায় জমা দেন। একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় চেকটি ডিজঅনার করা হয়েছে।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত