আইএলও‘র ড্রাইভিং শিক্ষার্থীদের লাইসেন্স পেতে ৩ হাজার টাকা ঘুষ

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ১২:০৮ এএম, মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | ২৭৭

প্রতিকী ছবি

বাগেরহাটে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)‘র স্কিলস-২১ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষন নেওয়া শিক্ষার্থীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স করে দেওয়ার কথা বলে ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ উঠেছে প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে। ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি (আইএমটি) বাগেরহাটে চলমান এই কোর্সের ২৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৮ থেকে ২০ জনের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। যারা টাকা দেয়নি তারা পাশ করতে পারবে না এমন হুমকীও দেওয়া হয়েছে। আইএলও‘র ড্রাইভিং প্রশিক্ষক মোঃ রুবেলের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছেন ২য় ব্যাচের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।


মোঃ সাব্বির হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি বাগেরহাটে আইএলও‘র চার মাসের ড্রাইভিং কোর্স সম্পন্ন করলে আমরা আইএলও থেকে ৪ হাজার ২‘শ টাকা পাই। ভর্তির সময় বলা হয়েছিল ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আমাদের কোন টাকা লাগবে না। কিন্তু এখন আমাদের কাছ থেকে ড্রাইভিং পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার জন্য জন্য ৩ হাজার টাকা করে নিয়েছেন প্রশিক্ষক মোঃ রুবেল। শুধু আমি না, প্রায় সবাই এই টাকা দিয়েছেন রুবেল স্যারের কাছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, বিআরটিএ তে টাকা দেওয়া লাগবে বলে আমাদের কাছ থেকে ৩ হাজার করে টাকা নিয়েছে। আমিসহ প্রায় ১৮-২০ জন শিক্ষার্থী তিন হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু এটা যদি জানাজানি হয় আমাদের ফেল করায়ে দিতে পারে। এজন্য কেউ মুখ খুলছে না।

বারুইখালী গ্রামের বাসিন্দা মোঃ নুরুজ্জামান নামের এক প্রশিক্ষনার্থী বলেন, একটি ট্রাক চালকের সহযোগি হিসেবে কাজ করায় ঢাকায় ছিলাম। রুবেল স্যার ফোন করে বিআরটিএ‘তে দেওয়ার জন্য তিন হাজার টাকা চেয়েছিলেন। কাছে টাকা নেই বলে জানালে, তিনি বলেন টাকা না দিলে ফেল করায়ে দিবেন। পরে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানতে পারি তাদের কাছ থেকেও তিন হাজার করে টাকা নেওয়া হয়েছে।


অভিযোগ অস্বীকার করে প্রশিক্ষক মোঃ রুবেল বলেন, আমি কোন টাকা নেইনি। তবে তার কাছে পূর্নাঙ্গ নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন না জেনে কি করবেন।

এদিকে বিআরটিএ-তে লাইসেন্সের জন্য সরকারি ফি ছাড়া কোন টাকা নেওয়া হয়না দাবি করে প্রতিষ্ঠানটির বাগেরহাট কার্যালয়ের পরিদর্শক রনজিত কুমার হালদার বলেন, বিআরটিএ‘র লাইসেন্স প্রদানের জন্য আমরা কোন টাকা নেই না। যদি কেউ বিআরটিএ‘র নাম ভাঙ্গিয়ে টাকা নেয়, তাহলে সে দায়দায়িত্ব তাদের।

আইএলও‘র স্কিলস-২১ প্রকল্পের সমন্বয়ক ইলিয়াস রহমাতুল্লাহ বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি অবগত নন। যদি অভিযোগ প্রমানিত হয়, তাহলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি বাগেরহাটের অধ্যক্ষ মোঃ জিয়াউল হক বলেন, এভাবে টাকা নেওয়ার নিয়ম নেই। যদি কোন শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দেয় তা হলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।

শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ দিলে তাদের ফেল করায়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ দিয়ে শিক্ষার্থীরা কেন ঝুকির মধ্যে থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, লিখিত অভিযোগ ছাড়া আমরা কিভাবে ব্যবস্থা নিব। অনেকেই তো অনেক কথা বলে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত