নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও চলছে সুন্দরবনে মৎস্য নিধন

শরণখোলায় বিষ মিশ্রিত ৪মণ চিংড়ি জব্দ

শরণখোলা সংবাদদাতা

আপডেট : ০৩:৫৩ পিএম, মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০১৭ | ১০৪৬

বিষ মিশ্রিত চিংড়ি

নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও চলছে সুন্দরবনে চোরা মৎস্য শিকারীদের অপতৎপরতা। অল্প সময় ও কম শ্রমে অধিক মাছ পাওয়ার আশায় ব্যবহার করা হচ্ছে সুন্দরবনের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বিষ (কীটনাশক)। মঙ্গলবার সকালে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের বনরক্ষীরা বিষ মিশ্রিত প্রায় ৪ মণ চিংড়ি জব্দ করেছে। শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়ন বনসংলগ্ন পানিরঘাট এলাকার ভোলানদীর চর থেকে ওই চিংড়ি জব্দ করা হয় বলে বনবিভাগ দাবি করেছে। জব্দকৃত চিংড়ি শরণখোলা স্টেশনে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিষ মিশ্রিত ওই চিংড়ি বনরক্ষীরা ভোলানদীর চর থেকে জব্দ করেনি। বনসংলগ্ন শরণখোলা গ্রামের একটি বাড়িতে অভিয়ান চালিয়ে জব্দ করা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওয়াইল্ড লাইফ ও সুন্দরবন রক্ষায় নিয়োজিত সিপিজি সদস্যসহ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, বনসংলগ্ন শরণখোলা গ্রামের ফুল মিয়ার ছেলে মৎস্য ব্যবসায়ী আশিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে তার জেলেদের মাধ্যমে সুন্দরবন থেকে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করে আসছে। সে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের জন্য জেলেদের হাজার হাজার টাকা দাদন দিয়ে থাকে। এদিন সকালে শরণখোলা গ্রামের লালমিয়া হাওলাদারে ছেলে কবির হাওলাদারের বাড়িতে নিরাপদে রেখে দেয় আশিকুল। পরে বনবিভাগ খবর পেয়ে কবিরের ঘর থেকে ওই চিংড়ি উদ্ধার করে। শরণখোলা উপজেলার খুড়িয়াখালী, সোনাতলা, পানিরঘাট, দক্ষিণ রাজাপুর, উত্তর রাজাপুরসহ সুন্দরবন সংলগ্ন গ্রামগুলোতে একাধিক বিষ পার্টি রয়েছে। এরা গোপনে বনবিভাগের চোখের আড়ালে বছরের পর বছর বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করে চলেছে।

বনবিভাগের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) মো. ফারুক আহমেদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্থানীয় একটি চক্র গোপনে বনে প্রবেশ করে। তারা সুন্দরবনের দুধমুখী এলাকা থেকে বিষ প্রয়োগ করে গলদা ও গোদা চিংড়ি শিকার করে পানিরঘাট এলাকা নিয়ে আসে। এদিন সকাল ৮টার দিকে এমন গোপন সংবাদ পেয়ে বনরক্ষীরা ওই এলাকা গেলে অবৈধ মৎস্য শিকারীরা দুটি ড্রামে ভর্তি ১৫০ কেজি গলদা ও গোদা চিংড়িমাছ ভোলা নদীর চরে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে বিষ মিশ্রিত চিংড়ি জব্দ করে তার নমুনা ল্যাব টেস্টের জন্য উপজেলা মৎস্য অফিসে পাঠানো হয়েছে। টেস্টে বিষ প্রমাণিত হলে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত