আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা 

মংলায় বসত ভিটা দখলের অভিযোগ

মংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ১১:০১ পিএম, রোববার, ৫ আগস্ট ২০১৮ | ১৪২৬

মংলায় প্রতিনিয়ত ঘটছে জমি ও বসতভিটা জবর দখলের হিড়িক। মানছেনা আদালতের নিষেধাজ্ঞাও। তেমনি আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে মংলার বুড়িরডাঙ্গা এলাকায় আপন ভাইয়ের বসত ভিটা দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মংলা পোর্ট পৌরসভার ও তার আশ-পাশের জমির দাম কয়েকগুন বেড়ে যাওয়ার ফলেই গায়ের জোড়ে দখল করে নিচ্ছে এখানকার প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা। দিনে দুপুরে নিজের ভাইসহ একদল দুর্বৃত্তরা পৌরসভার স্থায়ী বন্দর এলাকায় এ দখল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। এ ছাড়া বসত ভিটা হারানো পরিবারটিকে অব্যাহত হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। তবে এ বিষয় পুলিশের রহস্যজনক ভুমিকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।


জানা যায়, মংলা পোর্ট পৌরসভার স্থায়ী বন্দরের বুড়িরডাঙ্গা এলাকার মুকুন্দ ইজারদার’র ছেলে সুজিৎ ইজারদার একজন দিন মজুর। ছোট বেলা থেকেই কখনও নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরা বা অন্যের বাড়ীতে কাজ করে মা-বাবা আর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোন রকম বেচে আছে। ছোট দুই ভাই দুলাল ও স্বপন ইজারদার ৮ বছর বয়সের সময় মা ও বাবাকে ফেলে রেখে বিয়ে করে অন্যাত্র চলে যায়। তখন বাবা মুকুন্দ ইজারদার ছোট সুজিৎকে নিয়ে নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। লেখাপড়া বন্ধ করে বাবার সাথে নদীতে ও মাঠে দিন মজুরের কাজ করে কোন রকম তাদের সংসার চলতো। কিছুদিন পরই তার বাবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরেন। চিকিৎসা করানো কোন উপয় না পেয়ে সুজিৎ নদীতে জাল পেতে মাছ ধরতো আর তার স্ত্রী অন্যের ঘরে ঝিয়ের কাজ করে বাবাকে চিকিৎসা করাতো। অন্য দুই ভাই বাবার অসুস্থতার কথা শুনে কখনো দেখতেও আসেনি এমনকি মৃত্যুর সময়ও আসেনি।


২০১২ সালের ৩১ অক্টোবর দীঘদিনের রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যায় মুকুন্দ ইজারদার। ২০১১ সালে বৃদ্ধ বয়সে দেখাশুনা আর সেবা করার ফলে তার মৃত্যুর আগে ছোট ছেলে সুজিৎকে ২৬ শতক জমি দান করেন। তখন থেকেই ওই জমিতে বসত ঘর নির্মান করে মাকে নিয়ে বসবাস করতো সুজিৎ ও তার পরিবারের সদস্যরা। গত মাসে ওই দুই ভাই সুজিৎ’র বিরুদ্ধে মংলা থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করে। সুজিৎকে থানায় আটকে রেখে ভাইদেরকে জমি দখল নেয়ার পরামর্শ দেয় পুলিশ। এদিন রাত ২টার দিকে পুলিশকে ম্যানেজ করে ছাড়া পায় সে। গত ১০ জুলাই বাগেরহাট আদালত এ জমিতে অন্য কাউকে না ঢোকার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

কিন্ত সেই নিষেধাজ্ঞা থানায় দিলে আদালতের কাগজে জমি খাওয়া যায়না বলে পুলিশের নির্দেশনায় ভাইরা লোকজন নিয়ে জমিতে জোরপুর্বক ঘর তুলে জমি দখলে নেয়ার চেষ্টা করে। এতে সুজিতের স্ত্রী বাধা দিলে তাকে বেধরক মারপিট করে গুরুতর জখম অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। এব্যাপারে আপন ভাই ও দৃর্বৃত্তদের হাত থেকে রেহাই পেতে গত ৩ আগষ্ট বাগেরহাট পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করে সুজিৎ।

সুজিৎ জানায়, আমার এ জমির অনুকুলে ন্যায্য কাগজ পত্র থাকা সত্যেও এখনও ভাইদের পক্ষনিয়ে আমাকে পুলিশ প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে, তাদের জমি না দিলে বিভিন্ন মামলায় ফাসিয়ে দিবে বলে পুলিশের ভয়ে বাড়ী থাকতে পারছিনা। বাগেরহাট পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় জানান, সুজিৎ’র একটি অভিযোগ হাতে পেয়েছি। যেহেতু জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাই ওই জমিতে অন্য কাউকে না যাওয়ার জন্য জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত