মোংলায় বালু ভরাটের নামে কোটি টাকা লোপাট

মো. মাসুদ রানা, মোংলা

আপডেট : ০৫:২০ পিএম, বুধবার, ১০ জুলাই ২০১৯ | ৩৯৪৩

মোংলা ঘসিয়া খালী চ্যানেলে খনন করা বালু মাটি কর্তৃপক্ষ ফ্রি দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি দিলেও প্রতারনা করে এ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বালু ভরাটের নামে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের তৃতীয় শ্রেণির এক কর্মচারি। এ ঘটনার সাথে বি আই ডব্লি টি এ, মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চলের কতিপয় কর্মকর্তাসহ ৯ সদস্যের একটি শক্তিশালী প্রতারকচক্র জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে ।

জানা গেছে, মোংলা ঘসিয়াখালী চ্যানেলে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সরকারী অর্থায়নে নিয়মিত ড্রেজিং কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিআইডবিউ টি এ। এ চ্যানেলে খনন করা বালু ও মাটি ফেলা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী নদী সংলগ্ন জমিতে। তার পরেও বালু মাটি ফেলার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। পরে বিআই ডব্লিটিএ থেকে ফ্রি বালু মাটি নেওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বালু ভরাটের নামে কোন টাকা নেয়ার নিয়ম না থাকলেও মোংলার অর্থনৈতিক অঞ্চল (বেজায়) পলি ফেলে বিআইডব্লিটি এর ড্রেজারের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রায় ৮০ ল টাকা আত্বসাৎ করেছে মোংলা বন্দরের ট্রাফিক শাখায় কর্মরত সহকারি ট্রাফিক ইনেসপেক্টর এনামুল হক।

মোংলা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন মেসার্স শিকদার গ্রুপের নিয়োগ করা প্রতিষ্ঠান মেসার্স কামার জানি এন্টারপ্রাইজ এর মালিক মোঃ মাহবুবুর রহমানের কাছ থেকে প্রতারনা করে প্রায় ৬৬ লাখ টাকা গ্রহন করেছে বন্দরের ওই কর্মচারী এনামুল। ব্যাবসায়ী মাহাবুবুর রহমান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, মোংলা বন্দর কর্তৃপরে কর্মচারী এনামুল নিজেকে একজন ড্রেজার ব্যবসায়ী দাবি করে মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চলের নিচু জায়গা ভরাটের জন্য প্রতি ফুট দুই টাকা হারে মৌখিক চুক্তি করেন তাদের প্রতিষ্ঠানের সাথে। এর পর তিনি বালু ভরাট করা শুরু করে একই সাথে বিল নিতে থাকেন এনামুল। প্রায় ৪০ লাখের অধিক ঘনফুট বালু ভরাট করে গত ৪ জুলাই পর্যন্ত। এ সব বালু ভরাটের বিনিময় হিসাব অনুযায়ী মাহাবুবুর রহমানের কাছ থেকে পাওনা টাকাও বুঝে নিয়েছেন বন্দরের কর্মচারী ওই এনামুল।

এর পর ৪ জুলাই মাহাবুবুর রহমান জানতে পারেন, ওই বালু ভরাট করা হয় মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের ড্রেজিং কাজে নিয়োজিত ড্রেজার দ্ধারা। এ সব জেনে তিনি অভিযোগ করেন, মোংলা বন্দরের কর্মচারী এনামুল হক তাদের সাথে প্রতারনা করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এনামুল হক বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, তিনি প্রতি ফুট বালু ভরাটের জন্য দুই টাকা হারে টাকা গ্রহন করেছেন। তবে এনামুল দাবি করেন বালু ভরাট বাবদ নেওয়া টাকা তিনি একা নেন নাই। বিআইডব্লিটি এর কর্মকর্তা, কামারজানি এন্টারপ্রাইজ এর ব্যবস্থাপক আনন্দ বাবু, দুজন মিডিয়া কর্মীসহ ৯ জনকে ভাগ দিয়েছেন। ফ্রি বালু ফেলছে বিআইডব্লি টি এ, কিন্তু কেন টাকা নিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে বন্দরের কর্মচারী এনামুল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, তার মতা আছে তাই তিনি নিয়েছেন।

সরকারী ড্রেজার দিয়ে ডেজিং কাজ চলছে, কিন্তু সরকারি অন্য প্রতিষ্ঠান অর্থনৈতিক জোন উচু করনে কেন টাকা নেয়া হয়েছে জানতে চাওয়া হলে বিআইডবিউটি এর ড্রেজিং প্রকল্পে নিয়োজিত প্রকৌশলী মতিউর রহমান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, এনামুল হকসহ তিন ব্যক্তি আমাদের দপ্তরে সাদা কাগজে লিখিত আবেদন করেন ফ্রি বালু দ্ধারা ড্রেজার নিচু এলাকা ভরাটের জন্য। এর পর আমাদের উর্দ্ধতন কর্তৃপ একটি প্যাডে লিখিত আবেদন করতে বলেন, পরে তারা একটি প্যাডে আবেদন করার পর আমরা বালু ভরাট করি। লেন দেনের বিষয়টি আমাদের জানানাই।

এ বিষয়ে শিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ফোন করা হলে তিনি দেশের বাহিরে থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে গ্রুপের মার্কেটিং ম্যানেজার জয়সন স্টিফারকে ফোন করা হলে তিনি খোজ নিয়ে পরে কথা বলবেন বলে পরে আর কথা বলেননি ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত