এলাকাবাসির অভিযোগ

চিতলমারীতে নৈরাজ্য সৃষ্টিতে বিএনপি কর্মীদের সংগঠিত করছে ৩ নেতা

স্টাফ রিপোর্টার

আপডেট : ০২:৪০ পিএম, মঙ্গলবার, ৬ আগস্ট ২০১৯ | ৭০৬

বাগেরহাটের চিতলমারীতে নৈরাজ্য ও বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে উপজেলা পর্যায়ের তিন নেতা গোপনে বিএনপি কর্মীদের সংগঠিত করছে। নাশকতা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামী হয়েও ওই নেতারা একের পর এক বিভিন্ন ধরণের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তারপরও তারা থাকছেন ধরা-ছোয়ার বাইরে। মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় সাংবাদিকদের বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

পুলিশ, এলাকাবাসি ও ভূক্তোভোগীমহল সূত্রে জানা গেছে, পুরোনাম আবু বক্কর সিদ্দিকী (৪৫)। ডাক নাম বকুল। বড়ই দুর্দান্ত ও দুর্ধর্ষ প্রকৃতির। ছোট বেলা থেকেই পরধন ও পরনারীর প্রতি প্রচন্ড লোভ। তাই বিএনপি সরকারের আমলে যোগদেন বিএনপিতে। এরপর থেকেই বকুল দুর্র্ধর্ষ হয়ে ওঠে। এখনও থেমে নেই বকুলের কু-কর্ম। বর্তমানে নাশকতা মামলাসহ ৮/১০ টি মামলা মাথায় নিয়েও বকুল একের পর এক তার অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। এর আগে বকুল চিতলমারী থানার বকসি মৃনাল দাসের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্য মৃনাল দাস বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় বকুলের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট প্রদান করা হয়েছে।

আব্দুল হাই শেখ (৪৮)। বাবার নাম মোঃ কাওছার আলী শেখ। বাড়ি চিতলমারীর ঘোলা গ্রামে। বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। মোল্লাহাট থানায় জিআর ১৭৮/১৪ ও চিতলমারী থানায় জিআর ৩১/১৯ নং দু’টি মামলা রয়েছে।

মোঃ নুর ইসলাম। পিতা মৃত খেয়াল ডিলার। বাগেরহাট সদর থানার মান্দ্রা-বাদোখালী এলাকার বিএনপি নেতা। বিভিন্ন মামলার কারণে এলাকা ছেড়ে বর্তমানে থাকেন চিতলমারীতে বকুলের আশ্রয়ে। এই তিন বিএনপি নেতা একত্রিত হয়ে চিতলমারীতে নৈরাজ্য ও বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে গোপনে বিএনপি নেতা- কর্মীদের সংগঠিত করছে।

এ ব্যাপারে বকুলের বড় ভাবি রুপালী বেগম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, সারারাত বাড়ির পিছনে একটি পুকুর পাড়ে বকুল ও নুর ইসলামসহ বিভিন্ন লোক গোপন বৈঠক করে।

এ ব্যাপারে সুরশাইল গ্রামের কাসেম আলী শেখ জানান ও আড়–য়াবর্নী গ্রামের ডা. আল ইসলাম জুয়েল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, বকুল নাশকতা মামলাসহ ৮/১০ টি মামলার নিয়মিত আসামী। এ ছাড়াও সে ২০০১ সালে মোল্লাহাট খলিলুর রহমান ডিগ্রী কলেজে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী জনসভায় বোমা হামলা মামলার এজাহারভূক্ত আসামী ছিল।

উপজেলার ঘোলা-দলুয়াগুনি গ্রামের নুহুর আলী মীর, কৃষ্ণপদ বিশ্বাস ও মোহাম্মদ আলী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, বর্তমানে আবারও আব্দুল হাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

মান্দ্রা-বাদোখালী এলাকার সুমন হাসান বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, হত্যাসহ বিভিন্ন মামলায় জড়িত বিএনপি নেতা নুর ইসলাম বর্তমানে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

এ ব্যাপারে চিতলমারী বিএনপি নেতা আবু বক্কর সিদ্দিকী বকুল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, ৫/৬ টি বিয়ে তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। ৮/১০ টি মামলা রাজনৈতিক মামলা। এর বেশী কিছু তিনি বলতে রাজি হননি।

আব্দুল হাই শেখ ও নুর ইসলাম বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, নৈরাজ্য ও বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে তারা কোন গোপন বৈঠক করছে না।

পুলিশ সদস্য মৃনালের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রবীন্দ্র নাথ মন্ডল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, কর্তব্যরত পুলিশের উপর হামলা ও পুলিশ সদস্যকে জখমের ঘটনায় যুবদল নেতা বকুলের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট প্রেরণ করা হয়েছে।

তবে চিতলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর শরীফুল হক বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, বকলু ও আব্দুল হাই শেখের বিরুদ্ধে মোল্লাহাট এবং চিতলমারী থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। নৈরাজ্য ও বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে চাইলে কেউ ছাড় পাবে না।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত